শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

চলতি বছর শেষের আগেই হাতে আসবে ২০০ কোটির বেশি ভ্যাকসিন! দেশবাসীকে আশ্বাস কেন্দ্রের

১০:০৩ পিএম, মে ১৩, ২০২১

চলতি বছর শেষের আগেই হাতে আসবে ২০০ কোটির বেশি ভ্যাকসিন! দেশবাসীকে আশ্বাস কেন্দ্রের

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ করোনা মোকাবিলায় ভ্যাকসিন অপরিহার্য। আর এই ভ্যাকসিনের পর্যাপ্ত যোগান দেশের সর্বত্র না থাকায়, বিগত বেশকিছু দিন ধরেই কেন্দ্রের উপর ক্রমশ চাপ বাড়ছিল।

আর সেই কথা মাথায় রেখে, করোনা মোকাবিলায় কোভ্যাকসিন, কোভিশিল্ডের পর রাশিয়ার করোনা ভ্যাকসিন ‘স্পুটনিক ভি’কে ছাড়পত্র দিয়েছিল কেন্দ্র। এবার সেই ভ্যাকসিন সম্ভবত আগামী সপ্তাহ থেকেই ভারতের বাজারে পাওয়া যাবে। এমনটাই জানিয়েছে নীতি আয়োগ। উল্লেখ্য, রাশিয়া থেকে স্পুটনিক ভি (Sputnik V) ভারতে এসে গিয়েছিল এ মাসের প্রথম দিনই। প্রাথমিকভাবে দেড় লক্ষ ভ্যাকসিন পাঠানো হয়েছিল। এবার তা বাজারে আসতে চলেছে। সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহ থেকে ভারতের বাজারে মিলবে রুশ করোনা ভ্যাকসিন। ডক্টর রেড্ডি’স ল্যাবের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে এই কাজ শুরু হবে। এমনটাই আজ জানিয়েছেন নীতি আয়োগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সদস্য ডা ভি কে পল।

অন্যদিকে, ভারতে করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করছে ২ টি সংস্থা। তারপরেও দেশের মধ্যে প্রায় সব রাজ্যেই করোনা ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত আকাল তৈরি হয়েছে। সারাদিন ধরে লাইন দিয়েও মিলছে না ভ্যাকসিন। পাশাপাশি ঘোষণার পরেও, ভ্যাকসিনের অভাবের কারণেই ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করা যায়নি সব রাজ্যে।

এই পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিন নিয়ে আশার কথা শোনালো কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার নীতি আয়োগের চেয়ারম্যান ডা ভি কে পল সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন যে, ডিসেম্বরের মধ্যেই দেশের ৮০ শতাংশ মানুষের টিকাকরণ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে ২০০ কোটি ভ্যাকসিন প্রস্তুত হলে এবং আগস্ট থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে তা হাতেও এসে যাবে। তখন অনেকটাই কেটে যাবে ভ্যাকসিনের এই সঙ্কট।

এর মধ্যে রয়েছে ৭৫ কোটি কোভিশিল্ড ও ৫৫ কোটি কোভ্যাকসিন ডোজ। এখনও পর্য়ন্ত এনিয়ে মোট ৩টি ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্র। দেশে তৈরি কোভ্যাকসিন ও কোভিশিল্ডের সঙ্গে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে রাশিয়ার ভ্যাকসিন স্পুটনিক V কেও। ওই ভ্যাকসিন ভারতে আমদানি করছে ডা রেড্ডিজ ল্যাব। দুনিয়ার ৬০টি দেশে জরুরি ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য ওই ভ্যাকসিনকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে, কেন্দ্রের এই দাবির বিষয়ে বিরোধীদের বক্তব্য, গোটা দেশ যখন চূড়ান্ত সংকটের মধ্যে, এবং করোনার প্রকোপে বিপর্যস্ত, তখন কেন্দ্রের মোদী সরকার মানুষকে মিথ্যে আশ্বাস এবং প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।

আজ ভি কে পল জানিয়েছেন যে, আগামী ৫ মাসের মধ্যেই দেশের মানুষের জন্য ২১৬ কোটি ভ্যাকসিন প্রস্তুত হয়ে যাবে। আর তা এ দেশেই প্রস্তুত হবে, দেশের মানুষের জন্যই। শুধু তাই নয়, পরের বছরের প্রথম তিন মাসের মধ্যেই সেই ডোজের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৩০০ কোটিতে!

তবে কেন্দ্রের এই ঘোষণা প্রশ্নের সম্মুখীন ইতিমধ্যেই। তার কারণ, কেন্দ্রকে আগামী ৪ মাসের মধ্যে অর্থাৎ আগস্টের মধ্যে ১০ কোটি ভ্যাকসিন তৈরির কথা জানিয়েছে সেরাম ইন্সটিটিউট। অন্যদিকে, কোভ্যাকসিনের উৎপাদনকারী ভারত বায়োটেক আগামী চার মাসে ৭.৮ কোটি ডোজ তৈরি করবে বলে কেন্দ্রকে জানিয়েছে। তাই, কেন্দ্রের দাবি অনুযায়ী, ভ্যাকসিন ডোজ তাঁরা আদৌ তৈরি করতে পারবে কিনা, তাও বছর শেষের আগে তা একেবারেই স্পষ্ট নয়।

সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক এবং ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার দফতরের পক্ষ থেকে ভারতের দুই টিকা উৎপাদনকারী সংস্থার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে, আগামী চার মাসের মধ্যে তাঁদের ভ্যাকসিন উৎপাদন পরিকল্পনা কি? সেই প্রশ্নের উত্তরেই উপরিউক্ত পরিমাণ ভ্যাকসিন উৎপাদনের কথা জানিয়েছে সেরাম ও ভারত বায়োটেক। তাই স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে যে, এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র এমন দাবি করছে কীভাবে? আদৌ কি এই দুই সংস্থা ডিসেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে সক্ষম হবে? অনেকেই অবশ্য এ বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। বাকিটা তো সময়ই বলবে।