1. প্রথম পাতা
  2. কলকাতা
  3. রাজ্য
  4. রাজনীতি
  5. অপরাধ
  6. দেশ
  7. আন্তর্জাতিক
  8. খেলা
  9. কর্ম সন্ধান
  10. বিনোদন
  11. ব্যবসা বাণিজ্য
  12. টেক নিউজ
  13. লাইফস্টাইল
  14. ভাইরাল
  15. আবহাওয়া
  16. রাশিফল

কমিশনের বেনজির সিদ্ধান্ত মমতার বিরুদ্ধে! শুভেন্দু-দিলীপদের ছাড় কেন? প্রশ্ন তৃণমূল কংগ্রেসের

০৯:৩৩ এএম, এপ্রিল ১৩, ২০২১

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ মমতার বিরুদ্ধে কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যা এককথায় বেনজির, অতীতে এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারী করেছে নির্বাচন কমিশন। যা কাল রাত ৮ থেকে শুরু হয়ে গেছে এবং আজ রাত ৮ টা পর্যন্ত বলবত থাকবে।

পাঁচ পাতার বিবৃতি জারি করে কমিশন জানিয়েছে যে, আদর্শ আচরণবিধি চলাকালীন তাঁর বিভিন্ন মন্তব্য রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরনের মন্তব্যের জেরে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার জেরে, এই সময়ের মধ্যে নির্বাচনী প্রচার করতে পারবেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আজ কমিশনের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দুপুর ১২ টার সময় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটে সেকথা জানিয়েছেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো। তৃণমূল নেত্রী কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলেছেন যে, কমিশনের এই সিদ্ধান্ত অগণতান্ত্রিক এবং অসাংবিধানিক।

https://twitter.com/MamataOfficial/status/1381620737262321684

অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে, সরব হয়েছেন তৃণমূলের অন্যান্য নেতারাও। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন যে, কমিশন বিজেপির শাখা সংগঠন হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের অপর নেতা ডেরেক ও ব্রায়েন বলেন, গণতন্ত্রের পক্ষে কালো দিন।

https://twitter.com/derekobrienmp/status/1381611018900623360

এবার তৃণমূলের তরফ থেকে ট্যুইট করে প্রশ্ন তোলা হল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চাপালে, কেন একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করার জন্য বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে এই একই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে না?

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শীতলকুচির ঘটনার পর রাজ্য বিজেপি-র তিন নেতা বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ৷ সেই তালিকায় রয়েছেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, হাবড়ার প্রার্থী রাহুল সিনহা এবং বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু৷ উল্লেখ্য, শীতলকুচি কাণ্ডের পর, রবিবার বরানগরের সভা থেকে শীতলকুচি কাণ্ড নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন যে, 'শীতলকুচিতে দেখেছে কী হয়েছে। বাড়াবাড়ি করলে এলাকায় এলাকায় শীতলকুচি হবে।'

অন্যদিকে, বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা মন্তব্য করেন, 'শীতলকুচিতে ৪ জনের বদলে ৮ জনকে মারা উচিত ছিল। কেন কেন্দ্রীয় বাহিনী ৪ জনকে মারল, তার জন্যে শোকজ করা উচিত। যারা ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ১৮ বছরের ছেলেকে প্রকাশ্যে গুলি করে তাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যারা কেন্দ্রীয় বাহিনীর দিকে বোমা ছো়ড়ে তাদের নেত্রী।'

এছাড়াও নন্দীগ্রামে ভোট প্রচারের সময় শুভেন্দু অধিকারীও আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ শাসকদলের৷ এই সমস্ত মন্তব্য তুলে ধরেই ট্যুইট করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে৷ সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে যে, বিজেপি নেতারা 'জাতি বিদ্বেষী', 'ধর্ম বিদ্বেষী', 'বর্ণ বিদ্বেষী' মন্তব্য করলেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করে না নির্বাচন কমিশন৷ শীতলকুচি কাণ্ড নিয়ে বিজেপি নেতাদের বিতর্কিত মন্তব্যের পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারীর মুখে 'মিনি পাকিস্তানের' মতো মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে৷

তাহলে, এরপরেও কেন শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে এই নিষেধাজ্ঞা, সেই প্রশ্নই তুলেছে শাসকদল৷ একই সঙ্গে দাবি করা হয়েছে যে, 'গণতন্ত্রের জয় হবেই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আবার ফিরে আসবেনই৷ আর এই অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপের উচিত জবাব দেবে বাংলার মানুষ৷'

কমিশনের জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। একটি মন্তব্য ছিল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট সংক্রান্ত, অপর মন্তব্যটি ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও প্রসঙ্গে। তাঁর এই দুই মন্তব্যের জেরে রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন বিরোধীরা। এরপরেই ৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন তৃণমূল নেত্রীকে শো-কজ করে। এই শো-কজের জবাব দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কমিশন জানিয়েছে, তৃণমূল নেত্রীর সেই জবাবে কোনোভাবেই সন্তুষ্ট হতে পারছে না নির্বাচন কমিশন। তাঁদেরও আরও দাবি, তৃণমূল নেত্রী কমিশনের বাছাই করা কিছু অংশের জবাব দিয়েছেন। তাই শেষপর্যন্ত কমিশনের এই কড়া সিদ্ধান্ত।

নির্বাচন কমিশনের আজকের এই সিদ্ধান্তকে বেনজির বলে দাবি করেছে ওয়াকিবহালমহল। কমিশনের এই সিদ্ধান্ত তৃণমূলের কংগ্রেসের জন্য শাপে বর হল নাকি আখেরে ক্ষতিই হল, তা বলবে সময়। তবে, আজ রাত ৮ টার পর থেকেই ফের নির্বাচনী প্রচার শুরু করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।