শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত বিশিষ্ট তবলাবাদক পণ্ডিত শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

০৪:১৮ পিএম, আগস্ট ২৫, ২০২১

করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত বিশিষ্ট তবলাবাদক পণ্ডিত শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন, বিশিষ্ট তবলাবাদক পণ্ডিত শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনার জোড়া ভ্যাকসিনেও শেষরক্ষা হল না। সেই মারণ করোনাতেই অসময়ে নিভে গেল এই বিশিষ্ট তবলিয়ার জীবনদীপ।

বুধবার দুপুর ১ টা নাগাদ মাত্র ৫৪ বছর বয়সে, কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে এই স্বনামধন্য তবলা শিল্পী শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গত জুন মাস থেকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তাঁর শারীরিক অবস্থার অত্যাধিক অবনতি হওয়ায়, তাঁকে একমো সাপোর্টে রাখা হয়। সবরকম চেষ্টার পরেও তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হল না, চিকিৎসকদের পক্ষে। বুধবার দুপুরেই চলে গেলেন এই বিখাত শিল্পী। তাঁর এই অকাল প্রয়াণে স্বাভাবিকভাবেই গভীর শোকের ছায়া বাংলার সংগীত মহলে।

পরিবার সূত্রে খবর, জুন মাসে তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। তার আগেই তিনি করোনা ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নিয়েছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রয়াত তবলাবাদকের শরীরে মারণ করোনা থাবা বসায়। এরপর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করলে, তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

উল্লেখ্য, বর্তমান প্রজন্মের তবলিয়াদের মধ্যে অন্যতম পণ্ডিত শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন তিনি শিল্পীমহলে। বিভিন্ন মঞ্চে বর্ষীয়ান, বিখ্যাত তবলিয়াদের সঙ্গে তাঁর অসাধারণ যুগলবন্দী এক অন্য মাত্রা যোগ করত অনুষ্ঠানগুলিতে। শিক্ষক হিসেবেও তিনি যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন তাঁর অগণিত ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে। দেশের বাইরেও শিক্ষক হিসেবে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়েছিল।

শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তাঁর নামে একটি তহবিল তৈরি করেন তাঁর অনুগামীরা। কিন্তু তা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায় নেটমাধ্যমে। জানা গিয়েছিল, শিল্পীর পরিবারের তরফে তহবিল সংগ্রহের জন্য কোনও প্রচেষ্টা নেওয়া হয়নি। তাঁর শুভানুধ্যায়ীরা নেটমাধ্যমে তহবিল সংগ্রহের আবেদন জানিয়েছিলেন। যদিও তাঁর ছেলে আর্চিক বন্দ্যোপাধ্যায় পরে জানান যে, ‘শুরুতে আমরা চাইনি বাবার নামে এমন একটা তহবিল সংগ্রহের আবেদন চালু হয়ে ভাইরাল হয়ে যাক। কিন্তু তারপর বিভিন্ন শিল্পীর সঙ্গে কথা বলে আমরা সহমত হয়েছি যে, এই তহবিল চলুক।’

সেই তহবিলের টাকায় চিকিৎসা চলছিল শিল্পীর। সকলে মিলে এই প্রিয় শিল্পীর পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু ক্রমশ পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে শুরু করে। পরবর্তীতে একমো সাপোর্টে রাখা হয়। কিন্তু প্রায় দু মাস ধরে চিকিৎসকরদের সমস্ত প্রচেষ্টা এবং অনুরাগী, শিক্ষার্থীদের প্রার্থনা, চেষ্টা সবকিছুকে ব্যর্থ করে মাত্র ৫৪ বছর বয়সে চলে গেলেন শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বহু বছর ধরে পণ্ডিত রবিশঙ্কর, ওস্তাদ আমজাদ আলি খান, পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাশিয়া, পণ্ডিত বিরজু মহারাজ প্রমুখ শিল্পীদের সঙ্গে একই মঞ্চে অনুষ্ঠান করেছেন শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রয়াত শিল্পী শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে ‘সঙ্গীত সম্মান’ এবং ‘সঙ্গীত মহা সম্মান’ পুরস্কারও গ্রহণ করেছেন।