বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

‘তোমায় সারাজীবন ভালবাসব বাবা’, সদ্য পিতৃহারা কেকে-কন্যার কথায় ভারাক্রান্ত নেটদুনিয়া

চৈত্রী আদক

প্রকাশিত: জুন ২, ২০২২, ০২:৪০ পিএম | আপডেট: জুন ২, ২০২২, ০৮:৪০ পিএম

‘তোমায় সারাজীবন ভালবাসব বাবা’, সদ্য পিতৃহারা কেকে-কন্যার কথায় ভারাক্রান্ত নেটদুনিয়া
‘তোমায় সারাজীবন ভালবাসব বাবা’, সদ্য পিতৃহারা কেকে-কন্যার কথায় ভারাক্রান্ত নেটদুনিয়া

বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে আজ অতীত। কলকাতায় গান গাইতে এসে সকলকে ‘আলবিদা’ জানিয়ে তারার দেশে পাড়ি দিয়েছেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী। সঙ্গীত জগত হারিয়েছে অসম্ভব প্রতিভাবান এক তারকাকে, স্ত্রী হারিয়েছেন তাঁর স্বামীকে আর বাবাকে হারিয়েছেন তামারা। বাবার উদ্দেশ্যে তামারার একটি ছোট্ট বার্তা, ‘তোমায় সারাজীবন ভালোবাসব বাবা’। আর তাতেই মিশে গিয়েছে সদ্য পিতৃহারা সন্তানের কষ্ট-যন্ত্রণা।

বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ের ভারসোভার মুক্তিধাম শ্মশানে কেকে-র অন্ত্যোষ্টিকার্য সম্পন্ন হবে। আর সেই স্থান ও সময় উল্লেখ করে ইনস্টাগ্রামে একটি কার্ড পোস্ট করেন তামারা। সেই পোষ্টের ক্যাপশনেই লেখেন, ‘তোমায় সারাজীবন ভালবাসবো ড্যাডি’। বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পাশাপাশি প্রকাশ পায় প্রিয় মানুষকে হারানোর যন্ত্রণা। তামারার দুঃখে সমব্যথী হয়ে ওঠে গোটা নেটদুনিয়া। পোস্টটি দেখে দুঃখে, কষ্টে গলায় দলা পাকিয়ে আসে অনুরাগীদের।

বুধবার বিকেলে কলকাতার রবীন্দ্র সদনে গান স্যালুটে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয় প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পীকে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বপ্নের গায়কের অন্তিম যাত্রায় পা মিলিয়েছিলেন অসংখ্য ভক্ত। কলকাতায় এসে গান গাইবেন বলে যে মানুষটার মধ্যে উত্তেজনা, উদ্দীপনার শেষ ছিল না সেই মানুষটা কলকাতায় পা রেখেছিলেন ঠিকই। কিন্তু ফিরলেন কফিনবন্দি হয়ে।

কফিনের ওপর পুষ্পস্তবক রাখতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন কেকে’র ৩১ বছরের ছায়াসঙ্গী জ্যোতি কৃষ্ণা। দীর্ঘদিনের ‘ইয়ারোঁ’-কে বিদায় জানাতে মন মানছিল না একেবারেই। কফিনের কাঁচ দিয়ে বাবার মুখের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়েছিলেন তাঁর ছেলেও। এরপর কেকে’র দেহ পৌঁছয় মুম্বইয়ের বাসভবনে। আজ সকাল সাড়ে ১০ থেকে সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত ভারসোভার বাড়িতে শায়িত ছিল কেকে-র দেহ। বৃহস্পতিবার ভারসোভার হিন্দু মহাশ্মশানে গায়কের শেষকৃত্য সম্পন্ন করবেন ছেলে নকুল।

কলকাতায় অনুষ্ঠান করবেন বলে উন্মাদনার শেষ ছিল না স্বয়ং কেকে’র। তাঁর আনন্দ-উদ্দীপনার কথা শেয়ার করেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই পোস্টগুলি এখনও ধ্রুবতারার মতো জ্বলজ্বল করছে। পরিকল্পনা মতই ৩১ মে উল্টোডাঙ্গা গুরুদাস মহাবিদ্যালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নেন কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ। পেশাদারিত্বের সঙ্গে গেয়ে যান একের পর এক গান। মঞ্চে দেখা যায় তাঁর সেই স্ফুলিঙ্গ। কেকে’র প্রতিটি গানের সঙ্গেই যে তাঁর অনুরাগীদের এক অদ্ভুত ইমোশন জড়িয়ে রয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এদিনও তাঁর দরদি কন্ঠে সেই সকল গান শুনে আবেগ ধরে রাখতে পারেনি ভক্তরা।

কিন্তু কিছু ঘণ্টার মধ্যেই আসে সেই চরম দুঃসংবাদ। আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন কেকে। অতঃপর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন এই জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী। কেকে আর নাই, এই অসম্ভব কথাটি কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছেন না অনুরাগীরা। তাঁর প্রয়াণ সঙ্গীতজগতের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। কেকে’র মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ তাঁর ভক্তকুল থেকে শুরু করে সঙ্গীতশিল্পীরা।