বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

অবশেষে জল্পনার সমাপ্তি! বিজেপির সঙ্গ ছাড়লেন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী, এবার কি তৃণমূলে?

০১:২৭ পিএম, অক্টোবর ১, ২০২১

অবশেষে জল্পনার সমাপ্তি! বিজেপির সঙ্গ ছাড়লেন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী, এবার কি তৃণমূলে?

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বিজেপিতে ভাঙনের ধারা অব্যাহত। সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে, অবশেষে বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করলেন রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। বেশ কিছুদিন ধরেই বিজেপির সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ছিল। দেবশ্রী চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর বিবাদ প্রকাশ্যে এসেছিল। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানালেন, দেবশ্রী চৌধুরীর সঙ্গে একই দল করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। বিজেপি বিধায়কের দল ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফের বাড়ল তাঁর তৃণমূলে যোগের সম্ভাবনাও।

জানা গিয়েছে, একটি নম্বর থেকে তিনি শোকজ নোটিস পান। বৃহস্পতিবার কৃষ্ণ কল্যাণীকে শোকজ করে রাজ্য কমিটি। তারপরেই সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি তাঁর দল ছাড়ার কথা জানান। সূত্রের এও খবর, দেবশ্রী চৌধুরী তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন রায়গঞ্জের বিধায়ক। তিনি ভাল কাজ করছেন বলেই তাঁর বিরুদ্ধে এই আচরণ অভিযোগ কৃষ্ণ কল্যাণীর। তাই যেখানে দেবশ্রী চৌধুরী রয়েছেন, সেখানে তাঁর পক্ষে থাকা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন। তবে, তিনি অন্য কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দিচ্ছেন কিনা তা স্পষ্ট করেননি।

উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিন ধরেই দলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন রায়গঞ্জের বিধায়ক। নাম না করে আগেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন দেবশ্রী চৌধুরীর বিরুদ্ধে। বলেছিলেন, ‘এখানকার সাংসদ কখন আসেন, কখন যান আমরা কিছুই জানি না। এলাকার মানুষ প্রয়োজনে তাঁর দেখা পান না।’ পরবর্তীতে দলের সমস্ত কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন কৃষ্ণ কল্যাণী। সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছিলেন, ‘জানানো প্রয়োজন তাই বলছি। যেখানে বিধায়কের সম্মান নেই, সেখান থেকে সরে যাওয়াই ভাল।’ সেই সময়ই তাঁর দলবদলের জল্পনা চরমে ওঠে। সেই সময় আসরে নামেন মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছিলেন, ‘কৃষ্ণ কল্যাণী পার্টিতে নতুন এসেছেন। তাই সমস্ত নিয়মকানুন জানেন না। আস্তে আস্তে শিখে নেবেন।’

এদিকে, এইসবের মধ্যেই বৃহস্পতিবার কৃষ্ণ কল্যাণীকে শোকজ করে রাজ্য কমিটি। উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপির সভাপতি বাসুদেব সরকার জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই নোটিস পাঠানো হয়েছে বিধায়ককে। দল শোকজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই বিজেপি ছাড়লেন কৃ্ষ্ণ কল্যাণী। উল্লেখ্য, গতকাল রাতে রায়গঞ্জে গিয়েছেন সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। দীর্ঘক্ষণ সেখানে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। মনে করা হচ্ছে, ওই বৈঠকেই কৃষ্ণ কল্যাণীকে শোকজের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর সেই চিত্রটা সম্পূর্ণ বদলে যায়। একের পর এক বিজেপি নেতা দল ছাড়তে শুরু করেন। শুরুটা হয়েছিল বিজেপির বিধায়ক মুকুল রায়কে দিয়ে। তৃণমূল রাজ্যের তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার এবং সরকার গঠনের পরই তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। এরপর ব্রাত্য বসু ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে ঘাসফুলে আসেন কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায় ও বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ প্রমুখ। তাই কৃষ্ণ কল্যাণীর দল ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই এখন প্রশ্ন উঠছে যে, তাহলে কি এবার জোড়াফুলের পতাকা হাতে তুলে নেবেন রায়গঞ্জের বিধায়ক? উত্তর সময়ের হাতে। সেই উত্তরের অপেক্ষায় রাজনৈতিক মহল।