বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ওড়িশার বাহানগা বাজার, কয়েকদিন আগে পর্যন্ত দেশের মানুষ চিনত না এই জায়গাটিকে। কিন্তু রাতারাতি এই জায়গাটি খবরের শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছে। তার কারণ বালেশ্বরে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা। বালেশ্বর জেলার এই বাহানাগা বাজার স্টেশন এলাকাতেই গত শুক্রবার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস।
যে দুর্ঘটনা শতাব্দীর সবথেকে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা। এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৮৮ জন যাত্রী। আহতের সংখ্যা এক হাজারেরও বেশি। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ভুলের জন্য মুহূর্তের মধ্যে একসঙ্গে অসংখ্য পরিবার সর্বস্ব হারিয়েছে। এই দুর্ঘটনার পরই তড়িঘড়ি রেলের পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু করা হয়। পাশাপাশি পাশাপাশি দুর্ঘটনার কারণ খোঁজার দায়িত্ব দেওয়া হয় সিবিআইকে। এবার এই রেল স্টেশন নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিল ভারতীয় রেল।
চলতি মাসের ২ তারিখ সন্ধ্যায় যে ভয়ংকর দুর্ঘটনা ঘটে, তাতে একসঙ্গে তিনটি ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। সিগন্যালিং সমস্যা থেকেই এই দুর্ঘটনা তা একপ্রকার নিশ্চিত হলেও, কীভাবে এত বড় ভুল হল তা খুঁজে বের করতে সিবিআই ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জানা যাচ্ছে, আপাতত বাহানাগা বাজার স্টেশন বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। ঠিক কী কারণে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটল? সেই কারণ খোঁজার জন্য তদন্ত শুরু করার পর প্রায় প্রতিদিনই স্টেশনে পৌঁছাতে দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের। এই স্টেশনের রেললাইন, ট্র্যাক, সিগন্যালিং সিস্টেম-সহ সমস্ত কিছুই এখন রয়েছে CBI-এর স্ক্যানারে। তাই যতদিন না তদন্ত শেষ হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত এই স্টেশনটিতে কোন ট্রেন থামানো যাবে না বলে রেলের তরফে জানানো হয়েছে। তাই আপাতত এই স্টেশনে সব ট্রেন থ্রু থাকবে। এমনিতে এই স্টেশনে ৭ যাত্রীবাহী ট্রেন থামত। এখন সেই ট্রেন থামবে নিকটবর্তী স্টেশনে। উল্লেখ্য, বাহানাগা বাজার স্টেশনে ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে সিগন্যালিং ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল খোদ রেল আধিকারিকদের রিপোর্ট।
যদিও ডি আর এম খুরদা জানিয়েছিলেন, সিগন্যাল স্বাভাবিক ছিল। আবার রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব অন্তর্ঘাতের বিষয়কে উড়িয়ে দেননি। যার প্রেক্ষিতে একদিকে যেমন তদন্ত করছে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি, এর পাশাপাশি তদন্ত করছে সিবিআই। আর সেই কারণেই আপাতত বন্ধ ভারতীয় রেলের বাহানাগা বাজার স্টেশন ব্যবহার। দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্য চৌধুরী অবশ্য এটাকে অস্থায়ী সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন। তবে, তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনওভাবেই যে রেল স্টেশন ব্যবহার করা যাবে না তাও স্পষ্ট বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাহানাগা বাজার স্টেশনটি এমনিতে ছোট স্টেশন।
কিন্তু দক্ষিণ পূর্ব রেলের এই স্টেশনের উপর দিয়ে প্রতিদিন ১৭০টি ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে ৭টি প্যাসেঞ্জার ট্রেন দাঁড়ায় এই স্টেশনে। কারণ রিলে রুম ও প্যানেল রুম সম্পূর্ণ ভাবেই তদন্তের আওতায় চলে এসেছে। এই তদন্ত চালাতে গিয়ে এই দুই অংশের কোনও তথ্য-প্রমাণ বিকৃত হোক তা রেল চাইছে না। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্য চৌধুরী জানিয়েছেন, “আশা করছি শীঘ্রই এই স্টেশন ব্যবহার করা যাবে।”
আপনার মতামত লিখুন :