স্টেশনে বসে কমলালেবু বিক্রি করতেন তিনি। সঙ্গে থাকত আরও তিন ভাই বোন। সেই লেবুবিক্রেতা থেকেই আজ তিনি ৪০০ কোটির সম্পত্তির মালিক। শুধু তাই নয়! দেশের এই সঙ্কটে দান করেছেন ৮৫ লক্ষ টাকার অক্সিজেনও। অবিশ্বাস্য? তবেই এটাই বাস্তব! আর এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন যিনি, তাঁর নাম প্যায়ারে খান। আপাতত যিনি কোটি কোটি টাকার মালিক।
নাগপুরের তাজবাগের বস্তিতে প্যায়ারে খানের জন্ম। ১৯৯৫ সাল থেকেই তিনি নাগপুর রেল স্টেশনের বাইরে কমলালেবু বিক্রি করতেন তিনি। যা আয় হত তা দিয়েই চলত সংসার৷ ফলে পড়াশোনাও জোটেনি কপালে। বয়স যখন মাত্র ১৬, কমলালেবু বিক্রির পাশাপাশি একটি কুরিয়ার সংস্থায় গাড়ি চালানোর কাজ পান তিনি। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই ওড়িশায় এক গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে কাজটি হারান তিনি। এরপর একটি অটো নিয়ে তা চালাতে শুরু করেন প্যায়ারে খান।
এভাবেই দিন কাটছিল। হঠাতই মাথা চাড়া দিয়ে উঠল ব্যবসায়িক বুদ্ধি। শখ ছিল গানের। শিখেছিলেন কি-বোর্ড বাজাতেও। পরে সেই গানের সরঞ্জাম বিক্রি করেই একটি ছোট বাস কেনেন প্যায়ারে। কিন্তু সে ব্যবসা বেশিদিন চলেনি। ২০০৪ সাল নাগাদ ব্যাঙ্ক থেকে ১১ লাখ টাকা ধার করে তিনি ট্রাক একটি ট্রাক কেনেন তিনি। সেই ট্রাকের ব্যবসাই পরে ফুলে ফেঁপে ওঠে। ওই একটি মাত্র ট্রাক থেকেই বর্তমানে ১২৫টি ট্রাকের মালিক তিনি। ভাড়া নিলে চালান আরও ৩ হাজার ট্রাক। দেশের বাইরেও যাতায়াত করে তাঁর ট্রাক। ইতিমধ্যেই অসমি রোড ট্রান্সপোর্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থাও খুলে ফেলেছেন প্যায়ারে। তাঁর সেই সংস্থায় ৫০০ জন কাজও করেন। এমনকি দেশের ১০টি জায়গায় অফিসও রয়েছে তাঁর।
তবে এত কিছুর পরও দেশের মানুষের স্বার্থে মন কাঁদে প্যায়ারে খানের। বরাবরই দুঃস্থদের সাহায্য করে আসেন তিনি। বর্তমানে করোনাকালেও ইতিমধ্যেই ৮৫ লক্ষ টাকার ৪০০ মেট্রিক টন তরল অক্সিজেন দিয়ে সাহায্য করেছেন তিনি। একাধিক হাসপাতালকেও সাহায্যও করেছেন। পাশাপাশি এই সঙ্কটকালে বিনা ভাড়ায় গাড়ির পরিষেবা দিয়েও অসহায় মানুষদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন প্যায়ারে৷ দেশের এই কঠিন পরিস্থিতিতে তাঁদের মতোই মানুষগুলিই যে আমাদের ভরসার পথ দেখান। দেখান আগামীর আলোর পথের সন্ধান...