শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

ফের শিশু মৃত্যু ঘটল মালদহ মেডিক্যাল কলেজে! বাড়ছে উদ্বেগ

১২:১০ পিএম, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২১

ফের শিশু মৃত্যু ঘটল মালদহ মেডিক্যাল কলেজে! বাড়ছে উদ্বেগ

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজ্যের একাধিক জায়গায় শিশুদের মধ্যে বাড়ছে জ্বরের প্রকোপ। সেই সঙ্গে রয়েছে শ্বাসকষ্টের সমস্যা। আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। এই পরিস্থিতিতে রবিবার রাতে ফের এক শিশুর মৃত্যু হল মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা জানা গিয়েছে, বৈষ্ণবনগর থানার চক বাহাদুরপুরের বাসিন্দা প্রকাশ মণ্ডল তাঁর নবজাতক পুত্রসন্তানকে ১৩ সেপ্টেম্বর মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মাতৃমা বিভাগে ভর্তি করিয়েছিলেন। রবিবার সন্ধ্যায় শিশুটির মৃত্যু হয়। জানা গয়েছে, শিশুটির রক্তে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়।

রবিবার রাত ১০ টার সময় শিশুটির দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। গত পাঁচ দিনে এই নিয়ে মালদা কলেজ হাসপাতালে মোট ৮ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় ক্রমশ উদ্বেগ বাড়ছে। এর আগে শনিবারও মালদা মেডিক্যাল কলেজে আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়। ৬ মাসের আফিয়া খাতুন নামে ওই শিশু জ্বরে আক্রান্ত অবস্থায় মালদা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসারত অবস্থাতেই মৃত্যু হয় তার। এদিকে, মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বেডের অভাব। এক-একটি বেডে তিন জন করে শিশুর চিকিৎসা চলছে। এই নিয়ে চার জেলায় মোট ১৩ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

এভাবে পরপর শিশু মৃত্যুর ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যদিও জ্বরের কারণে মৃত্যু, এই তত্ব মানতে নারাজ হাসপাতাল ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ। বিশেষজ্ঞদের দল বিভিন্ন হাসপাতালগুলিতে গিয়ে পরিকাঠামো খতিয়ে দেখছে। মালদা মেডিক্যাল কলেজের শিশু বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সুষমা সাউয়ের কথায়, ‘গত ১৫ সেপ্টেম্বর দু’জন এবং ১৬ তারিখ দুই শিশুর প্রাণহানি ঘটে।’

তবে শুধু মালদা না। জলপাইগুড়ির পরিস্থিতি নিয়েও চিন্তায় রয়েছে প্রশাসন। উদ্বেগ বাড়ছে এই দুই জেলাতেই। জলপাইগুড়িতে এক শিশু করোনা সংক্রমিত হল। এই ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতেই নতুন করে উদ্বেগ বাড়ছে। আতঙ্কের পরিবেশ এখন জলপাইগুড়িতে। এর সঙ্গে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি করোনার তৃতীয় ঢেউ প্রবেশ ঘটেছে? এদিকে জানা গিয়েছে যে, শুধুমাত্র ওই শিশুই নয়, তার মার দেহেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মা ও শিশু উভয়কেই জলপাইগুড়ি নাইট শেল্টার কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জলপাইগুড়ি জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু।

ইতিমধ্যেই শিশুদের মধ্যে ভাইরাল জ্বর শুরু হওয়ার প্রথম দিকেই এক শিশুর দেহে করোনা সংক্রমণের খবর দিয়েছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। আবারও নতুন করে আরও এক শিশুর দেহে করোনা সংক্রমণের খবর পাওয়ায় গত আটদিনে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২।

অন্যদিকে, রাজ্যে বেড়েই চলেছে জ্বরে আক্রান্ত অসুস্থ শিশুর সংখ্যা। এর জন্য রোগের উপসর্গ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত গাইডলাইন আগেই প্রকাশ করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতর থেকে বলা হয়েছে, জ্বর-শ্বাসকষ্ট ৩ দিনের বেশি থাকলে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। বাড়িতে কারোর জ্বর হলেই দু’বছরের নিচের শিশুদের আলাদা করতে হবে। ৫ বছর বা তার বেশি বয়সের শিশুদের জ্বর হলে পালস অক্সিমিটার দিয়ে অক্সিজেন স্যাচুরেশন মাপতে হবে। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯০-এর নিচে থাকলেই সঙ্গে শ্বাসকষ্ট থাকলে ঝুঁকি নিতে নিষেধ করা হয়েছে। হাসপাতালে ভরতি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বলা হয়েছে যে, মাস্ক পরতে হবে। স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুতে হবে। এবং শিশুদের অবশ্যই আলাদা করে রাখতে হবে বাড়িতে কারও জ্বর, সর্দি-কাশি হলে। কারণ দ্রুত তাদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বলা হয়েছে, হাসপাতালে যাঁরা আসবেন, তাঁদের মধ্যে জটিল কোনও সমস্যা থাকলে থুতু, কফ, সর্দির নুমনা সংগ্রহ করে নাইসেড এবং স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পাঠাতে হবে।