বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

স্বামীর অবৈধ সম্পর্কের প্রতিবাদ করায়, শ্বাসরোধ করে গৃহবধূকে খুন! অভিযোগ স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে

০৮:০২ পিএম, মার্চ ১, ২০২১

স্বামীর অবৈধ সম্পর্কের প্রতিবাদ করায়, শ্বাসরোধ করে গৃহবধূকে খুন! অভিযোগ স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহঃ প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন, স্বামীর অবৈধ সম্পর্কের বিরুদ্ধে। আর সেটাই কাল হল হতভাগ্য স্ত্রীর জন্য। স্বামীর অবৈধ সম্পর্কের প্রতিবাদ করায়, গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে খুন করার অভিযোগ উঠল স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের মানিকচক থানার নাজিরপুর পশ্চিম পাড়া এলাকায়।

মৃত গৃহবধূর নাম পিয়ালী ঘোষ সাহা, বয়স ২৪ বছর। গৃহবধূর মৃত্যুর পর থেকেই অভিযুক্ত স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। এদিকে, মৃত গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ, এই ঘটনায় মানিকচক থানায় লিখিত অভিযোগ করতে গেলে, থানার আধিকারিকরা এই বিষয়ে কোন রকম অভিযোগ মৃত গৃহবধূর পরিবারের কাছ থেকে নিতে অস্বীকার করেন। উল্টে তাঁদের স্বেচ্ছায় আত্মহত্যার অভিযোগ করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। অন্যদিকে, ওই বধূর মৃতদেহ উদ্ধার করে মানিকচক থানার পুলিশ সোমবার দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

মৃত গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানা গেছে যে, ১ বছর ১০ মাস আগে পিয়ালী ঘোষ-এর বিয়ে হয় মানিকচকের পশ্চিম নাজিরপুর এলাকার বাসিন্দা সুব্রত সাহার সঙ্গে। মৃত গৃহবধূর বাবার বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হরিরামপুর থানার হর বটতলী এলাকায়। মৃত গৃহবধূর দাদা মধুসূদন ঘোষ জানিয়েছেন, বিয়ের সময় অভিযুক্ত জামাই নিজেকে স্থায়ী সরকারি কর্মচারী বলে পরিচয় দিয়েছিল। কিন্তু বিয়ের ছয় মাস পর জানা যায়, সে অস্থায়ী সরকারি কর্মচারী পদে যুক্ত রয়েছে। তাছাড়া বিয়ের ছয় মাস পর থেকেই, তার বোনের উপর অত্যাচার করত স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। কারণ বোন তাঁর স্বামীর অবৈধ সম্পর্কের কথা জানতে পেরে যায়। যা মৃত গৃহবধূ পিয়ালী ঘোষ মেনে নিতে পারেননি। তাই প্রতিবাদ করেছিলেন। আর এই প্রতিবাদ করার জন্য তাঁকে মারধর করা হয়।

এই বিষয় জানার পর, পিয়ালীর বাপের বাড়ির সদস্যরা গত চারদিন আগে মেয়ের বাড়িতে যান এবং মেয়ের বাড়িতে মেয়ে ও জামাইকে বুঝিয়ে, রবিবার বিকেলে মেয়ের বাড়ি থেকে মালদহে এক আত্মীয়র বাড়িতে আসেন। এদিকে, রবিবারই সন্ধ্যাবেলা মেয়ে ফোন করে তাঁর দাদাকে জানান যে, স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলবে। এই ফোন আসা মাত্রই, পিয়ালীর পরিবারের লোকেরা মানিকচকের নাজিরপুর পশ্চিম পাড়ায় যান। সেখানে পৌঁছে তাঁরা দেখতে পান, ভ্যানে করে পিয়ালীর মৃতদেহ একটি প্লাস্টিকের প্যাকেট মোড়া অবস্থায়, দড়ি দিয়ে বেধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পিয়ালীর স্বামীকে জিজ্ঞাসা করা হলে, সে জানায় যে, গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে পিয়ালী।

এতেই পরিবারের লোকদের সন্দেহ হয় এবং তার পরই তাঁরা মানিকচক থানার পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে, নিয়ে যায়। তার গলায়, হাতে ও পায়ে নখের দাগ রয়েছে। পিয়ালীকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

ইতিমধ্যেই মানিকচক থানার পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এদিকে মৃত গৃহবধূর দাদা মধুসূদন ঘোষ জানিয়েছেন, পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁদের কাছ থেকে খুনের অভিযোগ নেয়নি। তাই আগামীদিনে তাঁরা জেলা পুলিশ সুপার ও মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন।