শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

জাল টিকাকরণ কাণ্ডে তৎপর কেন্দ্র সরকার! রাজ্যকে চিঠি কেন্দ্রের

০৪:৩৮ পিএম, জুন ৩০, ২০২১

জাল টিকাকরণ কাণ্ডে তৎপর কেন্দ্র সরকার! রাজ্যকে চিঠি কেন্দ্রের

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজ্যে জাল ভ্যাকসিন কাণ্ড নিয়ে এবার নড়েচড়ে বসল কেন্দ্র সরকার। রাজ্য সরকারকে এই জাল ভ্যাকসিন কাণ্ড নিয়ে এবার চিঠি পাঠাল কেন্দ্র সরকার। চিঠিতে জানতে চাওয়া হয়েছে, জাল ভ্যাকসিন কাণ্ডের অভিযোগের ভিত্তিতে ঠিক কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? জানা গিয়েছে, রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদিকে চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্র। পাশাপাশি কেন্দ্রের পাঠানো এই চিঠির ব্যাখ্যা চেয়ে ২ দিনের মধ্যে রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পক্ষ থেকে।

কেন্দ্রের পাঠানো এই চিঠিতে বলা হয়েছে, কো- উইনের মাধ্যমে হয় টিকাকরণ, মেলে দেওয়া হয় সার্টিফিকেট। এনিয়ে নির্দিষ্ট তথ্য জানানো আছে সমস্ত রাজ্যকে। সঠিক নজরদারি না থাকলে, এই ধরনের ঘটনা আবারও ঘটবে।

উল্লেখ্য, কলকাতা শহরের বুকে রীতিমতো সাজিয়ে-গুছিয়ে ভুয়ো ভ্যাকসিন ক্যাম্প চলছিল কলকাতা পুরসভার ক্যাম্পের আদলে, তাও আবার কসবা থানা থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরত্বে। মানে একেবারে পুলিশের নাকের ডগায়। এখানেই শেষ নয়, এই ক্যাম্প একদিন-দু’দিন নয়, ১০ থেকে ১২ দিন ধরে চলে এই ভুয়ো ক্যাম্প। প্রতিদিন এই ক্যাম্পে লোক হত গড়ে দেড়শো জন। অর্থাৎ প্রায় হাজার দেড়েক মানুষ, যারা লাইনে দাঁড়িয়ে ভ্যাকসিনও নেন।

শুধু কসবাই নয়, উত্তর কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট সিটি কলেজেও ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পের আয়োজন করে দেবাঞ্জন। কলেজ অধ্যক্ষের দাবি, কলকাতা পুরসভার জয়েন্ট কমিশনার পরিচয়ে প্রথমে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিলি করে কলেজ কর্তৃপক্ষের আস্থা অর্জন করে দেবাঞ্জন। এরপর ১৮ জুন কলেজে ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। অধ্যাপক, প্রাক্তনী ও ছাত্র ছাত্রী মিলে ৭২ জন ভ্যাকসিন নিয়েছেন।। অধ্যক্ষের দাবি, কোভিশিল্ডের পাশাপাশি স্পুটনিক ভি-ও দেওয়ার কথা জানায় দেবাঞ্জন।

জাল ভ্যাকসিন কাণ্ডের পর্দা ফাঁস হতেই, একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে পুলিশের হাতে। ইতিমধ্যেই এই কাণ্ডে দেবাঞ্জন ছাড়াও আরও ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে দেবাঞ্জনের খুড়তুতো ভাই কাঞ্চন দেবও রয়েছে। ইতিমধ্যেই এই জাল ভ্যাকসিন কাণ্ডে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে সিট গঠন করে তদন্ত শুরু হয়েছে। এদিকে এই মামলায় এবার কলকাতা পুলিশের কাছে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ED। খাস কলকাতার বুকে এই ভ্যাকসিন কাণ্ড নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি।

জানা গিয়েছে, পুরসভার জয়েন্ট কমিশনার পরিচয় দিয়ে মেহেতা বিল্ডিংয়ের একটি দোকান থেকে ইঞ্জেকশন কিনেছিল দেবাঞ্জন। ভুয়ো কাগজপত্র বানিয়ে, ওই ইঞ্জেকশন কেনে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। কর্ণধার জানিয়েছেন, দু’দফায় দেবাঞ্জন ইঞ্জেকশন কিনেছিল।

এই জালিয়াতির ছত্রে ছত্রে কলকাতা পুরসভার নাম জড়িয়ে আছে। কলকাতা পুরসভার জাল নথি-হলোগ্রাম ব্যবহার করা হয়েছে। পাশাপাশি ব্যবহার করা হয়েছে রাজ্য সরকারের নামও। দীর্ঘ সময় ধরে চলেছে এই জালিয়াতি। কীভাবে মাসের পর মাস ধরে চলা এই জালিয়াতি কারও চোখে পড়েনি? কেনই বা কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? এইসব প্রশ্ন তুলে, ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিজেপি।

সুত্রের দাবি, ২৫ লক্ষ টাকা খরচ করে ১ বছর ধরে প্রতারণার জাল ছড়িয়েছিল ভ্যাকসিনকাণ্ডে ধৃত দেবাঞ্জন দেব। করোনার সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরই ছক সাজিয়ে ফেলে সে। শুরুতে পিপিই, মাস্কের ব্যবসা করবে বলে ঠিক করলেও ধীরে ধীরে রাজনৈতিক যোগাযোগ বাড়িয়ে একের পর এক ভ্যাকসিন ক্যাম্পের আয়োজন করতে থাকে সে।