বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সম্পত্তি লিখিয়ে নিয়েও এক মুঠো ভাত দেয় না ছেলে! শেষ বয়সে অভাবে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন এই বৃদ্ধা

০৩:২৬ পিএম, জুলাই ৭, ২০২১

সম্পত্তি লিখিয়ে নিয়েও এক মুঠো ভাত দেয় না ছেলে! শেষ বয়সে অভাবে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন এই বৃদ্ধা

বছর কুড়ি আগে মারা গিয়েছেন স্বামী। বৃদ্ধা মাকে ছেলে কথা দিয়েছিল আমৃত্যু দেখাশোনা করবে, পাশে রেখে খাওয়াবে। ছেলের কথায় ভুলে জমি ও ভিটেবাড়ি সহ যাবতীয় সম্পত্তি তার নামে লিখে দিয়েছিলেন মা। কিন্তু গুণধর ছেলে রাখেনি একটা কথাও। মায়ের মুখে দু মুঠো ভাতও তুলে দেয়নি সে। অভাবের তাড়নায় অনাহার বা অর্ধাহারে দিন কাটছে মালদার বাসিন্দা সেই বৃদ্ধার।

হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা তহমিনা বেওয়া। প্রায় বছর কুড়ি আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান স্বামী মহম্মদ আনিস। বৃদ্ধার বুকে এক রাশ আশা ছিল, স্বামী বেঁচে না থাকলেও এক মাত্র ছেলে হামেদুল ইসলাম মাকে আগলে রাখবে। এদিকে ছেলে বিয়ে করেই মায়ের সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখিয়ে নেয়। এরপর বৃদ্ধা মাকে ভিটেমাটি ছাড়াও করে। সেই থেকে একাই দিন গুজরান করছেন তহমিনা বেওয়া। রান্না ‌করতে গিয়ে হাত পুড়িয়েছেন, তবুও সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি কেউ।

এদিকে স্বামী মারা যাওয়ার কুড়ি বছর কেটে গেলেও বিধবা ভাতা পাওয়া হয়নি বৃদ্ধার। ভাতার করিয়ে দেওয়ার আশায় যার কাছেই গিয়েছেন সে-ই ৫০০-১০০০ টাকার দাবি করেছে। কিন্তু সে টাকা দিয়েও হয়নি ভাতা। এদিকে ছেলে দেখাশোনার আশ্বাস দিয়েও সম্পত্তি লিখিয়ে ভিটেমাটি ছাড়া করেছে। তিন মেয়েও জমির ভাগ নেওয়ার পরও মায়ের খোঁজ খবর রাখে না। এই বয়সেও তাই প্রায় একঘরে অবস্থায় দিন কাটাতে হয় বৃদ্ধাকে।

[caption id="attachment_21507" align="alignnone" width="1440"]সম্পত্তি লিখিয়ে নিয়েও এক মুঠো ভাত দেয় না ছেলে! শেষ বয়সে অভাবে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন এই বৃদ্ধা সম্পত্তি লিখিয়ে নিয়েও এক মুঠো ভাত দেয় না ছেলে! শেষ বয়সে অভাবে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন এই বৃদ্ধা[/caption]

শরীরের চামড়া কুঁচকে গেছে। পাক ধরেছে চুলে। চোখের দৃষ্টিশক্তিও ক্ষীণ। রোজগার বলতেও এখন কিছুই নেই। বর্তমানে তাই শুকনো মুড়ি, পান্তা ভাত ও শাকপাতা খেয়ে দিন গুজরান করেন তিনি। কখনও কখনও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে চেয়েচিন্তে খাবার জোগাড় করেন। যখন পান না অনাহারেই দিন কাটাতে হয় বৃদ্ধাকে।

এই বিষয়ে, মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য মহম্মদ গোলাম মর্তুজা জানিয়েছেন, "তহমিনা বেওয়া ছেলের নামে সব সম্পত্তি করে দিলেও শেষ বয়সে ছেলে বৃদ্ধা মাকে দেখে না। ছেলের বিরুদ্ধে গ্রামে বেশ কয়েকবার সালিশি সভাও বসেছে। কিন্তু তাও ছেলে বৃদ্ধা মাকে খাওয়াতে নারাজ। এদিকে স্বামীর মৃত্যুর সার্টিফিকেট না থাকায় আজও বিধবা ভাতা চালু হয়নি বৃদ্ধার। তাই কষ্টেসৃষ্টেই দিন গুজরান হচ্ছে তাঁর।"