বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বুধবার থেকেই বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারের দুদিনের জন্য শুরু হয়েছে বিশ্ববাংলা বাণিজ্যিক সম্মেলন। রাজ্যের শিল্প পরিবেশ খতিয়ে দেখতে এবং বানিজ্যে বিনিয়োগ করতে এই বাণিজ্য সম্মেলনে যোগদান করেছেন দেশ-বিদেশের বহু প্রথম সারির শিল্পদ্যোগীরা। এই উদ্দেশ্যে কনভেনশন সেন্টারে ৩ হাজার ৬০০ টি আসনের ব্যবস্থা করা হয়। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রথম থেকে সব ঠিকঠাকই চলছিল। মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালকে পাশাপাশি বসে কথা বলতেও দেখা যায়। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য রাখার পালা আসলে কেন্দ্রকে খোঁচা মারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপালকে তিনি অনুরোধ জানান, এজেন্সি দিয়ে শিল্পপতিদের যেন বিরক্ত না করা হয়। মমতার এই বক্তব্য শুনে সামনের সারিতে বসে থাকা রাজ্যপালের ঠোঁটে মুচকি হাসি লক্ষ্য করা যায়।
এদিন সম্মেলনে বাংলায় বিনিয়োগের আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। বাংলায় বিনিয়োগের বিভিন্ন সুবিধার কথা তুলে ধরেন শিল্পপতিদের কাছে। এর পাশাপাশি বাংলার শিল্প উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য দাবি করেন তিনি। রাজ্যপালকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আপনাকে একটা অনুরোধ করব। রাজ্যকে যাতে সবরকম সাহায্য করা হয় সেই বিষয়ে কেন্দ্রকে জানান।”
শিল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের সাহায্য প্রার্থনার পাশাপাশি কেন্দ্রকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি তিনি। বক্তব্যের একেবারে শেষে রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে তাঁর বক্তব্য, “শিল্পপতিরা কিছু বলতে পারবেন না। কিন্তু এজেন্সি দিয়ে শিল্পপতিদের যেন বিরক্ত না করা হয়।” মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনেই মুচকি হাসেন রাজ্যপাল। অতীতে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে বহুবার অভিযোগ করতে দেখা যায় রাজনীতিক কারবারিদের। সেই অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে সরব হয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীও। আজ এই প্রসঙ্গ টেনে এনেই মুখ্যমন্ত্রী এই বক্তব্য পোষণ করেন।
অন্যদিকে বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে সমালোচনায় মুখর হন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর মতে, বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরনের মন্তব্য করা একেবারেই উচিত নয়। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী শিষ্টাচার জানেন না। মুখ্যমন্ত্রী যদি মনে করেন যারা চুরি করবে তাদেরকে সামনে রেখে তিনি কোটি কোটি টাকা লাভ করবেন, তাদের পরিবারের সদস্যরা উপার্জন করবেন তাহলে সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় এজেন্সিও তার দায়িত্ব পালন করবে।”
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, সম্মেলনের মঞ্চে বাংলার শিল্প-পরিবেশ প্রসঙ্গে রাজ্যপালের কণ্ঠে ভূয়শী প্রশংসা শোনা যায়। তাঁর ভাষণে বাংলার ঐতিহ্য, সংস্কৃতির কথাও উঠে আসে। রাজ্যপালের বক্তব্য, বাংলার হেরিটেজ, সংস্কৃতি ও ম্যানপাওয়ার শিল্প বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত অনুকূল। এর পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দাপুটে নেতৃত্ব তার সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এছাড়াও ‘লুক ইস্ট নীতি’-র প্রসঙ্গ টেনে এনে দেশের প্রধানমন্ত্রীরও প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন তিনি।