শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

বাংলা ভাগের পক্ষে নয় বিজেপি, দাবি দিলীপের! দলেরই অপর বিধায়ক বলছেন অন্য কথা

০৫:০৫ পিএম, জুন ২২, ২০২১

বাংলা ভাগের পক্ষে নয় বিজেপি, দাবি দিলীপের! দলেরই অপর বিধায়ক বলছেন অন্য কথা

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বিজেপি কখনও বাংলা ভাগের পক্ষে নয়। উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য ঘোষণার দাবি তুলেছিলেন জন বার্লা। সেই দাবি প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি জানিয়েছিলেন, বিজেপি কখনোই বাংলা ভাগ চায় না।

এদিনও সেই একই দাবি জানালেন, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷ কিন্তু দলের রাজ্য সভাপতি যখন এই কথা বলছেন, তখন পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি তুলে সরব হলেন আরও এক বিজেপি বিধায়ক ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়ও। এদিন অনুন্নয়নের এবং বঞ্চনার যুক্তি দেখিয়ে, একই দাবি করেছেন বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়৷ তিনি জানিয়েছেন, বাধ্য হয়েই উত্তরবঙ্গের মানুষ পৃথক রাজ্যের দাবি তুলেছেন।

উল্লেখ্য, বঞ্চনার দাবি তুলে, পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি বেশ কয়েকদিন ধরেই করছিলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। বিজেপির কেউ কেউ জন বার্লার এই দাবিকে সমর্থনও জানিয়েছেন। বাংলা ভাগ নিয়ে ইতিমধ্যেই বিজেপি দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। জল বার্লার দাবিকে সমর্থন জানিয়ে, পৃথক জঙ্গলমহল বা রাঢ়বঙ্গ রাজ্যের দাবি তুলেছেন, বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ৷ আবার এদিন জন বার্লার বক্তব্যকে কার্যত সমর্থন করেছেন কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকও৷

দলের সাংসদরা এভাবে এক এক করে বাংলা ভাগের দাবি তোলায়, ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। কারণ একাধারে বিজেপি নেতারা বলছেন, রাজ্য ভাগের দাবি দলীয় সাংসদদের ব্যক্তিগত মতামত, এর সঙ্গে দল জড়িত নয়। কিন্তু কেন দলের সাংসদদের এই ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত করা হচ্ছে না, বা কীভাবে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের-দলের অনুমতি ছাড়াই, এভাবে দলের সাংসদরা বাংলা ভাগের দাবি তুলছেন! সেই প্রশ্নই বারবার উঠছে।

এদিন এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে, বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘বঙ্গভঙ্গের দাবি কেউ করেনি৷ কিন্তু স্বাধীনকার পর থেকেই উত্তরবঙ্গ এবং জঙ্গলমহল বঞ্চিত৷ সেই কারণে ওই এলাকার মানুষ স্বাধীনতা, মুক্তির জন্য বিরোধী দলকে ভোট দিচ্ছে৷ রাজ্য সরকার সেখানকার মানুষের উন্নয়নে কাজ করুক, তাঁদের অধিকার ফিরিয়ে দিক৷ মানুষের যে সরকারের উপরে বিশ্বাস নেই তা স্পষ্ট৷’

বিজেপি রাজ্য সভাপতি একথা বললেও, ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় এদিন পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবিতেই সরব হয়েছেন৷ তাঁর অভিযোগ, ‘উত্তরবঙ্গের মানুষ বরাবর বঞ্চিত হচ্ছেন৷ সিপিএম সরকারের মতো তৃণমূলের শাসনকালেও এই অঞ্চলে কোনও উন্নয়ন হয়নি৷ এখানে একটাও ভাল হাসপাতাল নেই৷ মানুষকে বোকা বানানোর জন্য উত্তরকন্যা তৈরি করা হয়েছে৷ এখানকার মানুষের সার্বিক উন্নয়নের জন্যই আমি পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি জানাচ্ছি৷ এখানকার মানুষ বাধ্য হয়েই এই দাবি তুলছেন৷’

উল্লেখ্য, এদিন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আলিপুরদুয়ারে মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ সৌমিত্র অবশ্য নিজের দাবিতেই অটল রয়েছেন৷ এদিনও তিনি বলেন, ‘পৃথক রাজ্যের দাবি যে কোনও নাগরিক তুলতে পারেন৷ সংবিধানেই সেই অধিকার দেওয়া আছে৷ রাঢ়বাংলা, জঙ্গলমহল বঞ্চিত৷ আমরা এ নিয়ে আরও বৃহত্তর আন্দোলন করব৷ আমাদের উপরে জবরদখল করা হচ্ছে, সেটা আমরা মানব না৷' বিজেপি-র একের পর এক সাংসদ, বিধায়ক বাংলা ভাগের দাবি তোলায় তৃনমূলও চুপ করে নেই। তৃণমূল কংগ্রেসও পাল্টা আক্রমণ করেছে৷ দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘যতদিন না বিজেপি নেতারা সরাসরি দলের বিধায়ক, সাংসদদের এই বক্তব্য খণ্ডন করবেন, ততদিন ধরে নিতে হবে বাংলা ভাগ করাই বিজেপি-র আসল উদ্দেশ্য৷ তবে বিজেপি যতই চেষ্টা করুক না কেন, বাংলা অখণ্ড আছে এবং থাকবে৷’