বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

ভারতের এই লজ্জার হার এখনও ভুলতে পারেননি রবি শাস্ত্রী! প্রাক্তন কোচের মতে 'বড় হার' কোনটি?

১১:৩৩ এএম, ডিসেম্বর ৮, ২০২১

ভারতের এই লজ্জার হার এখনও ভুলতে পারেননি রবি শাস্ত্রী! প্রাক্তন কোচের মতে 'বড় হার' কোনটি?

ভারতের হেড কোচ হিসেবে রবি শাস্ত্রীর মেয়াদ ইতিমধ্যেই ফুরিয়েছে৷ সদ্যই টিম ইন্ডিয়ার কোচিংয়ের দায়িত্ব ছেড়েছেন তিনি। শাস্ত্রীর আমলে জাতীয় দল টেস্টে এক অন্য উচ্চতায় পৌঁছেছিল। ৪৩ টি টেস্টের মধ্যে ২৫টিতে জেতে ভারত। তাঁর কোচিংয়ে ৭৬টি ওয়ানডের মধ্যে ৫১টি ওয়ানডে-তে জেতেন কোহলিরা। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে গিয়ে দু’বার টেস্ট সিরিজ জিতেছে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও পৌঁছেছিল দল। তবে শাস্ত্রী কোচ থাকাকালীন ভারত একাধিক ক্ষেত্রে দারুণ ফলাফল করলেও কোনও আইসিসি (ICC) প্রতিযোগিতায় একেবারেই ব্যর্থ। শাস্ত্রীর আমলে তিন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ আইসিসি ইভেন্টের ম্যাচ হেরেছে ভারত৷ দল কোনও আইসিসি ট্রফিও জিততে পারেনি।

২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হারের পর ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। এরপর ২০২১ সালে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ফের কিউয়িদের বিরুদ্ধে হেরে বসে ভারত। এই তিন ক্ষেত্রেই ভারতের কোচিং-এর দায়িত্বে ছিলেন রবি শাস্ত্রী। তবে শাস্ত্রীর মতে, ভারতের এই তিন হারের চেয়েও বড় হচ্ছে অন্য একটি হার। যে হার তাঁর কাছে এতটাই লজ্জার যে এখনও তা ভুলতে পারেননি তিনি।

সম্প্রতি রবি শাস্ত্রী জানিয়েছেন, আইসিসি ইভেন্টের হারগুলি নয়, বরং গত বছর অ্যাডিলেড টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৩৬ রানে অল আউট হওয়াকেই সবচেয়ে 'বড় হার' হিসেবে মনে করেন তিনি। শাস্ত্রীর কথায়, "ভারতীয় দলের কোচের ভাগ্য সরু সুতোর উপর ঝোলে। এই কাজ করতে গেলে পালিয়ে বাঁচা যাবে না। প্রথম দিন থেকেই আপনাকে কটাক্ষ হজম করার জন্য তৈরি থাকতে হবে। তাই জানতাম ৩৬ রানে অল আউট হওয়ার পর আমার দিকে, আমার দলের দিকে নানা সমালোচনার গোলাগুলি ধেয়ে আসবে। তবে স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে ৩৬ রানে অল আউটই হল কোচ হিসেবে আমার কেরিয়ারে সবচেয়ে লজ্জার হার। সেই হার আমি এখনও হজম করতে পারিনি।"

অজিদের বিরুদ্ধে এই টেস্টে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ভরাডুবির মুখে পড়েছিল টিম ইন্ডিয়া। সেই প্রসঙ্গ তুলে শাস্ত্রী ফের বলেন, "ওই টেস্টে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ হওয়ার সময় আমাদের স্কোরবোর্ডে রান ছিল ১ উইকেটে ৯। কিন্তু তৃতীয় দিন মাত্র কয়েক ঘণ্টায় সব কিছু বদলে গিয়েছিল। মাত্র ৩৬ রানের মধ্যেই সবাই অলআউট হয়ে ফেরে। কেন এমন ঘটেছিল সেটা এখনও বুঝতে পারিনি। সেই টেস্ট হারার পর পুরো দিন সবাই চুপ করে বসেছিলাম।" উল্লেখ্য, অ্যাডিলেডে ওই টেস্ট হারের পরই ব্যক্তিগত কারণে দেশে ফিরে এসেছিলেন ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলি। তবে ভারত হাল না ছেড়ে ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অজিঙ্ক্য রাহানের নেতৃত্বে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেই দেশে ফিরেছিল টিম ইন্ডিয়া।

৩৬ রানে অলআউটের লজ্জার রেকর্ডের পর ফের কোন মন্ত্রে পাল্টা লড়াই করার সাহস পেয়েছিল টিম ইন্ডিয়া? শাস্ত্রী জানান, "৩৬ রানে অল আউট হওয়া শুধু মাঠে খেলা এগারো জনের ব্যর্থতা ছিল না। কোচ হিসেবে তা আমার ব্যর্থতাও ছিল। ম্যাচ শেষের পর তাই ছেলেদের বলেছিলাম, এই ৩৬-কে ব্যাজ হিসেবে নিজেদের জামার পকেটে আটকে রেখে দাও। প্রতি মুহূর্তে তা নজরে এলেই তোমাদের আত্মবিশ্বাস আবার ফিরে আসবে। যদি তোমরা এই অবস্থা থেকে সিরিজ জিততে পারো, তাহলে কেউ আর খোঁচা দিতে পারবে না।" এই মন্ত্রে অবশ্য কাজ যে হয়েছিল তা তো বলাই বাহুল্য! প্রথম টেস্টে চরম বিপর্যয়ের পরও শেষ পর্যন্ত অজিদের ধরাশায়ী করে দুর্দান্ত ভাবে সিরিজ জিতে ফিরেছিলেন রাহানে-পন্থ-শাস্ত্রীরা।