শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

একেই বলে ভালোবাসা! পথকুকুরের স্তন্যদুগ্ধ পান করে নতুন জীবন পেল সদ্যোজাত ছাগল ছানা

০১:৪২ পিএম, ডিসেম্বর ৩১, ২০২১

একেই বলে ভালোবাসা! পথকুকুরের স্তন্যদুগ্ধ পান করে নতুন জীবন পেল সদ্যোজাত ছাগল ছানা

কথায় বলে, ভালোবাসাই পরম ধর্ম। তাই ভালোবাসার জয় সর্বত্র। আর এই কথাটা যে শুধু মনুষ্যজাতির ক্ষেত্রেই খাটে তা কিন্তু নয়। পশু-পাখি সহ মানবেতর প্রাণীদের ক্ষেত্রেও একইভাবে প্রযোজ্য। সেটাই যেন ফের একবার প্রমাণিত হল। এক পথকুকুরের স্তন্যদুগ্ধ পান করে নতুন জীবন পেল সদ্যোজাত এক ছাগল ছানা। এমনই এক হৃদয়স্পর্শী ঘটনার সাক্ষী রইল বর্ধমান জেলার খারজুলি নামে এক গ্রাম।

জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বিধানসভা কেন্দ্রের খারজুলি গ্রামের বাসিন্দা শেখ ফিরোজের কয়েকটি পোষ্য ছাগল রয়েছে। তার মধ্যে দিন সাতেক আগে একটি ছাগলের সন্তান জন্ম নেয়। ছাগল ছানাটির জন্মের পরও মা ছাগলটির স্তনে দুধ আসেনি। ফলে মহা সমস্যায় পড়েন মালিক ফিরোজ। কারণ সদ্যোজাত ছাগশিশুটির খাদ্য বলতে তখন শুধু ছিল মায়ের দুধই। কিন্তু জন্মের পর ছানাটি কাছে গেলেই তাকে মেরে তাড়িয়ে দিত জন্মদাত্রী মা ছাগলটি।

এদিকে দুধ না পেয়ে ছাগল ছানাটি প্রায় মরতেই বসেছিল! তখনই ফিরোজের সাহায্যে এগিয়ে আসেন প্রতিবেশী শেখ আপেল মহম্মদের ছোট ছেলে তাহসিন। দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র তাহসিন প্রতিদিন একটি পথকুকুরকে খানার খেতে দিত। কুকুরটি তার খুব প্রিয়। তাকে ‘টাইগার’ নামও দেয় সে। সেই টাইগারকে নিয়েই ফিরোজের ছাগল ছানাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করল তাহসিন।

এর পরের ঘটনা শুনলে মন ভিজে যাবে! দিন কয়েক ধরেই দেখা যাচ্ছে টাইগার এলেই তাহসিন তার গায়ে হাত বুলিয়ে দেয়। ঠিক তখনই ফিরোজের পোষ্য ছাগল ছানাটি কুকুরটির স্তন্যপান করে। বর্তমানে প্রতিদিন নিয়ম করে দু’বেলা ছাগ শিশুটিকে স্তন্যপান করানোর দায়িত্ব নিয়েছে তাহসিন ও টাইগার। ফলে এখন বেশ বহাল তবিয়তেই রয়েছে ৭ দিনের ছাগল ছানাটি। এখন নিজের জন্মদাত্রী মায়ের কাছেই ঘেঁষতে চায় না সে। টাইগারই যেন হয়ে উঠেছে তার 'আসল' মা। খুশিমনে সে পান করছে কুকুরের দুধ।অন্যদিকে, এই ব্যতিক্রমী ঘটনায় একইসঙ্গে বেশ হতবাক এবং মুগ্ধ ভাতার রাজ্য প্রাণী স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার। তিনি এও মেনে নিয়েছেন এমন ব্যতিক্রমী ঘটনা সচরাচর দেখা যায় না৷