শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

চিকিৎসা নয়, ঝাড়ফুঁককেই প্রাধান্য! বাবা-মায়ের কুসংস্কারে করুণ পরিণতি ১১ বছরের মেয়ের

১০:০৬ এএম, নভেম্বর ১, ২০২১

চিকিৎসা নয়, ঝাড়ফুঁককেই প্রাধান্য! বাবা-মায়ের কুসংস্কারে করুণ পরিণতি ১১ বছরের মেয়ের

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ কুসংস্কারের কাছে হার মানল মাত্র ১১ বছরের প্রাণচঞ্চল ফুটফুটে এক মেয়ে। তীব্র জ্বর থাকা সত্ত্বেও তার বাবা-মা মেয়ের চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্ব দেননি। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে মৌলবির ঝাড়ফুঁকের উপরই আস্থা রেখেছিলেন। যার ফল হল মারাত্মক।

ঘটনাটি কেরলের। কেরলের কান্নুর জেলার বাসিন্দা ১১ বছরের ওই বালিকা, নাম ফতিমা। চিকিৎসার বদলে ঝাড়ফুঁকের কারণে অসময়েই ঝরে গেল একটা প্রাণ। ১১ বছর বয়সেই মৃত্যু হল সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ফতিমার। মৃত নাবালিকার বাবা-মায়ের নাম এম সি আব্দুল ও এম এ সাবিরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই জ্বর ছিল ফতিমার। কিন্তু তাঁকে হাসপাতালে বা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়নি। ফতিমার বাবা-মা দুজনেরই বিশ্বাস ছিল ফকিরের কেরামতিতেই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবে তাঁদের মেয়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।

জ্বর কিছুতেই সারছিল না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আর দুর্বল হয়ে পড়ে ফতিমা। একসময় সে জ্ঞান হারায়। এরপরই প্রতিবাদে সরব হন প্রতিবেশীরা। তাঁদের জোরাজুরিতেই শেষে ফতিমাকে স্থানীয় এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। হাসপাতালে পৌঁছানর পরই চিকিৎসকরা ফতিমাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপরই রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন আব্দুলের প্রতিবেশীররা। তাঁদের অভিযোগ, শুধুমাত্র ফতিমার বাবা-মায়ের কুসংস্কারের জন্য অসময়ে প্রাণ হারাতে হল ফতিমাকে।

আব্দুলের বিরুদ্ধে তারই এক আত্মীয় কান্নুরের থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা নথিভূক্ত করেছে পুলিশ। তবে প্রতিবেশীদের দাবি, এটিকে খুনের মামলা হিসেবে দেখা হোক। কারণ, এভাবে এক প্রাণচঞ্চল বালিকার মৃত্যু তাঁরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। তাও শুধু মাত্র বাবা-মায়ের গাফিলতির কারণে।

এদিকে, ফতিমার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আব্দুল ও সাবিরাকে ইতিমধ্যেই একপ্রস্থ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে খবর। পাশাপাশি ওই ওঝার খোঁজও চালাচ্ছে পুলিশ। প্রয়োজনে আব্দুল ও সাবিরার বয়ানও রেকর্ড করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।