বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

কত টুকরো কাঠ দিয়ে তৈরি? কতই বা উচ্চতা? জানুন পুরীর রথের অজানা কাহিনী

০৪:৩৩ পিএম, জুলাই ১২, ২০২১

কত টুকরো কাঠ দিয়ে তৈরি? কতই বা উচ্চতা? জানুন পুরীর রথের অজানা কাহিনী

আজ শুভ রথযাত্রা। আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে হয় এই রথযাত্রার উৎসব। আর এই রথের দিন উড়িষ্যার পুরী জুড়ে পরে যায় সাজো সাজো রব। সে এক হই-হট্টোগোলের ব্যাপার। রথে চেপে মন্দির ছেড়ে গুন্ডিচা মন্দিরে মাসির বাড়িতে যান জগন্নাথ, বলরাম আর সুভদ্রা ৷ গুন্ডিচা ছিলেন পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নের স্ত্রী। প্রতি বছরই রথযাত্রায় পুরীতে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার জন্য নতুন করে তিনটি রথ তৈরি হয়। আসুন দেখে নেওয়া যাক রথগুলির বৈশিষ্ট্য...

জগন্নাথের রথঃ জগন্নাথ দেবের রথের নাম নন্দীঘোষ। রথের রশির নাম শঙ্খচূড়া নাগুনি। সারথি মিতালি। রথে জগন্নাথের সঙ্গী হন মদনমোহন ৷ সওয়ার হন আরও ৯ দেবতা। এঁদের মধ্যে রয়েছেন গোবর্ধন, কৃষ্ণ, নরসিংহ, রাম, নারায়ণ, হনুমান, রুদ্র। জগন্নাথের রথে একজন রক্ষীও থাকেন। এই রক্ষীর নাম গারুদা। জগন্নাথের রথটি ৮৩২ কাঠের টুকরো দিয়ে তৈরি। এর উচ্চতা ৪৫ফুট। রথের গায়ে হলুদ এবং সোনালি রঙ। সাত ফুট ব্যাসের ১৬টি চাকা বিশিষ্ট এই রথে রয়েছে ৪ টি ঘোড়া। রথের মাথায় রয়েছে পতাকা। নাম ত্রৈলোক্যমোহিনী।

বলরামের রথঃ বলরাম দেবের রথের নাম তালধ্বজ। তালধ্বজের রক্ষীর নাম বাসুদেব। রশির নাম বাসুকি নাগ। সারথি সাত্যকি। রথে বলরামের সঙ্গী হন রামকৃষ্ণ। জগন্নাথের মতো এই রথেও সঙ্গে থাকেন আরও ৯ দেবতা। এঁদের মধ্যে রয়েছেন কার্তিক, গণেশ, সর্বমঙ্গলা, মৃত্যুঞ্জয়, মুক্তেশ্বর ৷ তালধ্বজ ৭৬৩ কাঠের টুকরো দিয়ে তৈরি। উচ্চতা ৪৪ ফুট। লাল ও সবুজ কাপড়ে সাজানো। এই রথে ৬ ফুট ব্যাসের মোট ১৪ চাকা রয়েছে। রথের মাথায় থাকা পতাকার নাম উন্যানী ৷

সুভদ্রার রথঃ সুভদ্রার রথের নাম দর্পদলন৷ দর্পদলনের সারথির নাম অর্জুন৷ রথের রশির নাম স্বর্ণচূড়া নাগুনি। এই রথে সুভদ্রার সঙ্গিনী সুদর্শনা। এছাড়াও সুভদ্রার রথে থাকেন ৯ দেবী৷ এঁদের মধ্যে রয়েছেন চণ্ডী, চামুণ্ডা, বনদুর্গা, শুলিদুর্গা, শ্যামাকালী, মঙ্গলা, বিমলা। দর্পদলনের উচ্চতা ৪৩ ফুট। এই রথে মোট ১২টি চাকা রয়েছে৷ লাল এবং কালো কাপড়ে সাজানো এই রথ। মাথায় থাকা পতাকার নাম নদম্বিকা ৷

প্রসঙ্গত, করোনা আবহে এবারের পুরী পর্যটক শূন্য। রবিবার রাত ৮টা থেকে জারি রয়েছে ১৪৪ ধারাও। গতবছরের মতো এবারও তাই ভক্তদের ছাড়াই একরকম জাঁকজমকহীন ভাবেই পালিত হবে পুরীর রথযাত্রার উৎসব। সমস্ত কোভিড বিধি-নিষেধ মেনেই টানা হবে রথের দড়ি। গতবারের মতো এবারও পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সেবায়েতরাই শুধুমাত্র রথের দড়ি টানবেন৷ যে সেবায়েতদের করোনা রেজাল্ট নেগেটিভ এবং যাঁরা ভ্যাকসিনের দু'টি ডোজই পেয়ে গিয়েছেন, একমাত্র তাঁরাই রথের দড়ি টানতে পারবেন৷