শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

মানুষের সেবাই জীবনের ব্রত! স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত অরিজিৎ দিলেন বিশেষ বার্তা

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২, ২০২২, ১০:১০ পিএম | আপডেট: ডিসেম্বর ৩, ২০২২, ০৪:১০ এএম

মানুষের সেবাই জীবনের ব্রত! স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত অরিজিৎ দিলেন বিশেষ বার্তা
মানুষের সেবাই জীবনের ব্রত! স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত অরিজিৎ দিলেন বিশেষ বার্তা

বর্তমানে টলিউড ও বলিউড জগতের অন্যতম ‍‍`মেলোডি কিং‍‍` তিনি। সঙ্গীত জগতে তাঁর জনপ্রিয়তা আজ আকাশছোঁয়া। আদতে তিনি এক বঙ্গসন্তান। বাড়ি মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে। আর তাঁর গানেই এখন মোহিত আসমুদ্রহিমাচল। এতক্ষণে নিশ্চয়ই বোঝা যাচ্ছে কার কথা হচ্ছে? হ্যাঁ তিনি আর কেউ নন, ভারতীয় সঙ্গীতাকাশের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র, অরিজিৎ সিং।

বাংলার সেই ছোট শহর থেকে বেরিয়ে টলিউড তথা বলিউডে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করাটা খুব একটা সহজ ছিল না যদিও। বহু বাধা-বিপত্তি কাটিয়েই আজ আরব সাগর পাড়ে নিজের আসন পাকা করে নিয়েছেন গায়ক। তবে তাঁর পা এখনও রয়েছে মাটিতেই।খ্যাতির শিখরে পৌঁছেও নিজের শিকড়ের টান ভোলেননি জনপ্রিয় এই গায়ক৷ মাটির মানুষ হয়েই থাকতে পছন্দ করেন। সেই সঙ্গে বরাবরই সাধারণ মানুষের আপদে বিপদে পাশে দাঁড়ান তিনি। জনসাধারণের জন্য প্রায়ই মানবদরদী সিদ্ধান্ত নিতে উদ্যোগী হতে দেখা যায় অরিজিৎকে।

আর অরিজিতের এই সেবার লক্ষ্যে ব্রতী হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে তাঁর আদর্শ। সম্প্রতি মুম্বইতে এক কনসার্টে অরিজিৎ সিং জানিয়েছেন, তিনি স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শ মেনে চলেন। তিনি বলেন, "আমি বরাবর স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েছি।" নিজের জীবন একটু গুছিয়ে নিয়ে অন্যকে সাহায্য করা মানবতা, এমনই বার্তা গায়কের।  সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও খুলেছেন। শুধু তাই নয়, আমজনতার কথা মাথায় রেখে সম্প্রতি অরিজিৎ সিং সস্তার এক ভাতের হোটেলের ব্যবস্থাও করেছেন।

মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে অবস্থিত এই ভাতের হোটেলের নাম ‘হেঁশেল’। এই হোটেলটি এতদিন পর্যন্ত অরিজিৎ সিংয়ের বাবা চালিয়ে এসেছেন। এবার সেই হোটেলের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন অরিজিৎ। বাবার ব্যবসা বন্ধ না করেই সাধারণ মানুষের কথা ভেবে এই হোটেল চালিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিলেন জনপ্রিয় গায়ক। এই হোটেল কোনও নামীদামী রেস্তোরাঁ বা পাঁচতারা হোটেলের মতো একেবারেই নয়। একেবারেই ছাপোষা, সাধারণ একটি হোটেল। সাধারনের কথা ভেবেই এই হোটেলে চালু হয়েছে ৩০ টাকার ভরপেট খাবার। অরিজিৎ-এর এই হোটেলে থালির দাম শুরু হচ্ছে ৩০ টাকা থেকে। এছাড়াও রয়েছে চিকেন, মাটন, পনিরের নানান আইটেম। সব খাবারের দাম একেবারে সাধ্যের মধ্যেই।

২০২৩ সালে ১৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় ইকো পার্কে আসতে চলেছেন অরিজিৎ সিং। এই কনসার্টের সর্বাধিক মূল্য টিকিটের দাম ৭৫ হাজার। অনেকেই এই দাম নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন। এত টাকা নিয়ে কী করবেন গায়ক তা-ও বলেছিলেন? এই বিষয়ে অরিজিৎ একবার এক পোস্টে জানিয়েছিলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হল দরিদ্র, বঞ্চিত শিশু, তরুণ থেকে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর মানুষদের সাহায্য করা। তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে খেলাধুলার সুযোগ সুবিধার গুরুত্ব সম্পর্কে বোঝানো’। এক বেসরকারি সমাজসেবী সংস্থার সাথে হাত মিলিয়ে সেই কাজটাই করেন তিনি। যে কোন কনসার্ট থেকে যে টাকা রোজগার হয় তার পুরোটাই ভাগ হয় অরিজিৎ-য়ের টিমের মধ্যে। আর তিনি নিজে যে পারিশ্রমিক নেন তার একটা বড় অংশ যায় সমাজসেবার কাজে।