বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

শুভেন্দু'র যাত্রার পরই, দিল্লিতে অর্জুন, সৌমিত্র এবং নিশীথ! হঠাৎ এই ত্রয়ীর দিল্লি গমনে উঠছে প্রশ্ন

০৩:৫৯ পিএম, জুন ৯, ২০২১

শুভেন্দু'র যাত্রার পরই, দিল্লিতে অর্জুন, সৌমিত্র এবং নিশীথ! হঠাৎ এই ত্রয়ীর দিল্লি গমনে উঠছে প্রশ্ন

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ তিনদিন আগেই দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্বের জরুরি তলবে দিল্লি উড়ে গিয়েছিলেন বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যের বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে একে একে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গেও।

এদিকে শুভেন্দুর দিল্লি যাত্রার ঠিক তিন দিনের মাথায় দিল্লিতে হাজির হলেন বিজেপির তিন নেতা অর্জুন সিং, সৌমিত্র খাঁ এবং নিশীথ প্রামানিক। হঠাৎ কেন এই ত্রয়ীর দিল্লি গমনের প্রয়োজন পড়ল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যা নিয়ে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নানা জনের নানা মত রয়েছে। এর আগে শুভেন্দুর দিল্লি যাত্রা প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, বৈঠক আছে শুভেন্দু জানতেন, কিন্তু কেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এই সময় দিল্লিতে, তা তিনি জানেন না। ঠিক সেই ভাবেই, এই তিন বিজেপি নেতা ঠিক কী কারণে দিল্লিতে, তা নিয়েও অন্ধকারে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। তবে এরই মধ্যে এই বিষয়কে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে উঠে আসছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের নয়া তত্ত্ব।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার শুভেন্দু অধিকারী নিজেই বলেছিলেন, তিনি এই মুহূর্তে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার মুখ। আর কেন্দ্রও তাঁর এই ধারণাকে যে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহই নেই। তার সবথেকে বড় কারণ, এই বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারানো। নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি হলেও, শুভেন্দু অধিকারীর নিজের কেন্দ্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারানোতে, একদিক থেকে সেটা সম্ভব হয়েছে। বাংলার ক্ষমতা দখল করতে না পারলেও, মমতাকে হারানোটাকেই এই ভরাডুবিতেও খড়কুটোর মতো আঁকড়ে ধরতে চেয়েছেন কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্ব। অন্যদিকে, দলে শুভেন্দু অধিকারীর বিশেষ গুরুত্ব এবং উত্থান এক নতুন দ্বন্দ্বের সূচনা করেছে।

শুভেন্দু অধিকারী মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন যে, তিনি এবং দিলীপ ঘোষ একই জেলার মানুষ। মিডিয়া তাঁদের নিয়ে কোনও মনগড়া তত্ত্ব খাড়া করতে পারবে না। শুভেন্দু অধিকারী যাই বলুন না কেন, দিলীপ ঘোষ কিন্তু কোনও ভনিতা না করেই বলেছেন, শুভেন্দু কেন দিল্লিতে, তা তিনি জানেন না। দিল্লি নেতারাই এর সঠিক জবাব দিতে পারবেন। এর থেকে স্পষ্ট যে, বিজেপিতে কার্যত দুটি মেরু প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একের পর এক ঘটনা সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেনন, শিবপ্রকাশ, দিলীপ ঘোষের বিরোধিতা করা তথাগত রায়ও গতকালই দিল্লিতে পৌঁছেছেন। আলাদা করে এই সময়ই তাঁর রাজধানীতে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়াটাকেও নিছক কাকতালীয় বলে মানতে নারাজ রাজনৈতিক মহল।

বলাই বাহুল্য, রাজনীতিতে গোষ্ঠী থাকলেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব হওয়াটাও স্বাভাবিক। রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসা-সহ বিবিধ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে, শুভেন্দু যখন দিল্লিতে, তখন দলের ভিতর থেকেই তাঁর প্রতি বার্তা, একা নয়, সমবেত ধ্বনি চাই। তাতে একদিকে যেমন অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে, অন্য দিকে সওয়ালও জোরালো হবে। এদিকে দলের শীর্ষস্তরের নেতারাই যেন তাঁকে আত্মপ্রকাশের আরও সুযোগ দিতে চাইছে। তাহলে প্রশ্ন, সেই কারণেই কি নীশিথ, অর্জুনদের আজ দিল্লিতে যাওয়া। অনেকেই এই ধারণা প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। আর তা যদি সত্যি হয়, তাহলে রাজ্য বিজেপির অন্দরের মধ্যেই মেরুকরণ ও বিভাজনের যে ইঙ্গিত উঠছে, তা আরও স্পষ্ট হবে আগামীতে।