বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সুকান্তের ভূয়সী প্রংশসার পাশাপাশি ‘ভুল বাংলা বিতর্কে’ বাবুল সুপ্রিয়কে পাল্টা জবাব দিলীপের

১২:৫৯ পিএম, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১

সুকান্তের ভূয়সী প্রংশসার পাশাপাশি ‘ভুল বাংলা বিতর্কে’ বাবুল সুপ্রিয়কে পাল্টা জবাব দিলীপের

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজ্য বিজেপিতে আচমকাই বড় পরিবর্তন ঘটে গেল। গতকালই রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদ থেকে সরানো হয়েছে দিলীপ ঘোষকে। তাঁকে পাঠানো হল দলের জাতীয় সহ সভাপতির পদে। আর তাঁর জায়গায় বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি হলেন বালুরঘাটের সাংসদ ড. সুকান্ত মজুমদার। উল্লেখ্য, মেয়াদের আগেই সরে যেতে হয়েছে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে। তাই বাবুলের চলে যাওয়া ও দিলীপের এই পদ পরিবর্তনের মধ্যে সম্পর্কও দেখছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

রাজ্যের নতুন বিজেপি সভাপতিকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন বিদায়ী সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এদিকে, ভুল বাংলা বিতর্কে বাবুল সুপ্রিয়কে পাল্টা জবাবও দিয়েছেন। এদিনও তাঁকে অন্যান্য দিনের মতোই চেনা মেজাজে নিউটাউনে প্রাতঃভ্রমণ করতে দেখা যায়। সাংবাদিকদের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে নিজের নয়া পদ নিয়ে তিনি সেই চেনা ছন্দে, ভরপুর আত্মবিশ্বাসের সুরে তিনি বলেন, ‘সুকান্তদার বয়স কম, অভিজ্ঞতা কম। কিন্তু, বুদ্ধিমান, পরিপক্ক, শিক্ষিত মানুষ। তাঁর মতো এক তরুণকে দায়িত্ব দিয়ে দল দুরদর্শী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ দিলীপ ঘোষের কথায়, ‘আমার অভিজ্ঞতা বেড়েছে বলে আরও দায়িত্ব দেওয়া হল। সরিয়ে দেওয়া হয়নি।’ পাশাপাশি এও স্পষ্ট করলেন যে, বিজেপি নতুন রাজ্য সভাপতি হিসাবে সুকান্ত মজুমদারের নাম তিনিই দলের কাছে সুপারিশ করেছিলেন।

এদিন তিনি বলেন যে, ‘কয়েকজনের নাম দিয়েছিলাম দলের কাছে। তাঁদের মধ্যে সুকান্ত একজন।’ বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে, ‘প্রথম কলকাতার বাইরে নেতা বিজেপি রাজ্য সভাপতি হলেন। খুব ভালো বিষয় সেটা। উত্তরবঙ্গের জন্য ভালো হল।’ আজই সুকান্ত মজুমদার সকালে ট্রেনে কলকাতায় পৌঁছেছেন।

বাংলার রাজনীতিতে নিজের ভূমিকা নিয়ে দিলীপ ঘোষের স্পষ্ট বার্তা, ‘আমি এখানে এখানে সাংসদ। একজন সাধারণ কর্মী হিসাবে কাজ করব। আমার কর্মক্ষেত্র পার্টি ঠিক করবে। আমার জীবন সাধারণ আছে। আমি পার্টির জন্য কাজ করি।’ আবার বাবুল সুপ্রিয় প্রসঙ্গে ফের একবার বলেন যে, ‘বাবুল কেন, আমি এখনও বলছি অনেকেই যাবেন। তবে তাতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না।’

এদিকে, রাজ্য বিজেপিতে এই রদবদল নিয়ে রাজনৈতিক মহলের জোর গুঞ্জন, বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির খারাপ ফলের জন্য রাজ্যের সাংগঠনিক স্তরে এই রদবদল। অবশ্য এই প্রসঙ্গে রাজ্যের বিদায়ী বিজেপি সভাপতি বলছেন যে, ‘এই বিষয়ে মন্তব্য করতে করতে পারবে দিল্লি।’ তবে, তিনি এও স্বীকার করে নিয়েছেন যে, একুশের নির্বাচনে দলের কৌশলগত কিছু ভুল ছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলায় জয়ের লক্ষ্য নিয়ে লড়াই করেছিলাম। কিন্তু, তা সফল হয়নি। পরবর্তী লড়াইয়ের জন্য কৌশল বদলানো হবে।’

অন্যদিকে, দিলীপ ঘোষকে জাতীয় স্তরে বিজেপির সহ-সভাপতির পদে আনা নিয়ে বিস্তারিতভাবে কিছু না বললেও, আগে তিনি থাকাকালীন এই রদবদল হলে কী করতেন? এনিয়ে মুখ খুললেন বাবুল সুপ্রিয়।

আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র স্পষ্ট কথা, এনিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। “বিজেপির সংগঠনে কে আসবে আর কে যাবে তা ঠিক করবে তার কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এ বিষয়ে আমার কোনও মন্তব্য নেই। তবে, মজা করে এটা বলতে পারি যে, আমার দেওয়া বর্ণপরিচয়টা দিলীপ ঘোষের কাজে লাগবে। কারণ উনি সুকান্ত মজুমদারকে অভিনন্দন জানিয়ে যে টুইট করেছেন সেখানেও ভুল বাংলা লিখেছেন। দিলীপদা সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ভারতীয় নতুন রাজ্য সভাপতি’ লিখেছেন। এটা লেখার কী মানে বুঝলাম না।”

https://twitter.com/SuPriyoBabul/status/1439980151618490371

দিলীপ ঘোষকে তাঁর বাংলা নিয়ে খোঁচা দিলেও, পাশাপাশি তাঁর নতুন পদ নিয়ে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন বাবুল। পরে অবশ্য টুইটারে দিলীপের টুইটটি সংশোধিতভাবে দেখা যায়। তবে, এদিন বাবুলের এই কটাক্ষেরও পাল্টা জবাব দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি জানান, ‘আমি জানি না তিনি কার লেখা পড়েছেন। আমার লেখা পরে দেখুন, আমি কী লিখেছি! সর্বভারতীয় সহ সভাপতি লেখা আছে।’

উল্লেখ্য, বাবুলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কোনদিনও তেমন ভাল ছিল না। বা বলা ভাল এই দুয়ের সম্পর্ক অম্লমধুর। শুরু থেকেই বাবুলের সঙ্গে দিলীপের একটা চাপা সংঘাত ছিল। এদিন বাবুল ছাড়াও তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়কে কটাক্ষ করে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আমি চামচাগিরির রাজনীতি করি না। মাথা উঁচু করে রাজনীতিতে ছিলাম আছি, থাকব।’ বোঝাই যাচ্ছে, বিরোধীদের কটাক্ষে আমল দিতে নারাজ তিনি।