নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহঃ তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার জন্য নানাভাবে প্রলোভিত করা হয়েছিল তাঁকে। এর মধ্যে সরকারি চাকরি থেকে শুরু করে মোটা টাকা, এমনকি মন্ত্রিত্বের লোভও দেখানো হয়েছিল। এমনই বিস্ফোরক দাবি করেছেন, উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু।
শনিবার উত্তর মালদহের এই বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘আমি যখন থেকে সিপিএম ছাড়ার পরিকল্পনা করি তখনই প্রথমবার তৃণমূলে যোগদানের প্রস্তাব এসেছিল। জেলা তৃণমূলের এক শীর্ষনেতা, তিনি আমাকে বলেন, তৃণমূলে যোগ দিলে ১০টি সরকারি চাকরি বরাদ্দ হবে আমার পরিবার ও অনুগামীদের জন্য। তার মধ্যে এসএসসি-র চাকরিও রয়েছে। এছাড়া মোটা অংকের টাকা ঢুকবে আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। সঙ্গে মন্ত্রিত্বও দেবে আমাকে। কিন্তু তৃণমূলের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আমি বিজেপিতে যোগদান করি।’
তিনি এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে, জোড়াফুল শিবিরের পক্ষ থেকে লোভনীয় প্রস্তাব এলেও, তিনি সেই প্রস্তাবে রাজি হননি। উল্টে পরে লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগেই, বিজেপিতে যোগদান করেন এবং বিজেপির টিকিটে নির্বাচনে জিতে উত্তর মালদহের সাংসদ নির্বাচিত হন।
খগেন মুর্মুর আরও দাবি, বিজেপিতে যোগদানের পরেও থেমে নেই তৃণমূল। তারপরেও তাঁর কাছে তৃণমূলে যোগদানের প্রস্তাব এসেছে। এমনকি সম্প্রতি এমন প্রস্তাব ফের এসেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, কিছুদিন ধরেই জল্পনা ছিল যে, প্রভাবশালী আদিবাসী নেতা তথা উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন। এই জল্পনা আরও জোরালো হয়, অর্জুন সিং বেসুরো হওয়া এবং পরে তৃণমূলে যোগ দেওয়ায়।
এদিকে, সূত্রের খবর, এই জল্পনার কারণেই দলের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছিল খগেন মুর্মুর। কিন্তু এসবের মাঝে আচমকাই তাঁর এহেন বিস্ফোরক মন্তব্যে নতুন করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য-রাজনীতিতে। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সব জল্পনাকে নস্যাৎ করে বিজেপির কর্মসূচিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তিনি। শনিবার উত্তর মালদহের সাংগঠনিক জনসভা এবং মিছিলে তাঁকে দেখা গেল সবার আগে। পা মেলালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে। মঞ্চে জোরদার ভাষণও দিলেন তিনি। রাজ্য সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন। শুভেন্দু অধিকারী স্পষ্ট করেন যে, বিজেপিতেই থাকছেন খগেন মুর্মু।
অন্যদিকে, উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদের সব দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন মালদহ শহরের তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি। তিনি জানিয়েছেন, ‘উনি এতো বড় নেতা নন যে, ওনাকে উপুড় হয়ে স্বাগত জানাতে হবে। মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছে। আমাদের আর কাউকে দরকার নেই।’