আর মাত্র কয়েকটা দিন পরই বসন্ত পঞ্চমী। শীত পেরিয়ে আগমন ঘটবে বসন্তের। মাঘ মাসের বসন্ত পঞ্চমী তিথি বাঙালির কাছে অত্যন্ত আনন্দের এক দিন। কারণ এদিনই মা সরস্বতী আরাধনায় মেতে ওঠেন পশ্চিমবঙ্গের আপামর রাজ্যবাসী। হলুদ পোশাক পরিধান করে দেবী-বন্দনায় মেতে ওঠেন তারা। আর পড়ুয়াদের কাছে তো এই দিনটির বিশেষ এক মাহাত্ম্যই রয়েছে।
পৌরাণিক মতে, এইদিনই নাকি সরস্বতীর জন্ম হয়েছিল। আবার দীর্ঘকাল তপস্যার পর বসন্ত পঞ্চমীর দিনেই মহামুনি ব্যাসদেব মা সরস্বতীর পুজো করেছিলেন। আবার অনেকের মতে, এই দিনেই দেবীর বর পেয়েছিলেন মহাকবি কালীদাস। তাই বসন্ত পঞ্চমীর দিনটিকেই সরস্বতীর আরাধনার দিন হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে। তবে শুধু বাংলাতেই নয়, দেশের অন্যান্য রাজ্যেও কিন্তু নানা ভাবে পালিত হয় বসন্ত পঞ্চমীর এই দিনটি। আজ জেনে নিই সেগুলির কথাই...
ঠিক পশ্চিমবঙ্গের মতোই রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশ রাজ্যেও বসন্ত পঞ্চমীর দিন দেবী সরস্বতীর পুজো করা হয়। সেখানের স্কুলগুলিতে পুজোর পাশাপাশি নানা প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী রাজ্য বিহারে আবার সরস্বতীর পাশাপাশি সূর্য্য দেবতার পুজো করা হয়ে থাকে সেদিন। সকাল সকাল স্নান সেরে, হলুদ পোশাক ও কপালে হলুদের টিকা পরে পুজোয় বসেন বিহারবাসী।
অন্যদিকে, পাঞ্জাব এবং হরিয়ানায় বসন্ত পঞ্চমীতে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রথা লক্ষ্য করা যায়। নাচ-গানের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয় বসন্তকে। পাশাপাশি থাকে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন। উত্তর কাশি রাজ্যেও বসন্ত পঞ্চমী পালিত হয়। এদিন সেখানের কৃষক সম্প্রদায়ের মানুষজন সুন্দর ভাবে সাজিয়ে তোলেন বাড়ির প্রধান দরজা। এছাড়াও হলুদ পোশাক পরে নানা ধরনের খাদ্যদ্রব্য করে ও খেয়েই আনন্দের সঙ্গে কাটিয়ে দেন সেই দিনটি।
অতএব দেখা যাচ্ছে, বসন্ত পঞ্চমীর সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য ভাবে জড়িয়ে রয়েছে হলুদ রঙটি। পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই, দেশের অন্যান্য রাজ্যেও বসন্ত পঞ্চমীতে হলুদের প্রচলন চলে আসছে বহুদিন ধরেই। ধরা যেতে পারে, এসময় হলুদ শস্য সর্ষের ফলন শুরু হয় বলেই বসন্ত পঞ্চমীতে হলুদ রঙের পোশাক পরার রীতি প্রচলিত রয়েছে।