শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

‘সেই অন্ধকার দিনগুলিকে ভোলা সম্ভব নয়’, জরুরি অবস্থার ৪৬তম বর্ষপূর্তিতে কংগ্রেসের সমালোচনায় সরব প্রধানমন্ত্রী

০৫:০৭ পিএম, জুন ২৫, ২০২১

‘সেই অন্ধকার দিনগুলিকে ভোলা সম্ভব নয়’, জরুরি অবস্থার ৪৬তম বর্ষপূর্তিতে কংগ্রেসের সমালোচনায় সরব প্রধানমন্ত্রী

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ১৯৭৫ সালের আজকের দিনেই অর্থাৎ ২৫ জুন দেশে জারি হয়েছিল ‘জরুরি অবস্থা’। ১৯৭৫ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। যা গণতন্ত্রের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। শুক্রবার জরুরি অবস্থার ৪৬ তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে দেশজুড়ে জারি করা সেই জরুরি অবস্থা নিয়ে টুইট করলেন প্রধানমন্ত্রী। বললেন, দেশে জরুরি অবস্থা জারির সেই অন্ধকারময় দিনগুলিকে কখনই ভোলা সম্ভব নয়। এদিন প্রধানমন্ত্রী সাড়ে চার দশক আগের সেই সময়ের কথা তুলে ধরে কংগ্রেসের সমালোচনায় সরব হলেন।

শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তাঁর ক্ষোভ প্রকাশ করে, জরুরি অবস্থা নিয়ে টুইট করে লেখেন, ‘জরুরি অবস্থার সময়ের সেই অন্ধকারময় দিনগুলিকে কখনওই ভোলা সম্ভব নয়। ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭ সাল প্রতিষ্ঠানের পদ্ধতিগত ধ্বংসলীলার সাক্ষী থেকেছে। আসুন সবরকমভাবে দেশের গণতান্ত্রিক চেতনাকে মজবুত করি। সংবিধান অন্তর্ভুক্ত মূল্যবোধগুলো মেনে চলি।’

https://twitter.com/narendramodi/status/1408281394673897475

এই টুইটের পাশাপাশি আরও একটি টুইট করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই পোস্টে তিনি জরুরি অবস্থা নিয়ে কংগ্রেসকে সরাসরি আক্রমণ করে লেখেন, ‘এই ভাবেই কংগ্রেস আমাদের গণতান্ত্রিক নীতিকে পদদলিত করেছিল। সেই সমস্ত মহান মানুষদের আমরা স্মরণ করি, যাঁরা জরুরি অবস্থার বিরোধিতা করে ভারতীয় গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছিলেন।’

https://twitter.com/narendramodi/status/1408281534876962816

উল্লেখ্য, ৪৬ বছর আগে, আজকের দিনেই দেশে জরুরি অবস্থার ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। সেই সময় নির্বাচনে অসৎ উপায় অবলম্বনের অভিযোগে এলাহাবাদ হাইকোর্ট তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। শুধু তাই নয়, ৬ বছরের জন্য তাঁকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করাও হয়েছিল। এরপরই জরুরি অবস্থার ঘোষণা করেন ইন্দিরা গান্ধী। এর জেরে সাংবিধানিক অধিকার এবং নাগরিক স্বাধীনতার উপর কোপ পড়ে। সংবাদমাধ্যমকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করাও শুরু হয়। ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত বহু বিরোধী নেতা কারাগারে বন্দী ছিলেন। আঘাত আসে দেশের সংবাদমাধ্যমের উপরেও।

উল্লেখ্য, বিজেপি বরাবরই এই জরুরি অবস্থা জারির এই দিনকে ‘কালো দিন’ হিসেবেই পালন করে এসেছে। আর প্রতিবারই এনিয়ে কংগ্রেসের সমালোচনা করে এসেছে। গত মার্চে কংগ্রেস নেতা ও ইন্দিরা গান্ধীর নাতি রাহুল গান্ধী স্বীকার করে নিয়েছিলেন যে, সেই সময়ে ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। কিন্তু কংগ্রেস কোনও ভাবেই দেশের সংবিধানিক পরিকাঠামাকে ধ্বংস করতে চায়নি বলেই দাবি করেছিলেন তিনি।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য নিয়ে রাজ্য কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্ষ বলেন, ‘উনি সেইসব দিন ভুলতে যদি না চান তাহলে ভুলবেন না। সেটা ওঁর ব্যাপার। কিন্তু আপনি ভারতের মানুষকে যে পরিস্থিতির মধ্যে টেনে এনেছেন সেটা কি খুব ভালো সময়! অতীতের কথা মনে করে কোনও লাভ নেই। সামনের দিকে এগিয়ে যান। দায়িত্ব আপনার উপরে। দেশের মানুষকে সুন্দর সকাল উপহার দিন। সেটাই মানুষ মনে রাখবে।’

অন্যদিকে, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘এর থেকে অন্ধকারময় দিন দেশের মানুষ আগে দেখেছে? স্বৈরাচারী কায়দায় ওরা দেশটাকে দখল করতে চাইছেন। পেট্রোলের দাম একশো টাকা পার করে গেল। রান্নার গ্যাসের দাম বেড়েছে। কৃষকরা রাস্তায় বসে আছেন। যে রাজ্য দখল করতে চাইছেন সেখানে নখ দাঁত বের করে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন।’