দশম পাশেই বিপুল শূন্যপদে রেলে নিয়োগ! কীভাবে আবেদন করবেন? জানুন খুঁটিনাটি

আপনি কি রেলে চাকরি করতে ইচ্ছুক? তবে আপনার জন্য রয়েছে এক দারুণ সুযোগ৷ সম্প্রতি ভারতীয় রেলের (Indian Railways) অধীনস্থ উত্তর-পূর্ব সীমান্তের রেলওয়ে ফেডারেশনের (Northeast Frontier Railway) তরফে বিপুল শূন্যপদে ওয়ার্কশপ/ইউনিটে অ্যাপ্রেন্টিস পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। আবেদনপত্র গ্রহণের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। আগ্রহী ও যোগ্য প্রার্থীদের শীঘ্রই আবেদনের জন্য জানানো হয়েছে।

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট সেলের তরফে প্রার্থীদের জানানো হয়েছে যে, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে ইউনিট এবং রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট সেল অ্যাপ্রেন্টিসশিপ আইন ১৯৬১-র অধীনে প্রার্থীদের নিয়োগ করবে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়েকে (RRC/NFR) নোডাল এজেন্সি হিসাবে মনোনীত করা হয়েছে। নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ে প্রার্থীদের আবেদন গ্রহণ এবং মেধা তালিকা প্রস্তুত করার দ্বায়িত্বে রয়েছে।

এবার জেনে নেওয়া যাক এই পদে নিয়োগের জন্য শূন্যপদের সংখ্যা, শিক্ষাগত যোগ্যতা সহ বিস্তারিত সব খুঁটিনাটি!

শূন্যপদের সংখ্যা ও বিস্তারিত বিবরণ
শূন্যপদের সংখ্যা মোট ৫৬৩৬। 
এর মধ্যে রয়েছে, কাটিহার (কেআইআর) এবং টিডিএইচ ওয়ার্কশপ- ৯১৯টি পদ, আলিপুরদুয়ার (এপিডিজে)- ৫২২টি পদ, রঙ্গিয়া (আরএনওয়াই)- ৫৫১টি পদ, লুমডিং (এলএমজি), এস&টি/ ওয়ার্কশপ/ এমএলজি (পিএনও) এবংট্র্যাক মেশিন/এমএলজি- ১১৪০টি পদ, তিনসুকিয়া (টিএসকে)- ৫৪৭টি পদ, নিউ বঙ্গাইগাঁও ওয়ার্কশপ (এনবিকিউএস) এবং ইডব্লুএস/বিএনজিএন- ১১১০টি পদ, ডিব্রুগড় ওয়ার্কশপ (ডিবিডব্লুএস)- ৮৪৭টি পদ।

শিক্ষাগত যোগ্যতা
প্রার্থীদের সরকার স্বীকৃত যে কোনও বোর্ড থেকে ন্যূনতম ৫০% নম্বর সহ দশম শ্রেণীর পরীক্ষা বা তার সমমানের (১০+২ পরীক্ষা পদ্ধতির অধীনে) পরীক্ষায় পাস করতে হবে। পাশাপাশি ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর ভোকেশনাল ট্রেনিং বা ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর ভোকেশনাল ট্রেনিং/স্টেট কাউন্সিল ফর ভোকেশনাল ট্রেনিং দ্বারা জারি করা ন্যাশনাল ট্রেড সার্টিফিকেট (আইটিআই) প্রাপ্ত হতে হবে।

বয়সসীমা
প্রার্থীদের বয়স ১ এপ্রিল, ২০২২ তারিখ অনুযায়ী ১৫ বছরের বেশি হতে হবে এবং ২৪ বছরের মধ্যে হতে হবে। এসসি/এসটি- ৫ বছর, ওবিসি- ৩ বছর এবং প্রাক্তন সেনাবাহিনীর কর্মীদের ও পিডব্লু বর্গের প্রার্থীদের বয়সের উচ্চসীমায় ১০ বছরের ছাড় রয়েছে।

আবেদন পদ্ধতি
আরআরসি/ইউনিটগুলিতে আবেদনের জন্য প্রার্থীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্রের কোনও রকম হার্ড কপি কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করবে না।
১. প্রার্থীদের RRC/NFR-এর ওয়েবসাইট (এখানে) গিয়ে জেনারেল ইনফরমেশন বিভাগে যেতে হবে।
২.এর পর ‘Railwav Recruitment Cell GHY’ অপশনে গিয়ে আবেদন করতে হবে।
৩. অনলাইন আবেদন লিঙ্কে ক্লিক করে সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য সহ আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে।
৪. এরপর আইটিআই এবং আইটিআই ফাইনাল মার্ক-শিটের ক্ষেত্রে এনসিভিটি/এসসিভিটি দ্বারা জারি করা ন্যাশনাল ট্রেড সার্টিফিকেট(এনটিসি)/ মার্কশিট ইত্যাদির কপি আবেদন করার সময় অনলাইনে আপলোড করতে হবে। 
৫.ভবিষ্যতের সুবিধার্থে প্রার্থীরা ফর্মের একটি কপি প্রিন্ট করিয়ে রাখতে পারেন।

কী কী ডকুমেন্ট লাগবে?
১. এসএসসি (দশম শ্রেণি) বা সমমানের পরীক্ষার মার্কশিট এবং দশম শ্রেণির সার্টিফিকেট।
২. জন্ম তারিখের প্রমাণের জন্য দশম শ্রেণি বা সমমানের পরীক্ষার সার্টিফিকেট বা মার্কশিট বা জন্ম তারিখ দেওয়া রয়েছে এমন ‘স্কুল লিভিং সার্টিফিকেট’।
৩. আইটিআই এবং আইটিআই ফাইনাল মার্ক-শীটের ক্ষেত্রে এনসিভিটি/এসসিভিটি দ্বারা জারি করা ন্যাশনাল ট্রেড সার্টিফিকেট(এনটিসি)/ মার্কশিট।
৪. এসসি/এসটি/ওবিসি সার্টিফিকেট (যদি থাকে)।
৫. পিডব্লু সার্টিফিকেট (যদি থাকে)।
৬. ডিসচার্জ সার্টিফিকেট / সার্ভিং সার্টিফিকেট (যাঁরা এক্স-সার্ভিসম্যানের কোটায় আবেদন করবেন)

আবেদন ফি
জেনারেল/ওবিসি/ইডব্লিউএস বিভাগের প্রার্থীদের আবেদন ফি ১০০ টাকা। এসসি/এসটি/পিডব্লু এবং মহিলা প্রার্থীদের আবেদন ফি-তে ছাড় দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীরা ডেবিট কার্ড/ক্রেডিট কার্ড/ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং ইত্যাদি ব্যবহার করে আবেদন ফি জমা দিতে পারেন। অনলাইন পেমেন্টের জন্য কোনও চার্জ দিতে হলে তা প্রার্থীদেরই বহন করতে হবে।

নির্বাচন পদ্ধতি
প্রার্থীদের মেধা তালিকার ভিত্তিতে হবে নির্বাচন করা হবে। ট্রেড, কমিউনিটি ও ইউনিট ভিত্তিক মেধা তালিকা তৈরি করা হবে। মেধা তালিকা তৈরি হবে মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে। (ন্যূনতম ৫০% নম্বর + যে ট্রেডে অ্যাপ্রেন্টিসশিপ করা হবে সেই ট্রেডের আইটিআই নম্বর।) দশম শ্রেণীর এবং আইটিআই-তে গড় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে প্যানেল হবে। NCVT/SCVT দ্বারা জারি করা ন্যাশনাল ট্রেড সার্টিফিকেটে থাকা সমস্ত সেমিস্টারের একত্রে করে মোট নম্বর ধরা হবে।

মেরিট লিস্ট
আবেদনকারী প্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ইউনিট, কমিউনিটি ও ট্রেড ভিত্তিক একটি মেধা তালিকা তৈরি করা হবে। সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের বিজ্ঞাপিত শূন্যপদের ১.৫ গুণের ভিত্তিতে ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনের জন্য ডাকা হবে। ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনের সময় মূল ডকুমেন্ট নিয়ে আসতে হবে। ইংরেজি বা হিন্দি ছাড়া অন্য ভাষায় সার্টিফিকেট থাকলে তার সঙ্গে ইংরেজি বা হিন্দি ভাষায় ট্রান্সলেট করা সার্টিফিকেট আনতে হবে। ভুল ডকুমেন্ট জমা দেওয়া হলে সেই সব প্রার্থীদের বাতিল করা হবে।
চূড়ান্ত পর্যায়ে তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের আপলোড করা মূল ডকুমেন্ট ও সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশনের পর নিয়ম অনুযায়ী মেডিকেল টেস্টের সার্টিফিকেট তৈরি করা হবে।

ভাতা
প্রার্থীদের অ্যাপ্রেন্টিসশিপ অ্যাক্ট ১৯৬১ অনুযায়ী ভাতা প্রদান করা হবে। হস্টেলের জন্য আলাদা ভাবে কোনও স্টাইপেন্ড দেওয়া হবে না। নির্বাচিত প্রার্থীদের তাঁদের প্রশিক্ষণের সময় হস্টেল অ্যাকোমোডেশনের জন্য ব্যক্তিগত ভাবে অর্থ দিতে হবে। ট্রেনিং শেষ হলে প্রার্থীদের হস্টেলের সুবিধে ছেড়ে দিতে হবে।

গুরুত্বপূর্ণ তারিখ
আবেদন প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। ১ জুন থেকে আবেদন গ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে। প্রার্থীদের আগামী ৩০ জুন, ২০২২ রাত ১০টার মধ্যে আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। এই সংক্রান্ত সময়সীমায় কোনও বদল আনা হলে তা নোটিশের মাধ্যমে প্রার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হবে।

বিশেষ ঘোষণা 
প্রার্থীরা আবেদনের যোগ্যতা, বয়সসীমা, বেতনক্রম, সম্পূর্ণ আবেদন পদ্ধতি সংক্রান্ত বিষয়ে আরও বিশদে জানতে উত্তর-পূর্ব সীমান্তের রেলওয়ে ফেডারেশনের ওয়েবসাইটে গিয়ে খোঁজ নিতে পারেন।
সরাসরি আবেদনের জন্য প্রার্থীরা (এখানে) ক্লিক করতে পারেন।