বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে ‘রাষ্ট্রপত্নী’ বলে সম্বোধন করে বসেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। সেই নিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে বিতর্ক। অবশেষে প্রবল চাপের মুখে পড়ে চিঠি লিখে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে ক্ষমা চাইলেন অধীর।
দ্রৌপদী মুর্মুকে পাঠানো চিঠিতে লেখেন, “আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং মর্মাহত। আপনি যে পদে রয়েছেন তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আমি ভুলবশত একটি অনুপযুক্ত শব্দ ব্যবহার করে ফেলেছি। আমি আপনাকে নিশ্চিত করে বলতে পারি যে মুখ ফসকে কথাটি বেরিয়ে গিয়েছে। আমি আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।”
গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার এই বিতর্কিত মন্তব্য করেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। যা নিয়ে রাতারাতি উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদ। অন্যদিকে ন্যাশনাল হেরল্ড মামলায় কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে তলব করেছে ইডি। আর সেই প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার লোকসভায় সরব হয়েছিলেন বহরমপুরের সাংসদ। এরই মাঝে রাষ্ট্রপতিকে ‘রাষ্ট্রপত্নী’ বলে সম্বোধন করেন তিনি। এরপরই বিজেপি নেতৃত্বের তরফ থেকে অধীর চৌধুরী এবং সোনিয়া গান্ধীকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়। কিন্তু বিজেপির দাবি, সোনিয়া গান্ধী এখনও কোনও ক্ষমা চাননি। তবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কিছুটা রাগের সুরেই কংগ্রেস সভানেত্রী জানান, “ক্ষমা চাওয়া হয়ে গিয়েছে।”
অধীর চৌধুরীর এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে লোকসভায় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি এবং রাজ্যসভায় মন্ত্রী নির্মলা সীতারমন তীব্র প্রতিবাদ জানান। নির্মলা সীতারামনের বক্তব্যানুযায়ী, রাষ্ট্রপতি একটি লিঙ্গ নিরপেক্ষ শব্দ। তাই দ্রৌপদী মুর্মুকে ‘রাষ্ট্রপত্নী’ বলে সম্বোধন করা একপ্রকার ‘যৌন অবমাননা’। অন্যদিকে স্মৃতি ইরানি দাবি করেন, এই ধরনের মন্তব্যে ভারতের মহিলা জাতি এবং আদিবাসীদের অপমান করা হয়েছে। পুরো বিষয়টিতে পাল্টা জবাব দেয় কংগ্রেসও। সবমিলিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদের দুই কক্ষ। এমনকি এর ফলে মুলতুবি হয়ে যায় লোকসভা এবং রাজ্যসভার অধিবেশন।
প্রথম অবস্থায় চাপের মুখে পড়ে অধীর চৌধুরী স্বীকার করেন যে মুখ ফসকে কথাটি বলে ফেলেছেন। কিন্তু তাতে শান্ত হয়নি বিজেপি নেতৃত্ব। অধীরের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানায় মধ্যপ্রদেশ মহিলা কমিশন। এমনকি এই নিয়ে মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপিও জমা দেন বিজেপির মহিলা মোর্চার কর্মীরা। প্রথমে বিজেপি নেতৃত্বের কাছে ক্ষমা চাইতে একেবারেই নারাজ ছিলেন অধীর। তবে পরবর্তীতে চাপ বাড়তে থাকায় তিনি বাধ্য হয়ে বলে বসেন, ‘আমাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিন।’ এরপর আবার নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি লিখলেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী।