বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

অমানবিক দৃশ্য! ৫ বছর ধরে বাড়ির সামনে গাছের সাথে শিকলে বাঁধা যুবক

০১:৪৩ পিএম, আগস্ট ২, ২০২১

অমানবিক দৃশ্য! ৫ বছর ধরে বাড়ির সামনে গাছের সাথে শিকলে বাঁধা যুবক

পাঁচ বছর ধরে পায়ে বাঁধা শিকল । কোনও পশুর থেকেও ভয়ঙ্কর দৃশ্য। শরীরে ঘায়ের দাগ, জরাজীর্ণ পোশাক ধুলো মলিন চেহারা। গাছের সাথে দিন-রাত বাঁধা অবস্থায় দিন কাটছে বছর উনিশের সেলিম আকতারের। তাঁর এই অবস্থার জন্যে দায়ী তাঁর মা। যদিও তাঁর পরিবারের বক্তব্য ‘উপায় নেই’। এইরকম মর্মান্তিক দৃশ্য মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক এলাকার ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের একবালপুর গ্রামের।

পরিবারের দাবি, ছেলেটি মানসিক ভারসাম্যহীন। সেলিমের দাদা হারুন রশীদ এবং মা লাইলি বিবিও মানসিক ভারসাম্যহীন দাবি এলাকাবাসীর। তাঁরাও ঘর ছাড়া, কখনও তাঁদের দেখতে পাওয়া যায় আবার কখনও যায় না এমনটাই বলছেন এলাকাবাসী। ছোটো ভাই আসিফ অসুস্থ, বাবা জাকির হোসেন আর ঠাকুর্দা আব্দুল হক দিনমজুর। তাঁদের উপার্জনেই চলে সংসার। এখন করোনার জেরে লকডাউনে সেই রোজগারও প্রায় নেই বললেই চলে। দুবেলা খাবার জোগাড় করাই এখন কঠিন ব্যাপার, অন্য কোনও সখ আহ্লাদের কথা ভাবাই যায় না। ওঝা, চিকিৎসকের কাছে দৌড়ে বেরিয়ে আজ নিঃস্ব এই পরিবার। শাসক দলের কাছে দারস্থ হয়েছেন, ‘দুয়ারে সরকার’ বা পঞ্চায়েত কার্যালয়েও বারবার ছুটেও লাভ হয়নি বলে দাবি পরিবারের।

দুর্দশার কথা এখানেই শেষ নয়। বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তৈরি হয়নি যুবকের প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট। চিকিৎসার ব্যবস্থা দূরের কথা সরকারি রেশনটুকুও সময়ে পায় না এই পরিবার। ২০১৭ সালে বন্যার পর ভেসে গিয়েছে ঘর বাড়ি, আসেনি সরকারি সাহায্য। বিধায়ক, জেলা পরিষদ সদস্যর কাছে বহুবার দারস্থ হওয়ার পরেও তাকাননি কোনও জন-প্রতিনিধি। আবাস যোজনায় নাম তোলার আবেদনের পরেও মুখ ফিরিয়েছে নিয়েছে পঞ্চায়েত সদস্য থেকে প্রশাসনের আধিকারিকরা।

[caption id="attachment_24634" align="alignnone" width="1200"]অমানবিক দৃশ্য! ৫ বছর ধরে বাড়ির সামনে গাছের সাথে শিকলে বাঁধা যুবক অমানবিক দৃশ্য! ৫ বছর ধরে বাড়ির সামনে গাছের সাথে শিকলে বাঁধা যুবক[/caption]

এই ঘটনাকে সামনে রেখে একে ওপরের উপর সরব হয়েছে শাসকদল বনাম বিরোধী দল। বিজেপির অভিযোগ তৃণমূল প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি, গরীবের খোঁজ রাখে না। পাশাপাশি তৃণমূল সরকারকে ‘কাটমানির সরকার’ বলেও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। অন্যদিকে পাল্টা অভিযোগ তুলে তৃণমূলের বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে গরীবের স্বার্থের সরকার। তাই দলগত ভাবেই ওই পরিবারের পাশে সব রকম ভাবে পাশে থাকবেন তাঁরা। পঞ্চায়েত দপ্তরের প্রধান থেকে ব্লক আধিকারিকদের বক্তব্য বিষয়টি নিয়ে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন তাঁরা।