মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

ভারতের একমাত্র এই স্থানেই তৈরি হয় সুস্বাদু কাজুর মদ! যার টানে ছুটে আসেন দেশ-বিদেশের পর্যটকরাও

০৮:৩০ পিএম, জুন ২২, ২০২১

ভারতের একমাত্র এই স্থানেই তৈরি হয় সুস্বাদু কাজুর মদ! যার টানে ছুটে আসেন দেশ-বিদেশের পর্যটকরাও

দেশ বিদেশের পর্যটকদের কাছে ভারতের সমুদ্র সৈকত গোয়ার আকর্ষণ কম কিছু নয়। দিগন্ত বিস্তৃত নীল সমুদ্রের টানে প্রায়ই পর্যটকরা ভীড় জমান এই স্থানে। তবে এগুলো ছাড়াও আরও একটি বস্তুর আকর্ষণে গোয়ায় ছুটে আসেন তাঁরা। তা হল কাজুর তৈরি অ্যালকোহল মিশ্রিত পানীয়, 'ফেনি'। ভারতের একমাত্র গোয়াতেই পাওয়া যায় অন্যতম এই পানীয়। আর তার টানেই এই সমুদ্র সৈকতে ছুটে আসেন বহু মানুষ।

সংস্কৃত শব্দ ‘ফেনা’ থেকে এসেছে ‘ফেনি’ শব্দটি এসেছে। এই পানীয় গ্লাসে ঢালার সময় অথবা পানীয় ভরা বোতলের মুখ খোলার সময় ঝাঁকুনিতে ফেনার সৃষ্টি হয়। তা থেকেই এই নাম। মূলত মূলত ২ ধরনের ফেনি পাওয়া যায় গোয়াতে- কাজু ফেনি এবং তাল ফেনি। তার মধ্যে কাজু ফেনিই সবচেয়ে জনপ্রিয়। গোয়ায় মাত্র একটি পরিবারই বিগত ৫০০ বছর ধরে বংশ পরম্পরায় বানিয়ে চলেছে কাজু ফেনি।

কীভাবে প্রস্তুত হয় এই পানীয়? গোয়ার ফেনি প্রস্তুতকারী পরিবারের মানুষগুলি মূলত পুরনো পদ্ধতি অনুসরণ করেই ফেনি বানান। সকালের গাছ থেকে ঝরে পড়া পাকা কাজু ফল সংগ্রহ থেকে সেগুলিকেই ফেনিতে রূপান্তর করা হয়। প্রথমে কাজু সংগ্রহ করে মুখে লেগে থাকা বীজ (বাদাম) ছাড়িয়ে অন্য পাত্রে রাখা হয়। পরে সেই বাদামগুলিকে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এরপর ওই এই বড় পাত্রে ফলগুলিকে রাখা হয়। তারপর পা দিয়ে পিষে তা থেকে রস বার করা হয়৷ সেই রস জমা হয় একটি পাত্রে।

এরপর সেই রস ফারমেন্টেশনের জন্য কিছু সময় ঢাকা দিয়ে রেখে দেওয়া হয়। বেশ কিছু সময় পরে রসটিকে ফোটানো হয়। ফলে জলীয় অংশ বাষ্পীভূত হতে শুরু করে। এই বাষ্পটিকেই অন্য আর একটি পাত্রে সংগ্রহ করে ফেনি প্রস্তুত করা হয়। এরপর তা বিক্রি করে দেওয়া হয়৷ মূলত স্থানীয়দের মধ্যেই এই পানীয় বিক্রি করে থাকেন এই পরিবার। প্রতিদিন ফেনি বিক্রি করে মোট ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা উপার্জন হয় ওই পরিবারের। এভাবেই বংশ পরম্পরা রক্ষায় ফেনি বানিয়ে চলেন গোয়ার ওই একটি মাত্র পরিবারই।

উল্লেখ্য, গোয়া প্রশাসনের তরফে, ২০১৬ সালে ফেনিকে গোয়ার ঐতিহ্যবাহী পানীয়ের তকমা দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কীভাবে কাজু ফল থেকে ফেনি তৈরি হয় তা কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পের গড়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। তবে গোয়ায় আজও এই ফেনির চাহিদা আকাশছোঁয়া। প্রায়শই ফেনির অমোঘ টানে ভীড় জমান দেশ বিদেশের বহু মানুষ। আর ওই একটি মাত্র পরিবারই আজও বানিয়ে চলে ফেনি। পূরণ করে পর্যটকদের আস্বাদন।