শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

চারধাম যাত্রার শুরুতেই বিপত্তি! যাত্রাপথেই মৃত্যু ৩৯ জন পুণ্যার্থীর, বিপদ এড়াতে পরামর্শ চিকিৎসকের

চৈত্রী আদক

প্রকাশিত: মে ১৬, ২০২২, ০৮:১৪ পিএম | আপডেট: মে ১৭, ২০২২, ০২:১৪ এএম

চারধাম যাত্রার শুরুতেই বিপত্তি! যাত্রাপথেই মৃত্যু ৩৯ জন পুণ্যার্থীর, বিপদ এড়াতে পরামর্শ চিকিৎসকের
চারধাম যাত্রার শুরুতেই বিপত্তি! যাত্রাপথেই মৃত্যু ৩৯ জন পুণ্যার্থীর, বিপদ এড়াতে পরামর্শ চিকিৎসকের

বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে শুরু হয়েছে পবিত্র চারধাম যাত্রা। এরই মধ্যে ৩৯ জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হল উত্তরাখণ্ডে। পার্বত্য অঞ্চলের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারার কারণেই মূলত তীর্থযাত্রীদের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করছে উত্তরাখণ্ড সরকার। ইতিমধ্যেই এই প্রসঙ্গে উত্তরাখন্ড সরকারের থেকে রিপোর্ট তলব করেছে কেন্দ্র। জানা গিয়েছে, উত্তরাখণ্ড সরকার তা জমাও দিয়েছে।

এই প্রসঙ্গে চিকিৎসক শৈলজা ভাট জানিয়েছেন, অধিকাংশ তীর্থযাত্রীরই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অথবা মাউন্টেন সিকনেসের কারণে মৃত্যু হয়েছে। এর পাশাপাশি মৃত্যুর কারণ হিসেবে উঠে আসছে উচ্চ রক্তচাপ, শারীরিক দুর্বলতা ও শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি। উত্তরাখণ্ড সরকারের রিপোর্ট বলছে, তীর্থ যাত্রীদের বেশ কয়েকজন দুর্ঘটনার কবলে পড়েও মারা গিয়েছেন।

চিকিৎসক শৈলজা ভাট আরও বলেন, অধিকাংশ তীর্থযাত্রীই মাউন্টেন সিকনেসের শিকার। পার্বত্য অঞ্চলের ঢালাই রাস্তায় অনেকক্ষণ হাঁটাচলা করলে অনেকের শরীরেই দুর্বলতা দেখা যায়। একেই বলা হয় মাউন্টেন সিকনেস। দেশের সর্বত্র আবহাওয়া সমান নয়। ফলত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পুণ্যার্থীরা পার্বত্য অঞ্চলের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছেন না। শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছেন তারা।

এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ, যারা শারীরিক দিক থেকে অসুস্থ তাদের চারধাম যাত্রা এড়িয়ে চলাই ভালো। এছাড়াও যারা যাত্রা করছেন তাদের একটানা যাত্রা না করে মাঝে দু-একদিন বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। যাত্রার আগে চিকিৎসকের ফোন নম্বর, প্রেসক্রিপশন, যথেষ্ট পরিমাণ ওষুধ অবশ্যই সঙ্গে রাখা বাঞ্ছনীয়। প্রতিদিন পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের পাশাপাশি অন্ততপক্ষে দু‍‍`লিটার করে জল খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।

চারধাম যাত্রাপথে তীর্থযাত্রীরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগেরই মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, গা বমি ভাব, অত্যধিক শারীরিক ক্লান্তি, ঘুমের অভাব সহ একাধিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ক্ষতির আশঙ্কা এড়াতে উত্তরাখান্ড সরকারের পক্ষ থেকে প্রবেশপথগুলিতে তীর্থযাত্রীদের শারীরিক পরীক্ষার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। যমুনোত্রী ও গঙ্গোত্রীর পথে ডোবাটা ও হিনা এবং বদ্রীনাথ ধামের ভক্তদের জন্য পান্ডুকেশ্বরে একটি হেলথ ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে। যাদের শারীরিক সমস্যা ধরা পড়ছে তাদের চারধামে যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়েছে পবিত্র চারধাম যাত্রা। এই বছর ৩ মে, অক্ষয় তৃতীয়ার দিন পুণ্যার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয় গঙ্গোত্রী ও যমুনোত্রী ধামের দরজা। ৬ মে বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যে দিয়ে, পৌরাণিক ঐতিহ্য ও রীতিনীতি মেনেই পবিত্র কেদারনাথ ধামের দ্বার উন্মোচন হয়। এরপর ৮ মে খুলে যায় বদ্রীনাথ ধামের দরজা। টানা দু‍‍`বছর পর চারধাম যাত্রা শুরু হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই হাজার-হাজার পুণ্যার্থীর সমাগম হয়। কিন্তু এরই মাঝে ৩৯ জন তীর্থযাত্রীর মৃত্যুর স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।