মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

দাদা-পিসেমশাই-জামাইবাবুর যৌন লালসার শিকার নাবালিকা! ৪ বছর পর সাজা ঘোষণা আদালতের

০৯:৩০ পিএম, জানুয়ারি ১৪, ২০২২

দাদা-পিসেমশাই-জামাইবাবুর যৌন লালসার শিকার নাবালিকা! ৪ বছর পর সাজা ঘোষণা আদালতের

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার দাঁইহাটের এক নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হল তাঁরই চার আত্মীয়। তাদের মধ্যে পিসতুতো দাদা ও পিসতুতো জামাইবাবুকে ২০ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দিল আদালত। বাকি দুই অভিযুক্তের মধ্যে রয়েছে নাবালিকার পিসেমশাই, তাকে তিন বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবার এই জঘন্য অপরাধের তালিকায় রয়েছে নির্যাতিতার দাদাও।

কাটোয়া থানার দাঁইহাট শহরের স্কুলমোড়ের বাসিন্দা ওই নাবালিকা। ২০১৮ সালের ২০ মার্চ কাটোয়া থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নির্যাতিতা নাবালিকা। তখন তার বয়স ছিল ১৫ বছর। যদিও এখন তিনি সাবালিকা। এদিকে, পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে যে, ২০১২ সালে নির্যাতিতার মায়ের মৃত্যু হয়। তাঁর বাবা একটি দোকানে কাজ করতেন। মা না থাকায়, মেয়েটির বাবা তাঁকে দক্ষিণেশ্বরে পিসির বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। সেখানেই স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। বছর দুয়েক সেখানে থাকার পর আবার দাঁইহাট ফিরে আসেন।

জানা যায়, দাঁইহাটে ফেরার পর একদিন আচমকাই কিশোরী নিখোঁজ হয়ে যান। তাঁর বাবা পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডাইরি করলে, মেয়েটি নিজেই কাটোয়া থানায় হাজির হন। জানান, স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে তিনি পালিয়েছিলেন। মেয়েটি যাতে মূলস্রোতে ফিরে ভালভাবে পড়াশোনা করে সেই উদ্দেশ্যে কাটোয়া চাইল্ডলাইনের প্রতিনিধিরা তাঁর কাউন্সেলিংও শুরু করে। তখনই কাটোয়া চাইল্ডলাইনের প্রতিনিধিদের কাছে নাবালিকা জানান যে, তাঁর বড়পিসির বাড়িতে থাকাকালীন তাকে জোর করে ভয় দেখিয়ে যৌন নির্যাতন করে পিসতুতো দাদা বিশ্বজিৎ বিশ্বাস এবং পিসতুতো জামাইবাবু শংকর রায়।

এখানেই শেষ নয়, তিনি আরও জানান যে, একাধিকবার সেখানে ধর্ষণের শিকার হয়ে সে বাধ্য হয়ে দাঁইহাট ফিরে আসেন। তবে, এখানেও তাঁর সঙ্গে অন্যায় হয়। দাঁইহাটে আসার পর নিজেদের বাড়িতে আরও এক পিসেমশাই প্রদীপ সরকার ও তাঁর দাদাও তাঁকে যৌন নিগ্রহ করে বলে চাইল্ডলাইনের কাছে প্রথম জানান নির্যাতিতা। তারপরেই চাইল্ডলাইন তৎপর হয়ে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং কথা বলে। নাবালিকা এফআইআর দায়ের করে। তারপরেই গ্রেফতার করা হয়েছিল কিশোরীর দাদা ও ছোট পিসেমশাই প্রদীপ সরকারকে। যদিও পরে তারা জামিনে মুক্ত হয়।

ওই মামলায় বৃহস্পতিবার চারজনকেই দোষী স্যবস্ত করে কাটোয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত। এদিন শুক্রবার বিচারক সুকুমার সূত্রধর সাজা শোনান। বিচারক ওই কিশোরীর পিসতুতো জামাইবাবু উত্তর ২৪ পরগনার বাগুইআটির বাসিন্দা শংকর রায় ও পিসতুতো দাদা দক্ষিনেশ্বরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ বিশ্বাসকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার সাজা শোনান। পাশাপাশি পিসেমশাই দাঁইহাটের বাসিন্দা প্রদীপ সরকারকে তিনবছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। অন্যদিকে সাজাপ্রাপ্তদের আইনজীবী জানান, এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তারা উচ্চ আদালতে যাবে।