শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

যৌন নির্যাতনের শিকার মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে চতুর্থ শ্রেণির নাবালিকা! এলাকায় তীব্র উত্তেজনা

১২:০৯ পিএম, আগস্ট ১৪, ২০২১

যৌন নির্যাতনের শিকার মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে চতুর্থ শ্রেণির নাবালিকা! এলাকায় তীব্র উত্তেজনা

নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদাঃ ফের যৌন নির্যাতনের শিকার এক নাবালিক। এবার ঘটনাস্থল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। অভিযুক্তকে ধরে এনে গণধোলাই দেয় গ্রামবাসীরা। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছালে পুলিশকেও লক্ষ্য করে ইঁট-বৃষ্টি করা হয়। এর জেরে মাথা ফাটে এক এএসআই পুলিশ অফিসার। ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও এক সিভিক পুলিশ।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামানো হয় পুলিশ বাহিনী, নামানো হয় র‍্যাফ। পুলিশ সূত্রে খবর, মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার চন্ডিপুর গ্রামে নয় বছরের এক চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে এলাকারই এক প্রৌঢ়ের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম ওরফে ভোলা নামে ওই ব্যাক্তি চালের ব্যবসা করে। সেই ব্যবসাও অবৈধ বলে জানা গিয়েছে। বিশেষ করে, রেশন দোকানে পাওয়া চাল বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করে নিজের গোডাউনে মজুত করে। পরে চড়া দামে বিক্রি করে। গ্রামের বহু দরিদ্র পরিবার কিছু টাকার লোভে নিজেদের প্রাপ্য চাল তাঁর কাছে বিক্রি করে।

ঘটনার দিন, শুক্রবার বিকেলে ওই গ্রামের এক দিনমজুর পরিবারের কাছ থেকে ৩৫০ টাকা দিয়ে চাল কিনবে বলে সেই ব্যাক্তি যায়। চাল সংগ্রহ করে সে জানায়, কাছেই তাঁর গোডাউনে সেই চাল মেপে দেখে, তবেই সে টাকা দেবে। সে কারণে ওই দিন মজুরের ওই নাবালিকা মেয়ে ও আরও ছোটো তাঁর এক ভাগ্নিকে সঙ্গে নিয়ে যায়। নির্যাতিতার মায়ের অভিযোগ, গোডাউনে চালের টাকা দেওয়ার নাম করে দুজনকে নিয়ে যাওয়ার পরে, তাঁর ভাগ্নিকে বাইরে রেখে তাঁর মেয়েকে গোডাউনের ভেতর নিয়ে গিয়ে জোর করে, মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। রক্তাক্ত অবস্থায় সে ঘরে ফিরলে এবং মেয়েকে ওই অবস্থায় দেখে প্রশ্ন করলে, গোটা ঘটনার কথা নির্যাতিতা নাবালিকা খুলে বলে মাকে।

অন্যদিকে, নজরুল ওই নাবালিকার হাতে ৩৫০ টাকা গুঁজে দিয়ে পালায়। বিষয়টি জানাজানি হতে হতে রাত হয়ে যায়। দ্রুত রক্তাক্ত নাবালিকাকে প্রথমে হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতাল এবং পরে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ইতিমধ্যে ক্ষোভে ফেটে পড়ে গ্রামবাসীরা। খুঁজে ধরে নিয়ে আসে নজরুলকে। এরপরেই শুরু হয় গণধোলাই। খবর পেয়ে, ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ। অভিযুক্তকে উদ্ধার করতে গেলে, পুলিশের প্রতিও মারমুখী হয়ে ওঠে গ্রামবাসীরা। পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে ইঁটবৃষ্টি। মাথা ফেটে যায় এএসআই অফিসার অজিত মন্ডলের। এক সিভিক পুলিশও আহত হন। এরপর ঘটনাস্থলে ছুটে যান এসডিপিও সঙ্গে ছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি, এবং বিশাল পুলিশ বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে, নামানো হয় র‍্যাফ। একরকম খন্ডযুদ্ধের চেহারা নেয় পরিস্থিতি। অভিযুক্তকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ। এলাকায় এখনও তীব্র উত্তেজনা রয়েছে। সেই কারণেই এলাকায় টহল দিচ্ছে পুলিশ বাহিনী এবং র‍্যাফ।