শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

পান্তার জোর! বিধানসভায় শপথ নিলেন গরীব ঘরের সাদামাটা গৃহবধূ চন্দনা বাউরি

০৪:২৮ পিএম, মে ৭, ২০২১

পান্তার জোর! বিধানসভায় শপথ নিলেন গরীব ঘরের সাদামাটা গৃহবধূ চন্দনা বাউরি

চলতি বছরের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির 'দরিদ্রতম' প্রার্থী হিসেবে উঠে এসেছিল শালতোড়ার চন্দনা বাউরির নাম। প্রচারের দিন থেকেই সবার নজর কেড়েছিলেন তিনি। তাঁর প্রভাব পড়েছিল ভোট বাক্সেও। বিরোধীদের হারিয়ে ভোটে জিতেছিলেন 'খেটে খাওয়া গরীব'দের প্রতিনিধি চন্দনা৷ আজ, সুদূর বাঁকুড়া থেকে কলকাতায় এসে পৌঁছলেন বিজেপির এই নবনির্বাচিত বিধায়ক। কারণ বিধানসভায় আজই যে তাঁর শপথ গ্রহণ। শপথ নিতে তাই ভাড়ার গাড়িতে চেপেই শহরে পা রাখলেন চন্দনা।

আজ, বিধানসভায় দাঁড়িয়ে আরও ১৪৭ জন বিধায়কের সঙ্গে শপথ গ্রহণ করলেন চন্দনা বাউরি। তারপরই বিজেপির প্রতি কৃতজ্ঞতায় জড়িয়ে এল তাঁর গলার স্বর৷ শপথের পর তিনি জানান, "আমার মতো গরীব একজন মানুষকে বিজেপি ভোটের টিকিট দিয়েছে, এটাই আমার কাছে অনেক। একবার কলকাতায় আসতে অনেক খরচ। তাও জনগণ আমায় যখন জিতিয়েছে তখন তো আসতেই হবে। তাই এলাম।" উল্লেখ্য, সুদূর বাঁকুড়ার শালতোড়া থেকে দাদার গাড়ি ভাড়া করেই কলকাতায় আসেন চন্দনা। শপথ গ্রহণের সময় পরনে ছিল সাধামাটা শাড়ি আর মুখে লাল-হলুদ মাস্ক। আর সেই মাস্কের আড়ালেই বারবার নজরে আসছিল চন্দনার খুশিতে উজ্জ্বল চোখ-মুখ।

তবে শপথ গ্রহণের পরই থেমে থাকেননি চন্দনা। আগামী পাঁচ বছর এলাকার মানুষের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিতেও অঙ্গীকারবদ্ধ হন তিনি। তাঁর কথায়, শালতোড়ার রাস্তা-ঘাট তৈরির কাজেই প্রথম নজর তাঁর৷ এছাড়াও এলাকার মানুষের জন্য যত দ্রুত সম্ভব জলের সু-বন্দোবস্ত করার পরিকল্পনাও রয়েছে চন্দনার। তিনি বিজেপির 'দরিদ্রতম' বিধায়ক হলেও এলাকার কাজের সঙ্গে কোনওরকম আপস করতে তিনি নারাজ। কারণ তাঁর এলাকার মানুষের আশাপূরণের দায়িত্ব এখন চন্দনারই হাতে।

প্রসঙ্গত, চন্দনা বাউরির স্বামী পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। এতদিন সংসার-সন্তান সামলে স্বামীর সঙ্গে যোগান দেওয়ার কাজও করতেন চন্দনা। একচালা বাড়িতে কোনও ভাবে দিন কাটান তাঁর পরিবার। এবারের নির্বাচনে তাঁর দল বিজেপির 'সোনার বাংলা'র গড়ার স্বপ্ন পূরণ না হলেও নিজের স্বপ্নপূরণের পথে এক ধাপ এগিয়েছেন চন্দনা। তাঁর জয়ে বিজেপিও গর্বিত। বিধানসভায় শপথ গ্রহণের দিন সেই গর্বই যেন ফের ছুঁয়ে গেল চন্দনাকে।