বৈষম্যমূলক মন্তব্যের জের! সেই গুরুতর অভিযোগে এবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বিশ্বকাপজয়ী অলরাউন্ডার যুবরাজ সিং। গত বছর ভারতীয় তারকা ওপেনার রোহিত শর্মার সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে একটি লাইভ সেশনে স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহালের উদ্দেশে জাতিবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছিলেন যুবরাজ। সেই ঘটনার জেরেই তাঁর নামে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। রবিবার পুলিশ যুবরাজকে গ্রেপ্তারও করে। পরে অবশ্য অন্তর্বর্তিকালীন জামিনে মুক্তি পেয়ে যান প্রাক্তন ভারতীয় অলরাউন্ডার।
ঘটনার সূত্রপাত গতবছর। ইনস্টাগ্রামে একটি নাচের ভিডিও পোস্ট করেছিলেন যুজবেন্দ্র চাহাল। এরপর রোহিত শর্মার সঙ্গে একটি ইনস্টাগ্রাম লাইভ সেশনে হাজির হয়ে চাহালকে নিয়ে বৈষম্যমূলক মন্তব্য করেন যুবি৷ তারপরেই তৈরি হয় বিতর্ক। অভিযোগ ওঠে, মশকরা করতে গিয়ে দলিতদের অসম্মান করেছেন যুবি। জাত-পাত নিয়ে করা মন্তব্যের কারণে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে যুবরাজকে গ্রেপ্তারের দাবিও ওঠে। নেটিজেনরা নিজেদের ক্ষোভ উগড়ে দেন। কড়া সমালোচনার মুখেও পড়েছিলেন। যদিও পরে নিজের ভুল বুঝতে পেরে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিঃস্বার্থভাবে ক্ষমাও চান যুবি।
সেসময় ট্যুইট করে বিশ্বকাপ জয়ী অলরাউন্ডার লিখেছিলেন, ‘আমি কখনও কোনও জাতি, বর্ণ, ধর্ম অথবা লিঙ্গের বৈষম্যে বিশ্বাসী নই। সারা জীবন মানুষের জন্য কাজ করেছি। আমি মানুষকে মর্যাদা দেওয়ায় বিশ্বাস করি। মানুষ একে অপরকে নিঃস্বার্থ ভাবে সম্মান করুক, এটাই চেয়ে এসেছি। বন্ধুদের কথা বলার সময় আমার একটি মন্তব্যের অন্য অর্থ করা হয়েছে, যেটা অনভিপ্রেত। ভারতের একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমি যদি কারও ভাবাবেগে আঘাত করে থাকি, তার জন্য ক্ষমা চাইছি। আমি ভারতকে ভালবাসি আর ভারতবাসী সব সময় আমার অন্তরে রয়েছেন।'
যদিও তারপরও বিষয়টি মেটেনি। সেই ঘটনার প্রায় এক বছর পর যুবরাজের নামে দায়ের করা হয় এফআইআর। তা দায়ের করেন হরিয়ানার হিসারের এক আইনজীবী। বিশ্বকাপজয়ী তারকার বিরুদ্ধে হাঁসি থানায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩, ১৫৩এ, ২৯৫, ৫০৫ ধারায় মামলা দায়ের হয়। পাশাপাশি তফসিলি জাতি ও উপজাতি আইনের ৩ (১) (r) ও ৩ (১) (s) ধারাও দায়ের করা হয়। জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগেই এই সংক্রান্ত মামলায় হাই কোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়েছিলেন যুবরাজ। রবিবার তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার করেন পুলিশ আধিকারিকরা। কিছু প্রশ্নও জিজ্ঞাসা করা হয় যুবিকে। এরপর আগাম জামিন থাকায় তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়।
ঘটনা প্রসঙ্গে হাঁসির পুলিশ সুপার নীতিকা গেহলট জানিয়েছেন, এদিন হাইকোর্টের নির্দেশ মতো তদন্তকারী অফিসার ডেপুটি পুলিশ সুপারের বিনোদ শঙ্করের সঙ্গে দেখা করতে যান যুবরাজ। পুলিসের তদন্তে সাহায্যও করেন। এরপর তাঁকে গ্রেপ্তার করে প্রায় তিন ঘন্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে এরপর অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছাড়া পেয়ে যান উনি। যদিও ইতিমধ্যেই তাঁর ফোন নিয়ে জমা রেখেছেন পুলিশ অধিকারিকরা।