শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বিজেপিকে ‘ল্যাজ ছাড়া হনু’ বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!

০৪:৩৫ পিএম, জুলাই ৬, ২০২১

বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বিজেপিকে ‘ল্যাজ ছাড়া হনু’ বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বিধানসভায় বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মুখ্যমন্ত্রী এর আগেও বহুবার অভিযোগ করেছেন যে, নির্বাচন কমিশনের সহযোগিতায় এ রাজ্যে ভোটে আসন জিতেছে বিজেপি। আর এবার সরাসরি বিধানসভা কক্ষে তিনি একই দাবি তুললেন। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভা অধিবেশনে মন্তব্য করেন যে, ‘নির্বাচন কমিশন সাহায্য না করলে, ৩০ টা আসনও পেত না বিজেপি।’ এখানেই শেষ নয়, এদিন তিনি বিজেপিকে ‘ল্যাজ কাটা হনু’ বলেও কটাক্ষ করেন। মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন যে, বিজেপির কথার কোনও সৌজন্য নেই।

সপ্তদশ বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনই ছিল সরগরম। একই সঙ্গে শাসকদলের আসনে যেমন ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক তেমনই বিরোধী দলনেতা হিসেবে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীও। শুভেন্দু তাঁর বক্তব্যে নন্দীগ্রামের মুখ্যমন্ত্রীর পরাজয়ের বিষয়টি তোলার সঙ্গে সঙ্গেই বিধানসভার অধিবেশন কক্ষ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিজেপি ওয়াক আউট করে। এরপরেই ভাষণের শুরুতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বহু জায়গায় ভোটারের থেকে ভোট বেশি পড়েছে। তিনি ভোটে কারচুপি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন। আর এই কারচুপি প্রসঙ্গেই সরাসরি নির্বাচন কমিশনকে কাঠগড়ায় তোলেন তিনি।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন যে, নির্বাচন কমিশনের সহযোগিতা না পেলে, এ রাজ্যে বিজেপি বিধানসভা নির্বাচনে ৩০ টি আসনও পেত না। এর আগেও একাধিকবার রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে কমিশনের ভুমিকার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে একাধিকবার আক্রমণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে, তা ছিল রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে। এভাবে বিধানসভার কক্ষে দাঁড়িয়ে সরাসরি এই আক্রমণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটা রেকর্ড হয়ে থাকল।

এদিকে বিজেপি বারবার সরব হয়েছে, রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা নিয়ে। আবার তৃণমূল বিজেপির এই অভিযোগ উড়িয়ে, পাল্টা বলে এসেছে যে, রাজ্যে যা হিংসার ঘটনা ঘটেছে, সে সময়ও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা কমিশনের হাতেই ছিল। এদিনও এই বিষয়ে তৃণমূল তাঁদের আগের জবাবেই স্থির থাকল। এদিনও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন যে, রাজ্যে যা হিংসার ঘটনা ঘটেছে, সে সময়ও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা কমিশনের হাতেই ছিল।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে, “আমি অটল বিহারী বাজপেয়ী, রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে কাজ করেছি। এখনকার বিজেপি কে? ল্যাজ ছাড়া হনু। এবার বিধানসভা নির্বাচন জোর করে দখলের চেষ্টা হয়েছে। বাংলাকে বহিরাগতদের আখড়ায় পরিণত করে, কুৎসার ঝড় তোলা হয়েছে। জেলায় জেলায় আরএসএস বসিয়ে রাখে। আপনাদের বলার কিছু নেই। তাই এক মিনিটে সভার কাজ সেরে প্রেসের কাছে ছোটেন। যারা রাজ্যপালকে ভাষণ পড়তেই দিল না, তারা বোঝাতে চাইছে ‘আমি কত বড়’। কোনও সংস্কৃতি নেই ওদের।” এদিন বিধানসভা কক্ষে দাঁড়িয়ে, বিজেপিকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘তোমাদের কোনও ক্ষমতা নেই আমার দূর্বার গতিকে রোখার’।

এদিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের ফল দেখে বোঝা যাচ্ছে কী ফল ধরেছে। বিষবৃক্ষ। মেদিনীপুরে ঘরে ঘরে অত্যাচার করেছে।’ এখানেই শেষ নয়, ভোট প্রসঙ্গ টেনেও বিজেপিকে আক্রমণ শানান তিনি। অভিযোগ করেন, 'বিজেপি মিথ্যার বেসাতি। ভোটের আগে এসপি বদলেছে, আইসি বদলেছে। যা মোদী বলেছে তাই হয়েছে। উপযুক্ত অফিসারদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তিনটে মাস অফিসারদের হুমকি দিয়ে রাখা হয়েছিল।’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলার মেরুদণ্ড ভাঙা যাবে না। শুধু মিথ্যে কথা বলা হচ্ছে।’ ভাষণের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, ‘খেলা হবে’ দিবস পালন করবে রাজ্য সরকার।