মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

‘BSF-এর উপর ভরসা নেই, অনেক অভিযোগ আছে, বিধানসভায় প্রস্তাব আনুন!’ মমতার পাশে অধীর

০৬:৪৭ পিএম, নভেম্বর ১২, ২০২১

‘BSF-এর উপর ভরসা নেই, অনেক অভিযোগ আছে, বিধানসভায় প্রস্তাব আনুন!’ মমতার পাশে অধীর

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ শুক্রবার ভোররাতে কোচবিহারের সীমান্তে চলল গুলি। গরু পাচারকারী সন্দেহে সীমান্তে কয়েকজনকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় সীমান্তরক্ষী বাহিনী। সেই গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। তাঁদের মধ্যে ২ জন বাংলাদেশী ও একজন ভারতীয় নাগরিক বলেই খবর।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে তোলপাড় রাজ্য। তৃণমূলের পাশাপাশি কংগ্রেসও বিএসএফ-এর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি সরব হয়েছে। শুক্রবার এই ঘটনা প্রসঙ্গে বহরমপুরে শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘বিএসএফ সিতাইগুলি কেন করেছে, এটা বিএসএফ জানে। বিএসএফ যে ৫০ কিলোমিটার নিজের এলাকা বাড়াতে চাইছে সার্চ ও সিজার করার জন্য, পশ্চিমবঙ্গ সরকার উচিত বিধানসভা ডেকে তার প্রস্তাব পাশ করে বিরোধীদের কাছে পাঠানো যে এই প্রস্তাব মানছি না।’

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ‘এলাকা যদি বাড়ানো হয়, তাহলে, অনেক বড় এলাকা চলে আসবে আর বিএসএফ-এর কাছে। এই এলাকার মানুষ বিএসএফ-কে ভরসা করে না। বিএসএফ-এর উপর অনেক অভিযোগ আছে। ১৫থেকে ৫০কিলোমিটার বাড়ানো হলে অনেক সমস্যা বাড়বে বলে এলাকার মানুষের আশঙ্কা। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি বিধানসভা ডেকে অতি সত্ত্বর ক্ষমতা বৃদ্ধি যাতে না করে বিএসএফ, তা সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাব করা।’

এদিনের সিতাইয়ের ঘটনায় বিএসএফের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেছেন দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহও। তিনি বলেন, ‘ছোট থেকেই বিএসএফের অত্যাচার দেখে আসছি। ওরা বরাবর সীমান্তের এলাকার মানুষদের উপর নির্যাতন করে।’ তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহর আরও দাবি, বিএসএফের মদতেই সামীন্তে চোরাচালান চলে। তাঁর অভিযোগ, ভাগাভাগি নিয়ে সমস্যা হওয়ার কারণেই মাঝে মধ্যে গুলি চালায় জওয়ানরা। এরপরই সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্নও তোলেন তিনি। বলেন, ‘কোনও পরিস্থিতিতেই হত্যা করতে পারে না বিএসএফ।

শুক্রবার ভোরারাতে কোচবিহারের সাতভাণ্ডারী সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে মৃত্যু হয় ৩ জনের। বিএসএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এদিন ভোররাতে কোচবিহারের সিতাই থানা এলাকার অন্তগর্ত সাতভাণ্ডারী সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারের চেষ্টা করছিলেন কয়েকজন। এক ভারতীয় নাগরিক গরু পৌঁছে দিচ্ছিলেন কাঁটাতারের বেড়া পর্যন্ত। বিষয়টি নজরে আসতেই, বাধা দেন ওই সীমান্তে কর্তব্যরত জওয়ানরা। তাঁদের অভিযোগ, সেই সময় তাঁদের লক্ষ্য করে ইট ছুঁড়তে থাকে গরু পাচারকারীরা। তার ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই পালটা গুলি চালায় সামীন্তরক্ষী বাহিনী। সেই গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। তাঁদের মধ্যে একজন ভারতীয়। তাঁর নাম প্রকাশ বর্মণ।

অন্যদিকে, এদিন ত্রিপুরা প্রসঙ্গেও মুখ খুলেছেন অধীর চৌধুরী। তাঁর কথায়, ‘দুর্ভাগ্য এটাই, ত্রিপুরা সরকারকে সুপ্রিম কোর্টের নিন্দার মুখে পড়তে হচ্ছে। ত্রিপুরা সরকার মানুষের জন্য নয়, আরএসএস-বিজেপি দ্বারা অত্যাচারিত হচ্ছে আমজনতা। সাংবাদিক জগতের মানুষকে নির্যাতন করা হচ্ছে, বহু আইনজীবী বিরুদ্ধে ত্রিপুরায় কী ঘটনা ঘটেছে, তা সকলেই জানেন। স্বৈরাচারী সরকার চলছে, তাই সুপ্রিম কোর্টকেও হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে।’

এখানেই শেষ নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিতর্কিত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি এদিন সাংবাদিক বৈঠকে বলেন যে, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, কিন্তু আমরা স্বাধীনতার বাইরে কথা বলি না। তিনি একজন মহিলা, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বাংলায় শাসকের ভুমিকা পালন করছেন। পশ্চিমবঙ্গে তিনি কাজ করলেও রাজনৈতিক অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। আমরা সেই কারণে মন্তব্য করি, কিন্তু কোন মহিলাকে অপমান করার মতো ভাষা আমরা ব্যবহার করতে পারি না। মুখ্যমন্ত্রীকে এই ধরনের ভাষা ব্যবহার না করাই ভালো বলে মনে করি। ভিক্টোরিয়াতে মুখ্যমন্ত্রীকে যখন অপমান হতে দেখেছি, বিরোধিতা করেছি। বাংলায় এই ধরনের ভাষা ব্যবহার না করলে ভালো বলে মনে করি। কারণ আমরা মনে করি, রাজনৈতিক ও শালীনতা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।’