বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

অসম সফরে গিয়ে বাংলার নিন্দা! উঠল জগদীপ ধনখড়ের বরখাস্তের দাবি

০৪:৫৯ পিএম, মে ১৪, ২০২১

অসম সফরে গিয়ে বাংলার নিন্দা! উঠল জগদীপ ধনখড়ের বরখাস্তের দাবি

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ফের একবার রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত চরমে। এতোটাই চরমে উঠেছে যে, রাজ্য শাসকদলের পক্ষ থেকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বরখাস্তের দাবি উঠল। তৃতীয়বার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে সংঘাত বেঁধেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা রাজ্য সরকারের।

রাজ্যপালের কোচবিহার সফরকে কেন্দ্র করে আগেই চিঠি লিখে মুখ খুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। সেই চিঠিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, রাজ্যপাল ধনখড় সরকারি নীতি ও প্রোটোকল মেনে চলছেন না। এর পরই অবশ্য জবাব ধেয়ে এসেছিল রাজ্যপালের তরফে। মমতাকে চিঠিতে ধনখড় লেখেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীকেও অনুরোধ, আপনার অবস্থান পুনর্বিবেচনা করুন৷ শপথ নেওয়ার পর সংবিধানের প্রতি আপনিও দায়বদ্ধ।’ কোচবিহারে গিয়ে চূড়ান্ত বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্যপাল। প্রথমে জোড়পাটকি ও পরে দিনহাটায় কালো পতাকা দেখানো হয় ধনখড়কে। এরপরই রাস্তায় নেমে পড়েন তিনি। আইসি-র উপর ক্ষোভ উগরে দেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে।

অন্যদিকে, এদিন বিজেপি সাংসদ নীশিথ প্রামাণিককে সঙ্গে নিয়ে পৌঁছে যান অসমের শ্রীরামপুরে বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করতে। বাংলার ভোটের ফল বেরোনোর পর থেকেই বিজেপির দাবি ছিল, রাজ্যে ফল পরবর্তী হিংসার পর তাদের বেশ কিছু কর্মী বাধ্য হয়ে, অসমে আশ্রয় নিয়েছেন। রাজ্যপাল আজ তাঁদের সঙ্গেই দেখা করেন। এদিন অসমে গিয়েই রাজ্যপাল অভিযোগ করেন যে, ভোটের পর বাংলার পরিবেশ অশান্ত।

শুক্রবার অসমে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় বলেন যে, বাংলার ভোটের ফল বেরোবার পর থেকেই রাজ্যের পরিস্থিতি ভয়াবহ। ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছেন হিংসা কবলিত মানুষ। আর তার একমাত্র কারণ রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অভাব। তিনি বলেন, এ প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের বোধদয় হবে মনে করলেও, কিছুই হয়নি। রাজ্যের সেবক হিসেবে আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে রাজ্যের অশান্ত এলাকায় যাওয়ার। তিনি বলেন, তাঁর প্রথম এবং প্রধান কাজ সংবিধানকে রক্ষা করা। তার পরে বাংলার মানুষকে হিংসা থেকে বাঁচানো।

রাজ্যপাল এদিন অসমে বলেন যে, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অনুরোধ, সংঘাতের পথ ছেড়ে সহযোগিতামূলক ও সাংবিধানিক অবস্থান গ্রহণ করুন। এতেই গণতন্ত্রের বিকাশ হবে। আইনের শাসন জোরদার করুন এবং মানুষের স্বার্থে কাজ করুন।’ পাশাপাশি তিনি এদিন গতকালের কোচবিহারের কথাও উল্লেখ করেও বলেন, ‘আমাকে কোচবিহারে তৃণমূল নেতারা আটকাল। একজন রাজ্যপালের কনভয় আটকে দেওয়া হচ্ছে। এর চেয়ে ভয়ঙ্কর আর কী হতে পারে। জড়িতদের খুঁজে বের করা হবে। মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিবকে জানিয়েছি।’

https://twitter.com/jdhankhar1/status/1393077056481611782

রাজ্যপালের এই অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসও। সাংসদ সৌগত রায়ের কটাক্ষ, ‘উনি এসব করে কিছু করতে পারবেন না। উনি নিজেকে পালোয়ান ভাবলে কী হবে, উনি তো পালোয়ান নন। উনি বাক্যবাগীশ।’

আবার তৃণমূলের আর এক সাংসদ সুখেন্দুশখর রায় বলেছেন যে, ‘রাজ্যপাল সমাজবিরোধীদের উস্কানি দিতে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। উনি হিংসার ইন্ধন জোগাচ্ছেন। কুখ্যাত সাংসদ নিয়ে ঘুরছেন। ওনাকে বরখাস্ত করা উচিত। রাজ্যপাল কটা ঘরছাড়া দেখেছেন। এর চেয়ে উনি মালদায় গিয়ে নদীতে লাশ ভেসে আসা দেখতে পারতেন। এটা কি নমামি গঙ্গা প্রকল্পের অংশ। দেখুক ভারতের পক্ষে লজ্জার। রাজ্যপালের বিন্দুমাত্র জ্ঞান নেই। উচিত ক্যাম্প করে মালদায় বসা। বিজেপি আর রাজ্যপালের মধ্যে পর্দা উঠে গেছে। আগে এজেন্সি পাঠাত৷ এখন কমিশন পাঠাচ্ছে। বাংলার মানুষ বুঝে নেবে।’

এদিকে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখরের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন যে, রাজ্যপাল যেদিন থেকে রাজ্যের প্রকৃত তথ্য জানতে চেয়েছেন সেদিন থেকেই তাঁকে সরানোর দাবি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।