শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

ভোটের আবহে ফিকে দোল উৎসব, বন্ধ থাকতে পারে দিঘার হোটেল! ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে হোটেল ব্যবসায়ীরা

০৮:০৪ পিএম, মার্চ ৪, ২০২১

ভোটের আবহে ফিকে দোল উৎসব, বন্ধ থাকতে পারে দিঘার হোটেল! ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে হোটেল ব্যবসায়ীরা

বংনিউজ২৪x৭ডিজিটাল ডেস্কঃ সম্প্রতি ঘোষণা হয়েছে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট। পশ্চিমবঙ্গে ৮ দফায় সম্পন্ন হবে বিধানসভা ভোট। শুরু হচ্ছে চলতি মাসের ২৭ তারিখ। আর ভোটের ফল ঘোষণা হবে ২ মে। এবারের বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনে যেকোনোরকম অশান্তি প্রতিরোধে তৎপর নির্বাচন কমিশন। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে, সবরকমের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি নিরাপত্তা ব্যবস্থায় যাতে কোনও ফাঁক না থাকে, তার জন্য পর্যটন কেন্দ্রগুলিতেও থাকছে বাড়তি নজরাদারির ব্যবস্থা।

উল্লেখ্য, দোলের সময় দিন দুয়েকের ছুটিতে অনেকেই ধারেকাছে ভ্রমণে গিয়ে থাকেন। এবার তাঁদের সেই ছুটির আনন্দ উপভোগে বাদ সাধল বঙ্গের বিধানসভা ভোট। দোলের আগের দিনই বাংলায় পাঁচ জেলায় রয়েছে ভোট। কারণ প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই সময় বহিরাগত প্রবেশ আটকাতে পর্যটন কেন্দ্রগুলি পুরোপুরি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। এর জেরে বিপাকে দিঘা, তাজপুর, মন্দারমণি, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার হোটেল ব্যবসায়ীরা। হতাশ সাধারণ ভ্রমণপিপাসু মানুষও।

বছরের এই সময়টাতে রঙের উৎসবকে কেন্দ্র করে, অনেকেই ছুটি কাটাতে বেরিয়ে পড়েন ধারেকাছের পর্যটন কেন্দ্রের উদ্দেশে। এই পছন্দের তালিকায় থাকে দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর, শঙ্করপুর, শান্তিনিকেতনের মতো স্থান। ইতিমধ্যেই অনেকের হোটেল বুকিংও হয়ে গেছে। এদিকে যদি সত্যিই কমিশনের নির্দেশে ভোটকে কেন্দ্র করে, নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও কঠোর করতে হোটেল বন্ধ রাখতে হয়, তবে সেক্ষেত্রে বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। এমনিতেই করোনা এবং লকডাউনের জেরে আগেই তাঁদের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। যার রেশ এখনও বর্তমান।

এদিকে এখনও প্রশাসনিকভাবে এ সংক্রান্ত কোনও নোটিশ জারি না হলেও, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই করা নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা জেলাকে। এই মুহূর্তে জেলায় রয়েছে ৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। ৮ মার্চ আরও প্রায় ৩৫ কোম্পানি বাহিনী পাঠানো হবে পূর্ব মেদিনীপুরে। জেলাশাসক জানিয়েছেন যে, দিঘা-সহ সমস্ত হোটেলগুলিতে কমিশনের গাইড লাইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি, বাইরে থেকে কেউ ঢুকে যাতে অশান্তি তৈরি করতে না পারেন, তার জন্য ইতিমধ্যে জেলার সীমানায় ৫৫টি নাকা চেকিং পয়েন্ট বসানো হয়েছে। যার মধ্যে ওড়িশা সীমান্তে ৫টি নাকা রয়েছে। সব দিকে সতর্ক নজর রাখছে প্রশাসন।

এই পরিস্থিতিতে চিন্তায় সৈকতের হোটেল ব্যবসায়ীরা। উল্লেখ্য, ২৭ মার্চ অর্থাৎ প্রথম দফায় ভোট রয়েছে কাঁথি মহকুমায়। এর মধ্যেই পড়ছে দিঘার, শঙ্করপুর, তাজপুর, মন্দারমণি। নিয়ম বলছে, নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টা আগে স্বাভাবিকভাবেই বহিরাগতরা এলাকায় প্রবেশ করতে পারে না। এদিকে ২৮ মার্চ দোল উৎসব। এদিকে আগে থেকে দোলের সময় হোটেল বুকিং হয়ে গেলেও, নির্বাচনের দিন ঘোষণা হতেই, অনেকেই বুকিং বাতিলও করছেন। ২৭ মার্চ ভোট হওয়ায় ২৫, ২৬ মার্চ থেকেই এলাকায় নজরদারি বাড়াবে নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, পুলিশের পক্ষ থেকেও হোটেলগুলো বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। ফলে উৎসবের মরশুমে চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা।

এদিকে বুধবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনারের অফিসে ট্রাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল কলকাতা ও জেলার সদস্যরা একটি ডেপুটেশন জমা দেন। তাদের দাবি, কোনওবার দক্ষিণবঙ্গে দোলের আগে বা পরের দিন ভোট থাকে না। এবারই প্রথম এটা হল। যার ফলে পর্যটন ব্যবসায়ীদের খুবই ক্ষতি হল। লকডাউনের পর একটু যেখানে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা, সেখানে দোলে তা বন্ধ হওয়ায় বিরাট লোকসানের মুখোমুখি হবেন তাঁরা। পর্যটন ব্যবসায় যুক্ত মানুষদের দাবি, সামগ্রিক ভাবে ৫০ কোটি টাকার ব্যবসা নষ্ট হবে।