শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

বিজেপির ‘শহিদ সম্মান যাত্রা’য় পুলিশি বাধা! আটক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, জয়প্রকাশ-সহ অনেকেই

০৩:০২ পিএম, আগস্ট ১৭, ২০২১

বিজেপির ‘শহিদ সম্মান যাত্রা’য় পুলিশি বাধা! আটক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, জয়প্রকাশ-সহ অনেকেই

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ফের বিজেপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধল। আজ রাজ্যব্যাপী বিজেপির শহিদ সম্মান যাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল। রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসার বলি কর্মীদের স্মরণে এই কর্মসূচির উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য বিজেপি। রাজ্য বিজেপির এই বিশেষ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন রাজ্যের ৪ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। রাজ্য জুড়েই শহিদ সম্মান যাত্রার আয়োজন করে পদ্ম শিবির।

তবে, এই ‘শহিদ সম্মান জাত্রা’র শুরুতেই বিপত্তি বাধে। পুলিশ বাধা দিতেই ধুন্ধুমার পরিস্থিতি্র সৃষ্টি হয় বিরাটিতে। বহু বিজেপি কর্মীর পাশাপাশি আটক করা হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর ও জয়প্রকাশ মজুমদারকে। এদিকে মুরলীধর সেন স্ট্রিটেও ছড়িয়েছে উত্তেজনা।

আজ রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে বিজেপির যে সমস্ত কর্মীরা খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের সম্মান জানাতে এবং মৃত কর্মীদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতেই এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বিজেপির সদর দফতর থেকে এই কর্মসূচির সূচনা হয়। বিজেপির এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন বিজেপির চার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। ড. সুভাষ সরকার, শান্তনু ঠাকুর, জন বার্লা ও নীশিথ প্রামাণিক অংশ নেবেন এই কর্মসূচিতে। উল্লেখ্য, জন বার্লা ও নীশিথ প্রামাণিক শিলিগুড়ি ও দার্জিলিংয়ের বেশ কিছু জায়গায় শ্রদ্ধাও জানানোর কথা রয়েছে।

আজকের কর্মসূচি অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকালে বিরাটির গৌরীপুরে পৌঁছন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, জয়প্রকাশ মজুমদার-সহ বহু বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। প্রথমে গৌরীপুর কালীবাড়িতে পুজো দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। সেখান থেকেই কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। এরপরই পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে ওঠে।

https://twitter.com/jay_majumdar/status/1427526055288397825

ঘটনাস্থল থেকে বিজেপির অনেক কর্মীকে আটক করা হয়। পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয় শান্তনু ঠাকুর এবং জয়প্রকাশ মজুমদারকেও। তাঁদের ঘটনাস্থল থেকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় এয়ারপোর্ট থানায়। এই মুহূর্তে সেখানেই রয়েছেন তাঁরা। এই ঘটনার পর, রাজ্যের শাসকদল এবং পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে তাঁরা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেন, ‘পুলিশ দলদাসে পরিণত হয়েছে। বিজেপির সমস্ত কর্মসূচিতে অকারণে বাধা দেওয়া হচ্ছে।’ শান্তনু ঠাকুরের পাশাপাশি ক্ষোভ প্রকাশ করে, বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের দাবি, রাজ্যে তালিবানি শাসন চলছে।

এদিকে, দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন আরও এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার। উত্তরপাড়ায় বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছিল। সেই মঞ্চ নির্মাণ করতে বাধা দেওয়া হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। সেখান থেকে ১৫ জন বিজেপি কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

অন্যদিকে, এদিন সকালেই ‘শহিদ সম্মান যাত্রা’কে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় শিলিগুড়ির হাসমি চকে। করোনা পরিস্থিতির অজুহাতে কর্মসূচিতে বাধা দেয় পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, কোনোরকম জমায়েত করা যাবে না। যার প্রতিবাদ করেন বিজেপির কর্মীরা। এরপর পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো তর্কে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। আর তাতেই পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কয়েকজন বিজেপি কর্মীকে আটক করে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষকে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলায় একুশের ভোট পরবর্তী সময়ে হামলার শিকার হয়েছেন বহু বিজেপি কর্মী। অনেকে ঘরছাড়া হয়েছেন। তাঁদের মনোবল বাড়াতে এবং সর্বোপরি সংগঠনকে চাঙ্গা করতেই একের পর এক কর্মসূচির আয়োজন করে চলেছে গেরুয়া শিবির। এর আগে  সোমবার ‘খেলা হবে’ দিবসের পাল্টা রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে ‘পশ্চিমবঙ্গ বাঁচাও দিবস’ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। সেই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করেও ধুন্ধমার কাণ্ড বাঁধে শহর কলকাতায়। বিজেপির এই কর্মসূচিতে আটক করা হয় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে।

কলকাতার রানি রাসমণি রোডে ‘পশ্চিমবঙ্গ বাঁচাও দিবস’ পালনের জন্য গতকাল ধর্নায় বসেছিলেন দিলীপ, শুভেন্দুরা। এই জমায়েতে পুলিশি অনুমতি ছিল না বলেই খবর। কিন্তু সেসবের তোয়াক্কা না করেই, ধর্নায় বসেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। এরপরই বিশাল পুলিশ বাহিনী ওই স্থানে গিয়ে গ্রেফতার করে দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, দেবশ্রী চৌধুরী, সায়ন্তন বসু-সহ শীর্ষ বিজেপি নেতারা। আটক করা হয় বিজেপির মহিলা ও যুব মোর্চার নেতৃত্বকেও।