বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

এবার কি তাহলে সৌমিত্র খাঁ গেরুয়া শিবির ছাড়ছেন? দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়া নিয়ে কী বলেছেন সাংসদ?

০৪:০৪ পিএম, জুন ৫, ২০২১

এবার কি তাহলে সৌমিত্র খাঁ গেরুয়া শিবির ছাড়ছেন? দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়া নিয়ে কী বলেছেন সাংসদ?

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলায় একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই ‘দলবদলুদের’ ফের তৃণমূলে ফেরার হিড়িক পড়ে গেছে। এই আবহে এবার জল্পনা বাড়ালেন বিজেপির সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। সূত্রের খবর, বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছড়ালেন বিজেপির এই সাংসদ। এরপর কি তাহলে দলও ছাড়বেন তিনি? সেই জল্পনাই এখন তুঙ্গে।

জানা গিয়েছে যে, বিষ্ণুপুরে বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকের সূচি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেওয়ার পরই, সংশ্লিষ্ট গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যান সৌমিত্র খাঁ। যদিও এই প্রসঙ্গে সাফাই দিতে গিয়ে, বিষ্ণুপুরের সাংসদ জানিয়েছেন যে, এর সঙ্গে বিজেপি ছাড়ার কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি এও বলেছেন যে, তিনি দলের একজন দায়িত্বশীল নেতা। বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্র শান্তিতে রয়েছে। দল বদলের প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে, অনেকেই ‘যাব যাব করছেন। তাঁরা দলে এসেছিলেন। ভোটে হেরেছেন। আবার তৃণমূলে যাবেন বলছেন। এতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না।’

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, একসময় তৃণমূল দলের সৈনিক ছিলেন সৌমিত্র খাঁ। পরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে লড়ে, জিতেছিলেন এবং সাংসদ হন। তাঁর জয়ের পিছনে বড় অবদান ছিল তাঁর স্ত্রী সুজাতা খাঁ- এর। এরপর সকলকে অবাক করে দিয়ে, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন সুজাতা খাঁ। স্ত্রীর তৃণমূলে যোগদানের পরই, সুজাতাকে বিবাহবিচ্ছেদের নোটিশ পাঠান বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। সংবাদমাধ্যমে কান্নায় ভেঙে পড়েন সৌমিত্র। এ নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি।

এদিকে আবার সৌমিত্র খাঁ-এর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়া প্রসঙ্গে তাঁর স্ত্রীর বক্তব্য, যে বিজেপি ঘর ভাঙায়, সেখানে থাকার দরকার নেই বলেই মনে করেন তিনি। তবে, ফের তৃণমূলে ফিরবেন কিনা, সে সিদ্ধান্ত সৌমিত্র নেবেন বলেও জানান তিনি।

বাংলায় একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে জোড়া ফুল শিবির ছেড়ে অনেকেই পদ্ম শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন। অনেক নেতা, মন্ত্রী, বিধায়ক নাম লিখিয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরে। তবে, ভোটে বিজেপির বড় বিপর্যয়ের পরই, তাঁদের ঘোর কাটে। এখন তাঁরাই আবার ফিরতে চাইছেন দলে। ইতিমধ্যেই, তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে আবেদন করেছেন সোনালী গুহ থেকে দীপেন্দু বিশ্বাস-সহ অনেকেই। একুশের ভোটে ঐতিহাসিক জয়ের পর কালীঘাটে সাংবাদিক বৈঠকে দলবদলুদের দলে ফেরার প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'আসুক না। কে বারণ করেছে? এলে স্বাগত!' মমতার এই মন্তব্যের পরই জোর চর্চা শুরু হয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে।

তবে এখন পরিস্থিতি অন্য কথা বলছে। তাই প্রশ্ন উঠছে, কী হবে এই ‘দলবদলু’ দের ভবিষ্যৎ? আবারও কি তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে তৃণমূলে? সূত্রের খবর, এখনই সেই সম্ভবনা নেই বলেই জানাচ্ছে শাসকশিবির। সেই সম্ভবনা যথেষ্ট ক্ষীণ।

শাসক দলের একটা অংশের মতে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ‘দলত্যাগী’রা শুধুমাত্র যে দল ত্যাগ করেছেন তাই নয়, দলের বিরুদ্ধে কার্যত সমালোচনা করেছেন, বিষোদগার করেছেন। এখানেই শেষ নয়, দলের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করার সঙ্গে সঙ্গে দলের ক্ষতিও করেছেন বলে অভিযোগ। এখন দলের ভালো সময়ে তাঁদের ফের দলে ফিরিয়ে নিলে, যেসব কর্মীরা এতদিন দলের খারাপ সময়েও নিজেদের জীবন বাজি রেখে, লড়াই করেছেন ময়দান ছেড়ে যাননি, তাঁদের প্রতি অবিচার করা হবে, তাঁদের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তাই ‘দলবদলু’দের এখনই দলে ফেরানোর কোনও প্রশ্নই ওঠে না। বরং আরও কিছুদিন তাঁদের অপেক্ষায় রাখা প্রয়োজন।