শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

মাকে খুন করে ঘরের মেঝেতে পুঁতে, সেখানেই দু’বছর ধরে বাস ‘গুণধর’ ছেলের! গ্রেফতার অভিযুক্ত

১২:১৩ পিএম, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১

মাকে খুন করে ঘরের মেঝেতে পুঁতে, সেখানেই দু’বছর ধরে বাস ‘গুণধর’ ছেলের! গ্রেফতার অভিযুক্ত

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ মার ঘন ঘন ঘুরতে যাওয়া না পসন্দ ছিল ছেলের। আর শুধুমাত্র এই কারণেই মাকে খুন করে ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখে ছেলে! এরপর কাউকে ঘুণাক্ষরে কিছু বুঝতে না দিয়েই, দু’বছর ধরে সেখানেই বাস ‘গুণধর’ ছেলের। এমনকি প্রতিদিন সেখানে ধূপ জ্বালানো হত, যাতে কেঊ সন্দেহ না করে। এমনই ঘটনা ঘটেছে বর্ধমানে। তবে, এতদিন বাদে ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই, এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বর্ধমান থানার হটুদেওয়ান পীরতলা ক্যানেলপাড় এলাকার ঘটনা। মৃত মহিলার নাম সুকরানা বিবি (৫৮)। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মা সুকরানা বিবির বেড়াতে যাওয়ার নেশা ছিল। বারে বারেই তিনি বেড়িয়ে পড়তেন। বিষয়টি পছন্দ করতো না ছোট ছেলে সেখ নয়ন আলি। বার বার সে মাকে নিষেধ করতো। এসব নিয়ে মা ছেলের বিবাদ চরমে পৌঁছলে, নয়ন মুগুর দিয়ে মা সুকরানার মাথায় আঘাত করে। এরপর শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করে বলে অভিযোগ।

এরপর কেউ না থাকার সুযোগে, রাতারাতি মাটির ঘরের মেঝে খুঁড়ে মায়ের দেহ পুঁতে ফেলে নয়ন। রাতারাতি মাটি দিয়ে মেঝে ভরাট করে দেয় সে। প্রতিদিন সে সেই মেঝেতে ধূপ দিত বলে জানিয়েছেন পরিবারের অন্যান্যরা।

সুকরানা বিবি তাঁর ছোট ছেলে সেখ নয়ন আলির সঙ্গেই থাকতেন। আচকাই গত ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান সুকরানা বিবি। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সুকরানার বড় ছেলে সেখ কিসমত আলি বর্ধমান থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। এদিকে, মায়ের খুনের বিষয়টি ফাঁস করে নয়নের স্ত্রী। সুকরানা বিবি খুন হওয়ার ৬ মাস পরে, নয়নের বিয়ে হয়। স্বামীর সঙ্গে অশান্তির কারণে সে এখন ভাতার থানার এরুয়ারে বাপের বাড়িতে থাকে। অভিযোগ, তাঁকেও মাঝেমধ্যেই মারধর করতো নয়ন। মাকে খুন করে মেঝেতে পুঁতে রেখেছি। তোকেও খুন করে দেহ গায়েব করে দেব-এমন ধরনের শাসানি শুনেই সে প্রাণভয়ে বাপের বাড়ি চলে যায়।

অন্যদিকে, নয়নের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর মনোমালিন্য মেটাতে এগিয়ে আসেন নয়নের দাদা কিসমত আলি। সোমবার তিনি এরুয়ারে গিয়ে নয়নের স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসার চেষ্টা করেন। আর তখনই নয়নের স্ত্রী তাঁকে জানান, নয়ন তার মা সুকরানা বিবিকে মেরে ঘরের মেঝেতে পুঁতে রেখেছে। রাতে বাড়ি ফিরে আসেন কিসমত আলি। এরপর মঙ্গলবার সকালে কিসমত আলি ভাই নয়নকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন নয়নের স্ত্রীর অভিযোগ সম্পর্কে। কিসমত আলি প্রতিবেশীদেরও ডাকেন। এরপর সকলের জিজ্ঞাসাবাদে জেরে ভেঙে পড়ে নয়ন। স্থানীয়দের কাছে স্বীকার করে, সে মাকে মেরে ঘরের মেঝেতে পুঁতে দিয়েছে।

নয়নের স্বীকারোক্তির পর সঙ্গে সঙ্গেই খবর দেওয়া হয় বর্ধমান থানায়। পুলিশ সেখ নয়ন আলিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। আজ ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মাটি খুঁড়ে দেহ উদ্ধারের কাজ চলছে।