শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

মোবাইল গেম খেলতে বারণ করার পরিণতি হল মর্মান্তিক! দুর্গাপুরে আত্মঘাতী অষ্টম শ্রেণির ছাত্র

১০:৪৬ পিএম, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২১

মোবাইল গেম খেলতে বারণ করার পরিণতি হল মর্মান্তিক! দুর্গাপুরে আত্মঘাতী অষ্টম শ্রেণির ছাত্র

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ সামনেই পরীক্ষা। তাই পড়াশোনায় বেশি নজর দিতে বলেছিলেন মা। বারণ করেছিলেন মোবাইলে অনলাইন গেম খেলতে ছেলেকে। কিন্তু তখন ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি, এই নিষেধের পরিণতি তাঁদের জীবনটা মুহূর্তে বদলে দেবে। এর পরিণতি এতোটা ভয়ানক এবং যন্ত্রণাদায়ক হতে চলেছে! যে যন্ত্রণা বাকি জীবনটা তাঁদের বয়ে নিয়ে বেড়াতে হবে। যার ভার বয়ে নিয়ে যাওয়া আরও কষ্টকর। মায়ের বারণ পছন্দ না হওয়ায়, আত্মঘাতী হয়েছে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। ঘটনাটি ঘটেছে দুর্গাপুরের বেনাচিতিতে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত কিশোরের নাম রাশ রাউত, বয়স ১৪ বছর। দুর্গাপুর থানা এলাকার বেনাচিতি সংলগ্ন ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নতুনপল্লী এলাকার বাসিন্দা রাশ রাউত। জানা গিয়েছে, অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রাশ। রাশের বাবা সঞ্জয় রাউতের আয় খুবই সামান্য। পেশায় তিনি ট্রাক চালক। কষ্ট করেই ছেলেকে পড়াচ্ছিলেন। ভর্তি করেছিলেন বেসরকারি স্কুলে।

সঞ্জয়বাবু জানিয়েছেন, অন্যান্যদিনের মতোই এদিন দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর মোবাইলে গেম খেলছিল রাশ। মা মোবাইল রেখে পড়ার কথা বলতেই দরজা বন্ধ করে দেয় রাশ। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও, তার খোঁজ না মেলায় ডাকাডাকি করা হয়। তাতেও সাড়া মেলেনি। খাওয়া দাওয়া সেরে ফের কাজে বেরিয়ে গিয়েছিলেন সঞ্জয়বাবু। এরপর বাধ্য হয়েই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। দরজা ভাঙতেই ঘর থেকে উদ্ধার হয় রাশের ঝুলন্ত দেহ।

সঞ্জয়বাবু আরও জানিয়েছেন যে, ‘ছেলে পড়াশোনায় ভাল ছিল। যেহেতু এখন অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষা হচ্ছে, তাই কষ্ট হলেও, ছেলেকে মোবাইল কিনে দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই মোবাইল যে আমার প্রাণ কেড়ে নেবে বুঝিনি।’ ছেলের মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবার-পরিজনেরা। এদিকে মৃতার দিদি নেহা রাউত জানান যে, ‘ফ্রি ফায়ার গেম ডাউনলোড করেছিল ভাই। তাই মা ওকে বকাঝকা করত। মায়ের কাছে বকা খেলে ভাই অভিমানে দরজা বন্ধ করে দিত। গেটে তালা বন্ধ করে দিতো। বেশিরভাগ দিনই ঘুমিয়ে পড়ত। এদিন আর দরজা খোলেনি।’ জানা গিয়েছে, রাতেই পুলিশ দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। রবিবার ময়নাতদন্তের পর দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে।