শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

মেকআপের কামাল! ৩০-এর যুবতীর বেশে তৃতীয় বিয়ে ৫৪-র মহিলার, এই তথ্য সামনে আসতেই পর্দাফাঁস

চৈত্রী আদক

প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২২, ০৯:১১ পিএম | আপডেট: জুলাই ৭, ২০২২, ০৩:১১ এএম

মেকআপের কামাল! ৩০-এর যুবতীর বেশে তৃতীয় বিয়ে ৫৪-র মহিলার, এই তথ্য সামনে আসতেই পর্দাফাঁস
মেকআপের কামাল! ৩০-এর যুবতীর বেশে তৃতীয় বিয়ে ৫৪-র মহিলার, এই তথ্য সামনে আসতেই পর্দাফাঁস

বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ তৃতীয়বারের জন্য বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলেছিলেন। তাই বিউটি পার্লারে গিয়ে মেকআপ করে ৫৪ বছরের মহিলা বয়স কমিয়ে নামিয়ে এনেছিলেন ৩০-এ। তাঁকে দেখলে বোঝা ভার যে তিনি চুয়ান্নর প্রৌড়া। এমনকি পাত্রের বাড়ির লোক গুনাক্ষরেও টের পাননি। সময়মত তৃতীয় বিয়েটাও সেরে ফেলেন তিনি। কিন্তু বিয়ের পরেই প্রকাশ্যে আসে আসল সত্যি। আধার কার্ড দেখাতেই ভেস্তে যায় সমস্ত হিসেব।

ঘটনাটি অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি জেলার। তামিলনাড়ু তিরুভাল্লুর জেলার বাসিন্দা ইন্দ্রানী তাঁর ছেলে গণেশের জন্য পাত্রী খুঁজছিলেন। অনেক বছর হল ছেলের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। অবশেষে দীর্ঘ ছ’বছর পর মিলল পাত্রীর খোঁজ। ছেলের জন্য পাত্রী শরণ্যার খোঁজ পেতেই তাঁর বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ইন্দ্রানী। সেই মতো শরণ্যাকে খবর দেন, বিয়ের কথাবার্তা বলতে শীঘ্রই তাঁদের বাড়ি যাবেন।

ঘটকের মাধ্যমে ইন্দ্রানী জানতে পারেন শরণ্যার বয়স ৩০। পাকা কথা বলতে গিয়ে তাঁকে সামনাসামনি দেখে একফোঁটাও বুঝতে পারেননি যে তিনি আদতে ৫৪-র প্রৌড়া। এরপর এগোয় বিয়ের পাকা দেখা। কিছুদিনের মাথায় ইন্দ্রানীর ছেলে গণেশের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন শরণ্যা। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই শুরু হয় সমস্যা। স্বামী এবং শাশুড়িকে নিজের নামে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য ক্রমাগত চাপ দিতে শুরু করেন শরণ্যা।

এরপর একদিন বাড়ি থেকে ইন্দ্রানীকে বের করে দেন তিনি। স্বামীর উপর ক্রমাগতই বাড়তে থাকে অত্যাচার। একসময় অত্যাচারের মাত্রা এতটাই অতিক্রম করে যায় যে বাধ্য হয়ে স্ত্রীর নামে সম্পত্তি লিখে দিতে রাজি হন গণেশ। এর জন্য শরণ্যার কাছে আধার কার্ড চেয়ে বসেন তিনি। কিন্তু আধার কার্ড হাতে পেতেই একেবারে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে ওঠে। প্রযত্নের (কেয়ার অফ) জায়গায় রবি বলে একজনের নাম দেখতে পান তিনি। বাড়তে থাকে সন্দেহ। এরপর একদিন পুলিশের দ্বারস্থ হন ইন্দ্রানীর ছেলে।

তার অভিযোগের উপর ভিত্তি করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। উঠে আসে চঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, আধার কার্ডে প্রযত্নের জায়গায় যে রবির কথা উল্লেখ করা হয়েছে তিনি আসলে শরণ্যার স্বামী। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর বাপের বাড়িতে মায়ের কাছে ফিরে আসেন শরণ্যা। এমনকি তাঁর দুটি মেয়েও রয়েছে। দুজনেই বিবাহিত। রবির সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর তাঁর নামে মামলা করে ১০ লক্ষ টাকা আদায় করেন শরণ্যা। কিন্তু তাতেও মেটে না আর্থিক সমস্যা।

এরপরই অতিরিক্ত অর্থ এবং সম্পত্তি হাতানোর পরিকল্পনা শুরু করেন তিনি। ঠিক করেন দ্বিতীয়বার বিয়ে করবেন। ঘটকের মাধ্যমে শুরু করেন পাত্রের খোঁজ। এরপর সুব্রহ্মণ্যম নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন তিনি। সুব্রহ্মণ্যমকে বিয়ে করার সময় নিজেকে সন্ধ্যা নামে পরিচয় দিয়েছিলেন শরণ্যা। দীর্ঘ ১১ বছর সংসার করার পর করোনাকালে স্বামীকে ছেড়ে মায়ের কাছে ফিরে আসেন।

এরপর আবারও আগের পরিকল্পনা কার্যকরী করার চেষ্টা করেন শরণ্যা। ছেলের জন্য পাত্রী হিসেবে তাকেই বেছে নেন ইন্দ্রানী। এরপরই যাবতীয় সমস্যার সূত্রপাত। ইতিমধ্যেই গণেশ বাবুর অভিযোগের উপর ভিত্তি করে প্রতারণার অভিযোগে শরণ্যাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।