বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ গতকাল বজ্রপাতে রাজ্যে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেইসব মমৃতদের বাড়িতে গিয়ে, পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চলেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একেবারে ঠাসা কর্মসূচি। এর পূর্বে, ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ এর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছে গিয়েছিলেন। আর এবার রাজ্যে বজ্রপাতে মৃতদের পাশে দাঁড়াতে তাঁদের বাড়ি যাচ্ছেন অভিষেক।
সূত্রের খবর, আগামিকাল দুপুরে তিনি যাবেন মুর্শিদাবাদ জেলায়। সেখানে তিনি যাবেন বহরমপুর ও রঘুনাথাগঞ্জে। তারপরের দিন যাবেন হুগলি জেলার খানাকুল, তারকেশ্বর এবং পোলবায়। আর আগামী শুক্রবার যাবেন রানিবাঁধ, পান্ডুয়া ও চন্দ্রকোণায়।
এইসব জায়গায় গতকাল বজ্রপাতে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। তবে, এই মুহূর্তে পূর্ব মেদিনীপুরে যাওয়ার কর্মসূচি না থাকলেও, বাকি সব জায়গাতেই তিনি যাবেন। উল্লেখ্য, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়ার পরই তিনি জানিয়েছিলেন যে, তিনি মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে চান। তাই এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিহতদের পাশে দাঁড়াতে, তিনি এই সফর করছেন। তাছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবশ্যই মৃতদের পরিবারকে সাহায্য করা হচ্ছে। তবে, রাজনৈতিকভাবেও যে তৃণমূল সরকার পাশে আছে, সেই বার্তাও দিতে চান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আসলে জননেতা হয়ে উঠেছেন। ২০১১ সালে ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে, ক্ষমতায় আসে তৃণমূল সরকার। এরপরেই তৃণমূলে তৈরি হয় ‘যুবা’। এই যুব সংগঠনের পাশাপাশি তৈরি হল সমান্তরাল সংগঠন। সেই সংগঠনের দায়িত্ব পান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সংগঠনের কাজ করতে-করতেই, ২০১৪ সালে ডায়মন্ড হারবার থেকে প্রথম লোকসভার টিকিট পেলেন অভিষেক। আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ক্রমশ নিজের জায়গা দলের ভিতরে আরও শক্ত করে তোলেন অভিষেক। তবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ভাইপো’ হওয়ার সুবাদেই অভিষেকের টিকিট-প্রাপ্তি বলে সমালোচনাও হয় সেই সময় নানাস্তরে। এই 'ভাইপো' বিতর্ক তাঁকে তাড়া করে বেড়িয়েছে এই সেদিন পর্যন্তও। এই ‘ভাইপো’ বিতর্ককে হাতিয়ার করেই একুশের নির্বাচনে বাংলা ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বিজেপি। অভিষেক অবশ্য বারংবার বলেছেন, দলনেত্রীর ভাইপো হওয়ার জন্য কোনও আলাদা সুবিধে পাননি তিনি। পেলে, লোকসভা ভোটে দক্ষিণ কলকাতা থেকে টিকিট পেতেন, 'কঠিন' ডায়মন্ড হারবার থেকে নয়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের লোকসভায় সবচেয়ে কমবয়সি সাংসদ ছিলেন অভিষেক। আর সাংসদ হতেই, অভিষেকের উপর বর্তাল আরও দায়িত্ব। শুভেন্দু অধিকারীর পরিবর্তে অভিষেকের হাতেই তুলে দেওয়া হল তৃণমূল যুব সংগঠনের দায়িত্ব। যে ক্ষোভ এখনও বয়ে বেড়াচ্ছেন শুভেন্দু। আর এটা অন্যান্য কারণের মধ্যে অন্যতম কারণ শুভেন্দুর দল ত্যাগের।
সেই কারণেই এবারের ভোট প্রচারে বিজেপির হয়ে বারবার ভাইপো প্রসঙ্গের পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন বিভিন্ন ইস্যু তুলে এনে। তবে এসব কিছুকে আমল দিতে চান না অভিষেক। সব কিছুকে ছাপিয়ে অভিষেক চাইছেন নেতা থেকে জননেতা হয়ে উঠতে। ইয়াস হোক বা বজ্রপাতে মৃত্যু, অভিষেক যেকোনো পরিস্থিতিতে থাকছেন মানুষের পাশে।