বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

‘আমার মনে হয়, এই নির্বাচন স্থগিত করা দরকার’! প্রচারের শেষলগ্নে ভবানীপুর অশান্তি ইস্যুতে দিলীপ

০৬:৪৮ পিএম, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২১

‘আমার মনে হয়, এই নির্বাচন স্থগিত করা দরকার’! প্রচারের শেষলগ্নে ভবানীপুর অশান্তি ইস্যুতে দিলীপ

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আজই ছিল ভবানীপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রচারের শেষ দিন। শেষ বেলার প্রচারে তাই প্রতিটি দলই জোরকদমে শেষবেলায় জনসংযোগ স্থাপনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এরই মধ্যে আজ ভবানীপুরে নির্বাচনী প্রচারকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে যদুবাবুর বাজারে। এদিন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেয়ালের প্রচারে গেলে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল সমর্থকরা। পরিস্থিতি এতোটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, ধাক্কাধাক্কিতে এক বিজেপি কর্মীর মাথা ফেটে যায়। পরে, দিলীপ ঘোষের নিরাপত্তা রক্ষীরা বন্দুক বের করে ভয় দেখিয়ে সেখান থেকে কোনও রকমে সরিয়ে নিয়ে যান তাঁকে।

এদিকে এই ঘটনার পরই সাংবাদিক বৈঠক করেন দিলীপ ঘোষ। সেই বৈঠকে যদুবাবুর বাজারে প্রচারে বিজেপি কর্মীদের ওপর মারধরের সমালোচনায় সরব হওয়ার পাশাপাশি তিনি ‘ভোটে স্থগিতাদেশ চাই’ বলে দাবি তোলেন। এদিন এই ঘটনা প্রসঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘ভবানীপুরে বিজেপি নেতা অর্জুন সিং প্রচারে গেলে ভবানীপুরের শীতলা মন্দির ও গুরুদ্বারের সামনে অর্জুন সিংকে ঘিরে ধরে গো ব্যাক স্লোগান দেওয়া হয় ও বিক্ষোভ দেখানো হয়। তিনি ওখান থেকে চলে আসতে বাধ্য হন। নির্বাচন ঘোষণার পর প্রচার শুরু হতেই এটা হচ্ছে। বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। কালীঘাটে আমাদের বাধা দেওয়া হয়েছে।’

সাংবাদিক বৈঠকে তিনি পুলিশি নিস্ক্রিয়তার অভিযোগও তুলেছেন। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি বলেন যে, ‘গণ্ডগোল হবে আশঙ্কা করেই কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা কিছু করেননি। একজন এসপি অফিসার প্রতিবাদ করেছিলেন। তাকেও প্রবল মারধর করা হয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা ছিল ৮০টি জায়গায় প্রচার করব। বহু জায়গায় গন্ডগোল হয়েছে। হয়তো তৃণমূল বুঝতে পারছে ওরা হেরে যাবে। তার জন্য এটা করা হচ্ছে।’

ভবানীপুরের আইন শৃঙ্খলার প্রশ্ন তুলে দিলীপবাবু অভিযোগ করে বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে লড়াই করছেন সেখানে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির যদি এই অবস্থা হয় তাহলে কী হবে! নির্বাচন কমিশন সব জানে। বারবার অভিযোগ করা হয়েছে। এনিয়ে দিল্লি ও কলকাতায় এনিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। তার পরেও নিরাপত্তা নেই। এখন নির্বাচনের প্রচারই যদি না হতে পারে, ভোটারদের কাছে যদি পৌঁছাতেই না পারি তাহলে সেই নির্বাচনের কী মানে হয়! আজ ভোট প্রচারের শেষ দিন ছিল। গুন্ডা দিয়ে প্রচার বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। বিজেপিকে আটাকানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এর ফলে গোটা ভবানীপুরের মানুষ ভয়ের মধ্য রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ বাড়ি থেকে বেরিয়ে কীভাবে ভোট দেবে? তারা তো নিরপেক্ষভাবে ভোট দিতেই পারবে না। ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করে বিজেপিকে আটকানোর চেষ্টা হচ্ছে। যে পরিস্থিতির মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করার জন্য ভোট করা হচ্ছে তাতে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্ভব নয়। আমার মনে হয়, এই নির্বাচন স্থগিত করা দরকার। যখন সাধারণ মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবে তখনই ভোট করা উচিত। দলের প্রার্থীই যদি প্রচার করতে না পারে তাহলে অবাধ ভোট সম্ভব নয়। তাই দাবি করছি, এই নির্বাচন বন্ধ হোক।’

অন্যদিকে, এদিন যদুবাবুর বাজারের ঘটনায় তাঁর নিরাপত্তারক্ষীর বন্দুক উঁচিয়ে ভয় দেখানোর প্রসঙ্গে দিলীপ বাবুর সাফাইয়ের সুরে বক্তব্য, ‘মমতা সারাজীবন নির্বাচন লড়তেই থাকবেন? একজনের ইচ্ছায় নির্বাচন হচ্ছে। গায়ের জোরে নির্বাচন গণতন্ত্রের প্রতি ঠিক নয়। আজ পুলিশও ছিল না। আমার জীবনের সংশয় ছিল, তাই নিরাপত্তারক্ষীরা বন্দুক বার করেছেন। হাইভোল্টেজ নির্বাচনে সমস্ত নেতা, মন্ত্রীদের লাগিয়েছেন, আমরাও তাই করছি। উচিত ছিল আমাদের সমান সুরক্ষা দেওয়া।’