শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

কুন্নুরে ভেঙে পড়া বায়ুসেনার MI-17 V-5 হেলিকপ্টার কোন দেশে, কীভাবে তৈরি? জানুন এর খুঁটিনাটি

০৭:১৩ পিএম, ডিসেম্বর ৮, ২০২১

কুন্নুরে ভেঙে পড়া বায়ুসেনার MI-17 V-5 হেলিকপ্টার কোন দেশে, কীভাবে তৈরি? জানুন এর খুঁটিনাটি

দিল্লি থেকে কোয়েম্বাটুরের সুলুর বায়ুঘাঁটিতে যাওয়ার পথে কুন্নুরের কাছে ভেঙে পড়ল বায়ুসেনার একটি Mi-17 V5 হেলিকপ্টার। এই কপ্টারে ছিলেন চিফ অব আর্মি স্টাফ (CDS) বিপিন রাওয়াত, তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত এবং ব্রিগেডিয়ার পদমর্যাদার আধিকারিক-সহ কয়েকজন। সূত্রের খবর, ওই কপ্টারে ছিলেন ১৪ জন। তাঁদের সকলের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে টুইট করে জানানো হয় এই দুর্ঘটনার খবর। এর কারণ জানতে ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বায়ুসেনা।

গন্তব্যে পৌঁছানোর মাত্র ১০ কিলোমিটার আগে ভেঙে পড়ে বায়ুসেনার ওই হেলিকপ্টারটি। এটির ডানা ছাড়া বাকি সবকিছুই পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্থ হেলিকপ্টারটি রাশিয়ায় তৈরি এবং বিশ্বের একাধিক দেশের বায়ুসেনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সামরিক পরিবহণ হিসেবে ব্যবহৃত এই কপ্টার এমআই-৮/১৭ সিরিজের। তা আকাশে ওড়ে পাইলট, সহ-পাইলট এবং ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার—এই সদস্যের ক্রু নিয়ে। এই এমআই-১৭ কপ্টারের আবার রকমভেদও রয়েছে। বাহিনী বহনের জন্য ৩৬ সিটের এক ধরনের, যন্ত্রাদি-খাদ্যদ্রব্য বা অস্ত্র সম্ভার বহনের জন্য এক ধরনের আর জরুরি প্রয়োজনে ভাসতে পারে, এমন ধরনের রকমভেদ রয়েছে এই কপ্টারের।

যে কোনও আবহাওয়ার উড়তে সক্ষম এই Mi-17V5 কপ্টার। রাত, দিন যে কোনও সময়ে অপারেশন চালাতে পারে। সেনাবাহিনীর ট্রান্সপোর্ট কপ্টার হিসেবে বেশ সুখ্যাতি রয়েছে এই কপ্টারের। মূল জ্বালানি ট্যাঙ্ক দিয়ে ৬৭৫ কিমি উড়তে সক্ষম এটি। এর সঙ্গেই জুড়ে থাকে দুটি অতিরিক্ত জ্বালানি ট্যাঙ্ক। এই ট্যাঙ্কগুলো দিয়ে প্রায় ১২০০ কিমি উড়তে পারে এমআই-১৭ কপ্টার। আকাশপথে এর সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ২৫০ কিমি আর জলপথে সর্বোচ্চ গতি ২৩০ কিমি।

এই কপ্টারের নাক ডলফিনের মতো। সিঙ্গল রটোর (ডানা) এই হেলিকপ্টারের লেজেও একটা রটোর রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে পোর্টসাইড চওড়া স্লাইডিং ডোর এবং অতিরিক্ত স্টারবোর্ডের স্লাইডিং ডোর অর্থাৎ দু’পাশ দিয়ে খোলা যায় এমন দরজা। এই কপ্টার ৪ হাজার কেজি পর্যন্ত ভার বহনে সক্ষম। Mi-17V5 কপ্টারে বহন করা যায় রকেট, কামান ও ছোট অস্ত্র। কপ্টারটির বাইরের ঝুলিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় মালপত্র। সেনাবাহিনীর এই কপ্টারটির প্রধান কাজ হল এয়ার ড্রপ। মাটিতে থাকা কোনও টার্গেটে আঘাত করা ও আহতদের তুলে আনা। এই কপ্টারের রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতির কাজ চণ্ডীগড়ে বায়ুসেনার বেসে।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে প্রথম ইউপিএ সরকার রাশিয়ার এক সংস্থাকে ৮০টি এমআই-১৭ বিমানের বরাত দিয়েছিল। চুক্তির মোট অর্থমূল্য ছিল ১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৩ সালে প্রথম ধাপে বেশ কিছু কপ্টার ভারত সরকারকে সরবরাহ করা হয়। ২০১৮ সালে শেষ ধাপে বাকি কপ্টার ভারতে আসে। তার মধ্যেই একটি কপ্টার আজ তামিলনাড়ুর নীলগিরি জেলায় ভেঙে পড়ে। ভেঙে পড়ার পর আগুন ধরে যায় সেই কপ্টারে।