শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

বছর দুয়েক আগে হারিয়েছেন বাবাকে! মায়ের একাকীত্ব দূরীকরণে পাত্র চেয়ে বিজ্ঞাপন ছেলের

চৈত্রী আদক

প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২২, ০৮:২০ পিএম | আপডেট: আগস্ট ৩, ২০২২, ০২:২০ এএম

বছর দুয়েক আগে হারিয়েছেন বাবাকে! মায়ের একাকীত্ব দূরীকরণে পাত্র চেয়ে বিজ্ঞাপন ছেলের
বছর দুয়েক আগে হারিয়েছেন বাবাকে! মায়ের একাকীত্ব দূরীকরণে পাত্র চেয়ে বিজ্ঞাপন ছেলের

বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আজ থেকে প্রায় দু’বছর আগে অকালমৃত্যু হয়েছে বাবার। দুই ছেলে নিজেদের কাজে চরম ব্যস্ত। ইচ্ছে থাকলেও কাজের ফাঁকে মাকে সেইভাবে সময় দিয়ে ওঠা হয় না। তাই টানা দু’বছর ধরেই ভীষণ একাকীত্বে ভুগছেন মা। এভাবে নিঃসঙ্গ জীবন কাটানো সত্যিই বড় কঠিন। তাই মায়ের একাকীত্ব দূরীকরণে পাত্রের খোঁজে লেগে পড়েছেন ছেলে। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টও করেছেন তিনি।

মহম্মদ অপূর্ব বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার কেরানিগঞ্জের বাসিন্দা। অপূর্ব পেশায় ব্যবসায়ী। দু’বছর আগে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে তাঁর বাবা ঈয়াদ আলীর মৃত্যু হয়। তারপর থেকেই অপূর্ব এবং তাঁর ভাই ইমরান হোসেনকে নিয়ে সংসার সামলাচ্ছেন মা ডলি আক্তার। স্বামীকে হারিয়ে তিনি একা হয়ে পড়েন। তাই মাকে সুপাত্রস্থ করতে চান অপূর্ব।

গত শনিবার ‘বিসিসিবি ম্যাট্রিমনিয়াল : হেভেনলি ম্যাচ’ নামক ফেসবুকের একটি ম্যাট্রিমনিয়াল গ্রুপে মায়ের জন্য পাত্র চেয়ে একটি পোস্ট করেন অপূর্ব। সেখানে মায়ের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও পোস্ট করেন তিনি। মায়ের জন্য ঠিক কেমন পাত্র কাম্য তার বিস্তারিত বর্ণনা দেন অপূর্ব।

অপূর্ব পোস্ট করে লেখেন, “বাবা মারা গেছে তাই আম্মুর জন্য পাত্র খুঁজছি। আম্মুর সঙ্গে মানানসই পাত্র খুঁজছি।  অবশ্যই ঢাকার আশেপাশে হলে ভালো। ব্যবসায়ী বা জব হোল্ডার, শিক্ষাগত যোগ্যতা কম হলেও সমস্যা নেই। নামাজি হতে হবে মাস্ট। মানে একদম সাদামাটা একজন যে আম্মুর জীবনের বাকি চলার পথগুলোর সঙ্গী হবে। ৪২-৫০ বয়স হলে ভালো হয়।”

বিজ্ঞাপনটিতে পাত্রীরও বিবরণ দিয়েছেন অপূর্ব। লিখেছেন, ৪২ বছর বয়সী ডলি আক্তারের পড়াশোনা অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত। তাঁর দুই সন্তান। দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারসহ একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন স্বামী ঈয়াদ আলী। সেই থেকেই বাড়তে থাকে একাকীত্ব। আর মায়ের নিঃসঙ্গতা দূর করতেই তাঁর বিয়ে দিতে চান দুই ছেলে। বিজ্ঞাপনের শেষে অপূর্ব জানিয়েছেন, তাঁরা পারিবারিকভাবেই মায়ের বিয়ে দিতে ইচ্ছুক।

ওপার বাংলার একটি সংবাদমাধ্যমের তরফ থেকে এই বিষয়ে অপূর্বকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, “বাবা মারা যাওয়ার পর মা তাঁর অনেক কথাই আমাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন না। অনেক কথা বলতে গেলে তিনি একটু দ্বিধায় পড়ে যান। আমরা বড় হয়েছি। আমাদের ব্যস্ততা আছে। এই কারণে আমরা মাকে যথেষ্ট সময় দিতে পারি না। বড় ভাইয়ের সংসার আছে। আমিও ভবিষ্যতে বিয়ে করব। তখন মা আরও একা হয়ে যাবেন। তাই আমরা সবাই চাইছি, মায়ের একটা সুন্দর জীবন হোক। তাঁর একজন ভালো জীবনসঙ্গী দরকার।”

এই প্রসঙ্গে অপূর্বর মা ডলি আক্তারের বক্তব্য, “আমার এক ছেলে বিয়ে করেছে। আর এক ছেলে এখনও বিয়ে করেনি। জীবনে চলতে গেলে একজন সঙ্গীর প্রয়োজন হয়। আমার স্বামী মারা গেছেন। এখন ছেলেরা আমার কথা ভাবছে। আমি সম্মতি দিয়েছি।” তিনি চান তাঁর স্বামী যেন ভাল মনের মানুষ হয়। দুই ছেলে এবং ছেলের বউকে মানিয়ে নিয়ে স্বামীর সঙ্গে সুখের সংসার করতে চান ডলি।

অপূর্বর দেওয়া এই বিজ্ঞাপন ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। অপূর্বর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নেটিজেনরা। হাজার হাজার ভিউয়ের পাশাপাশি বয়ে গিয়েছে লাইক এবং কমেন্টের বন্যা। অনেকেই ডলিকে বিয়ের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।