শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

অজানা জ্বরে বাড়ছে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা! অবশেষে সামনে এল কারণ, মোকাবিলায় এই ব্যবস্থা

০১:২৫ পিএম, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১

অজানা জ্বরে বাড়ছে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা! অবশেষে সামনে এল কারণ, মোকাবিলায় এই ব্যবস্থা

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ক্রমশ বাড়ছে অজানা জ্বরে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। অজানা জ্বরের প্রকোপ বাড়ায় উত্তরবঙ্গে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এই অজানা জ্বরের প্রকোপ এতোটাই বেড়েছে যে, তা ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের গণ্ডি অতিক্রম করে বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। হাসপাতালে হাসপাতালে জ্বর এবং সঙ্গে অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে শিশুরা ভর্তি হচ্ছে। গত কয়েকদিনে অভিভাবকদের পাশাপাশি ঘুম উড়েছে চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের। যদিও ভয়ের কিছু নেই বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

জলপাইগুড়ির পাশাপাশি ধূপগুড়ি এবং মালবাজার সঙ্গে বানারহাট হাসপাতালেও এই জ্বরে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। এদিকে, কলকাতাতেও একই অবস্থা। এখানেও অজানা জ্বরে কাহিল শিশুরা। কেন এই জ্বর? এর চিকিৎসা পদ্ধতিই বা কী হবে? এসবের জন্যই বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছিল স্বাস্থ্যভবন। এর মধ্যেই এবার সামনে এল কেন এই জ্বর? কীভাবেই বা এর মোকাবিলা করা সম্ভব?

জলপাইগুড়ি জেলার অজানা জ্বরের ১০ টি নমুনা স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পাঠানো হয়েছিল। তার মধ্যে দুটির ক্ষেত্রে ইনফ্লুয়েঞ্জা বি ভাইরাস এবং দুটির ক্ষেত্রে আরএস ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। আবার একটি নমুনার ক্ষেত্রে এই দুটি ভাইরাসের মিশ্রণ পাওয়া গেছে। আর বাকি তিনটি নমুনার কোনও পজিটিভ ফল পাওয়া যায়নি। সেক্ষেত্রে প্যারা ইনফ্লুয়েঞ্জা হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। তবে, এই তিনটি নমুনা আবার পরে পরীক্ষা করা হবে। এছাড়াও ২ টি নমুনা নষ্ট হয়ে গেছে বলেও জানা গিয়েছে। আর এই নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের প্রশ্ন কী করে সরকারি নমুনা এইভাবে নষ্ট হয়ে যায়?

এই পরিস্থিতিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে আগামীতে? এ ব্যাপারে বুধবারই বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠক হয় এই নমুনা সামনে আসার পর। বুধবারের বৈঠকে চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি, স্ক্রাব টাইফাস-সহ এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ আলাদা করে চিকিৎসা করতে হবে। অন্যদিকে ভাইরাল জ্বর, ইনফ্লুয়েঞ্জা এগুলির আলাদা চিকিৎসা করতে হবে। বৈঠকে একাধিক নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, বাড়িতে কারোর জ্বর হলেই দু’বছরের নিচের শিশুদের আলাদা করতে হবে। ৫ বছর বা তার বেশি বয়সের শিশুদের জ্বর হলে পালস অক্সিমিটার দিয়ে অক্সিজেন স্যাচুরেশন মাপতে হবে। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯০-এর নিচে থাকলে এবং সঙ্গে শ্বাসকষ্ট থাকলে ঝুঁকি নিতে নিষেধ করা হয়েছে। হাসপাতালে ভরতি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও বিশেষজ্ঞদের যুক্তি, বেশিরভাগ শিশুই ইনফ্লুয়েঞ্জা আক্রান্ত হচ্ছে। ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে জ্বর না ছাড়লে, এবং সঙ্গে শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে, অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড, ডেঙ্গ, ক্রাব টাইফাস যাবতীয় বর্ষাকালীন রোগের সম্ভাবনাকে মাথায় রেখেই, চিকিৎসকদের রোগী পরীক্ষা করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইনফ্লুয়েঞ্জা অসম্ভব ছোঁয়াচে রোগ। দ্রুত সংক্রমিত হয়। তাই এই রোগ থেকে বাঁচতে করোনার মতোই নিয়ম নেমে চলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, মাস্ক পরতে হবে। স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুতে হবে। এবং শিশুদের অবশ্যই আলাদা করে রাখতে হবে বাড়িতে কারও জ্বর, সর্দি-কাশি হলে। কারণ দ্রুত তাদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বলা হয়েছে, হাসপাতালে যাঁরা আসবেন, তাঁদের মধ্যে জটিল কোনও সমস্যা থাকলে থুতু, কফ, সর্দির নুমনা সংগ্রহ করে নাইসেড এবং স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পাঠাতে হবে।