বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

ঐন্দ্রিলার গন্ধ নেই তাঁর কম্বলে! মায়ের কম্বল ছিঁড়ে ফেলল তোজো ও বোজো

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২২, ০৫:২২ পিএম | আপডেট: ডিসেম্বর ৫, ২০২২, ১১:২২ পিএম

ঐন্দ্রিলার গন্ধ নেই তাঁর কম্বলে! মায়ের কম্বল ছিঁড়ে ফেলল তোজো ও বোজো
ঐন্দ্রিলার গন্ধ নেই তাঁর কম্বলে! মায়ের কম্বল ছিঁড়ে ফেলল তোজো ও বোজো

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ঐন্দ্রিলা শর্মা প্রয়াত হয়েছেন ২ সপ্তাহর বেশি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তাঁর অনুপস্থিতি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তাঁর পরিবার, বন্ধু, পরিজন ও অনুরাগীরা। আবার এঁদের সঙ্গে সঙ্গে ঐন্দ্রিলার না থাকাকে মেনে নিতে পারছে না তাঁর দুই পোষ্য, তোজো-বোজোও। ঐন্দ্রিলা যে ওঁদের মা ছিল। এখনও মাতৃহারা দুই অবলা জীব ঘরে প্রতিটা জায়গায় তাঁদের মাকেই খুঁজে চলেছে। এই ঐন্দ্রিলার কম্বল গায়ে দিয়ে ঘুমোত এই তোজো ও বোজো। কিন্তু সেটা কেচে দেওয়ায়, তাতে আর মায়ের গন্ধ নেই। তাই রাগে একেবারে কুটিকুটি করে ফেলল কম্বলটিকে।

এরপর অবস্থা বেগতিক দেখে ঐন্দ্রিলার একটি পরা জামা তাদের দিলে, শান্ত হয় ওরা। এখনও কমবয়সী কোনও মেয়ে বাড়িতে এলে পাগলের মতো অবস্থা হয় ওদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জাতীয় বিমা কর্মীদের এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ‘খুব করুণ চোখে তাকিয়ে ছিল দুই পোষ্য, যখন ওর বাড়ি গেলাম।’ ঐন্দ্রিলার মা বললেন, ‘ওরা ভেবেছে ওদের মা বাড়ি এল বোধ হয়’, দু’সপ্তাহ পেরিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আর পোস্ট নেই ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে সেভাবে। তবে, তাও সব ভুলে যেতে চাইছেন না অনেকেই। ঠিক যেমন ‘ঐন্দ্রিলাইফ’।

তাঁর নাম রেখেই, জাতীয় বিমা কর্মীরা এইডস আক্রান্ত শিশুদের পাশে দাঁড়ালেন। নেওয়া হল ওষুধ-পথ্যের ভার। সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ঐন্দ্রিলার মা। কিন্তু কীভাবে যোগাযোগ করবেন ঐন্দ্রিলার পরিবারের সঙ্গে ভেবে পাচ্ছিলেন না উদ্যোক্তারা। ফোন বেজে যাচ্ছিল সব্যসাচীর। যদিও হোয়াটসঅ্যাপ করে রাখা হয় অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য উল্লেখ করে। উত্তরও আসে, সমর্থন জানান প্রণাম ইমোজিতে। বোঝা যায়, ভালো কাজে সবসময় ছিলেন আছেন এবং থাকবেন তাঁরা। জাতীয় জীবন বিমা কর্মচারী সমিতির (পূর্বাঞ্চল) সাধারণ সম্পাদক, সঞ্জয় চক্রবর্তী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছিলেন। আমরা ঠিক করি সরাসরি বাড়িতে পৌঁছে মা-বাবার সঙ্গে কথা বলব। সে কারণেই আমাদের বিশেষ প্রতিনিধিকে পাঠানো হয়েছিল।’

প্রসঙ্গত ২০ নভেম্বর না ফেরার দেশে চলে গেছেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। সম্প্রতি এক জীবন বিমা কর্মচারী কমিটির পক্ষ থেকে ঐন্দ্রিলা শর্মার একটি স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই উপস্থিত হয়ে হাওড়ার বেসরকারি হাসপাতাল, যেখানে ঐন্দ্রিলা অসুস্থ হয়ে ভর্তি ছিলেন মৃত্যুর আগে পর্যন্ত, সেখানকার এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন ঐন্দ্রিলার মা শিখা শর্মা। তিনি বলেছেন, ‘আমার মেয়েকে বাঁচানো যেত। শুধুমাত্র একজন চিকিৎসকের জন্যই সেটা সম্ভব হল না। উনি দায়িত্ব নিয়ে আমার মেয়েকে ডিপ কোমায় পাঠিয়ে দিলেন।’ শিখা আরও বলেন, ‘ওকে সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সার্জারি হয়েছিল। ডা. মল্লিক সাফল্যের সঙ্গে ওই অপারেশন করেন। অমায়িক মানুষ উনি। আমাদের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু, একজন আমার মেয়েটাকে বাঁচতে দিল না।’ এখানেই শেষ নয়, তিনি বলেন, ‘আমরা মেয়েকে বাঁচাতে চেয়েছিলাম। ফলে আমরা অন্য ডাক্তার আনছিলাম। তবে উনি অনেক কিছুর অনুমতি দেননি। আমার বড় মেয়েও ডাক্তার। ও অনুরোধ করল। তবু কিছু শুনলেন না। উনি মানুষ কিনা জানি না। একজন ৮০ বছরের রোগীর ক্ষেত্রে এমন করলে, তাও মানা যায়। কিন্তু, একটা ২৪ বছরের মেয়ের চিকিৎসার চেয়ে ইগো বড়?’