বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

‘যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা শিক্ষক-শিক্ষিকা নন, বিজেপি ক্যাডার’, বিস্ফোরক দাবি ব্রাত্য বসুর

০৩:৩৩ পিএম, আগস্ট ২৫, ২০২১

‘যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা শিক্ষক-শিক্ষিকা নন, বিজেপি ক্যাডার’, বিস্ফোরক দাবি ব্রাত্য বসুর

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ গতকাল বিকাশ ভবনের সামনে চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। বিকাশ ভবনের সমানে বিক্ষোভ দেখাতে এসে, বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগণার ৫ শিক্ষিকা। পুলিশের সামনেই ঘটনাটি ঘটে।

কোচবিহারের দিনহাটায় অন্যায়ভাবে বদলি করা হয়েছে, এই অভিযোগে মঙ্গলবার শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের সদস্য ওই শিক্ষিকারা বিক্ষোভ দেখাতে আসেন। বাড়ির কাছাকাছি বদলির দাবিতে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ শিক্ষামন্ত্রীর সাক্ষাৎ প্রার্থনা করলেও, শিক্ষামন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে দেখা করেননি। এরপর পুলিশ এসে ওই শিক্ষিকাদের সরিয়ে দেওয়া চেষ্টা করলে, পুলিশের সঙ্গে তাঁদের বচসা বাধে, ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। এরপরই আচমকাই বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই পাঁচজন শিক্ষিকা। বর্তমানে ওই ৫ শিক্ষিকা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

NRS মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন গুরুতর অসুস্থ দুই শিক্ষিকা। দু'জনের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। জোৎস্না টুডু ও শিখা দাস দুজনকেই পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। হাসপাতাল চত্বরে মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী।

গতকালের এই ঘটনা এবার প্রসঙ্গে মুখ খুললেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। গতকাল বিকাশ ভবনের সামনে হাজির হন, এসএসকে এবং এমএসকে শিক্ষিকারা৷ সূত্রের খবর, কয়েকদিন আগেই নবান্নের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন তাঁরা। এরপরই তাঁদের বাড়ি থেকে দূরের জেলায় বদলি করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ‘অন্যায়ভাবে’ দূরে বদলি করার প্রতিবাদে, মঙ্গলবার বিকাশ ভবনের সামনে হাজির হয়ে নির্দেশিকা প্রত্যাহারের জন্য শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে তাঁর সঙ্গে দেখাও করতে চান ওই ৫ শিক্ষিকা। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়নি। এরপরই তাঁরা বিষ খান।

এদিকে, এদিন এই ঘটনায় ফেসবুক পোস্টে আন্দোলনকারী ওইসব শিক্ষিকাকে ‘বিজেপি ক্যাডার’ বলে উল্লেখ্য করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর পোস্টে আজ বাম আমলে এসএসকে ও এমএসকে শিক্ষকদের অবস্থায় সঙ্গে আজকের অবস্থার তুলনা করে ব্রাত্য বসু লিখেছেন, ‘বাম সরকারের আমলে পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন বিভাগের অধীনে এসএসকে ও এমএসকে সহায়ক-সহায়িকারা নামমাত্র সাম্মানিকে কাজ করতেন। ছিল না কাজের নিশ্চয়তা, আর্থিক নিরাপত্তা এবং অবসরকালীন সুযোগসুবিধা। কিন্তু মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল সরকার ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে এসএসকে ও এমএসকে গুলিকে বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগের আওতায় এনে একটি সুসংবদ্ধ চেহারা দেয়।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘সহায়ক, সহায়িকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে মাসে ১০,৩৪০ টাকা এবং সম্প্রসারক ও সম্প্রসারিকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে ১৩,৩৯০ টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি বাৎসরিক ৩ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট চালু করা হয়েছে। প্রত্যেককে আনা হয়েছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায়।’

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী দাবি, ‘যাঁরা ৬০ বছর বয়সে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁদের অবসরের সময়ে প্রত্যেকের জন্য ৩ লাখ টাকা এককালীন অবসর-ভাতা চালু করা হয়েছে। বাকিদের জন্যও এই সুবিধেদানের ব্যাপারে অর্থ দফতরের সঙ্গে কথা চলছে। ৬০ বছর বয়সে যারা অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাদের ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করা হয়েছে। মাতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এছাড়াও প্রত্যেককের জন্য চিকিৎসা সংক্রান্ত সহ বাৎসরিক ১৮ দিন ছুটির অধিকার দেওয়া হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর মতে, এত সুযোগ সুবিধা পাওয়ার পরেও যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা শিক্ষক শিক্ষিকা নন, বিজেপি ক্যাডার।’

https://www.facebook.com/BratyaB/posts/1738362679704956

শিক্ষামন্ত্রীর এই ফেসবুক পোস্টের পর তাঁকে সমর্থন করে, তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূলের কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়রা। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই আন্দোলন করা হয়েছে বলে দাবি করেন ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, এই ধরনের আন্দোলন লজ্জার বলে মন্তব্য করেন সোহমও।