UNESCO-র কালচারাল হেরিটেজের তালিকায় স্থান পেয়েছে বাঙালির দুর্গোৎসব। গত বছরের ডিসেম্বরে প্যারিসে ইন্টার গভর্নমেন্ট কমিটির ষষ্ঠদশ অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয় `কলকাতার দুর্গাপুজো`-কে। এই খুশিতে আগামি ১ সেপ্টেম্বর রাজ্য জুড়ে মহা মিছিল। বাংলার দুর্গা পুজোকে দেওয়া ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতিকে সম্মান জানিয়ে বিশেষ পদযাত্রার আয়োজন করেছে রাজ্য সরকার। কলকাতায় জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি থেকে রেড রোড পর্যন্ত হবে এই পদযাত্রা। পাশাপাশি জেলায় জেলায় ব্লকে ব্লকে এই পদযাত্রার আয়োজন হবে।
১ সেপ্টেম্বরের এই পদযাত্রায় উপস্থিত থাকবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এই পদযাত্রার ঘোষণায় তিনি জানিয়েছিলেন, "রাজনৈতিক কারণে মিছিল নয়, ওই মিছিল থেকে ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানাব। দুপুর ২টো জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সামনে জমায়েত হবে। শাঁখ, বাঁশি যে যেমন পারবেন, সেভাবেই মিছিলে শামিল হবেন। স্কুলে ছাত্রছাত্রীরাও থাকবে। এবার এই পদযাত্রা নিয়ে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের মোট ১৭ দফা গাইড লাইন জারি করা হল। মূলত কলকাতার পাশাপাশি রাজ্যে বিভিন্ন জেলাগুলিতে কী ভাবে এই পদযাত্রার আয়োজন করা হবে তা নিয়ে বৃহস্পতিবারই বিশেষ গাইডলাইন জারি করেছে নবান্ন।
জানা যাচ্ছে, পদযাত্রায় বিশেষ গুরুত্ব পাবে `লক্ষ্মীর ভান্ডার`। রাজ্যের জারি করা গাইডলাইনে বলা হয়েছে, এই পদযাত্রায় লক্ষ্মীর ভান্ডারের ৫০০ থেকে ৭৫০ মহিলা অংশগ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি রাজ্যের অন্যান্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারাও এই মিছিলে শামিল হতে পারেন বলে জানানো হয়েছে। যে সকল মহিলারা অংশগ্রহণ করবেন তাদের হাতে যেন শঙ্খ থাকে। এছাড়াও নির্দেশিকা অনুযায়ী, বিভিন্ন স্কুলের একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়ারাও এই পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। স্কুলের পোশাক পরেই তারা পদযাত্রায় শামিল হতে পারে। পদযাত্রায় যারা অংশ নেবেন তাদের কালো ছাতা ব্যবহার করা চলবে না, বরং রঙিন ছাতা ব্যবহার করতে হবে।
রাজ্যের জারি করা নির্দেশিকায় এও বলা হয়েছে, ১ সেপ্টেম্বরের পদযাত্রার জন্য একটি করে বিশেষ থিম সং তৈরি করা হচ্ছে। যা যথাসময়ে জেলাগুলির কাছে পৌঁছে যাবে। পাশাপাশি এই পদযাত্রার জন্য যথাযথ ব্র্যান্ডিং করতে হবে। এর জন্য হোর্ডিং, লোগোর যথাযথ প্রচার করতে হবে বলেও নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জেলাগুলিতে যাতে এই পদযাত্রা আয়োজন করা যায় তার জন্য পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে জেলা প্রশাসনকে আলোচনা করতে হবে। জেলা ও পার্শ্ববর্তী সকল গুরুত্বপূর্ণ পুজো কমিটিগুলিকে এই পদযাত্রায় শামিল করতে হবে। পুজো কমিটিগুলি তাদের সদস্যদের নিয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে পারে। জেলায় কোথা থেকে এই পদযাত্রা বের করা হবে তা নিয়েও সিদ্ধান্ত নিতে হবে ওই আলোচনায়। প্রতিটি পুজো কমিটিই তাদের ব্যানার সহ এই পদযাত্রায় অংশ নিতে পারবে। পদযাত্রায় ওই জেলার সর্বাধিক ১০০ জন লোকপ্রসারশিল্পীকে নেওয়া যেতে পারে।