বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুমকি চিঠি কাণ্ডে অবশেষে গ্রেফতার এক চিকিৎসক-সহ তিন

০৯:৫৬ এএম, নভেম্বর ৯, ২০২১

আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুমকি চিঠি কাণ্ডে অবশেষে গ্রেফতার এক চিকিৎসক-সহ তিন

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ অবশেষে হুমকি চিঠি কাণ্ডে পুলিশের জালে এক চিকিৎসক-সহ তিনজন। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে তাঁর স্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার অভিযোগে যাঁদের গ্রেফতার করে হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক চিকিৎসক। তাঁর নাম অরিন্দম সেন। তিনি রাজা রামমোহন রায় সরণির বাসিন্দা এবং কলকাতার এক বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক। এছাড়াও গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর চালক রমেশ সাউ ও পেশায় এক টাইপিস্ট বিজয় কুমার কয়ালকে। এই তিনজনকে গ্রেফতার করেছে হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ।

আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে খুনের হুমকি দেওয়ার পরে মামলা রুজু হলে, তদন্ত শুরু করে হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ। সেই তদন্তে এবার এই তিনজনকে গ্রেফতার করা হল। সেই ঘটনার তদন্ত শুরু করার পর, সোমবার সকালে রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের বিজন সেতুর সামনে থেকে প্রথমে গ্রেফতার করা হয় বিজয় কুমার কয়ালকে। তিনি পেশায় টাইপ রাইটার। তাঁকে জেরা করতেই উঠে আসে এই হুমকি চিঠি কাণ্ডে মূল চক্রীর নাম।

জানা যায় যে, রাজা রামমোহন রায় সরণির বাসিন্দা চিকিৎসক অরিন্দম সেন তাঁকে এই চিঠি টাইপ করার জন্য পাঠিয়েছিলেন। এরপর ওই চিকিৎসককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে জেরা করে উঠে আসে ঘটনায় জড়িত তৃতীয় ব্যক্তি অর্থাৎ ওই চিকিৎসকের গাড়ি চালকের নামও। ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, অরিন্দম তাঁর গাড়িচালকের হাত দিয়ে ওই চিঠি পাঠিয়েছিলেন টাইপ রাইটারের কাছে। তবে, এটাই প্রথমবার নয়, গত দু’বছর ধরে এরকম চিঠি একাধিক ব্যক্তিকে পাঠিয়েছেন ধৃত চিকিৎসক। জেরায় সেকথা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। কিন্তু কেন এই চিঠি পাঠিয়েছিলেন তিনি? তার কোনও কারণ এখনও জানা যায়নি। এই ধরনের কার্যকলাপের কারণ জানতে ওই চিকিৎসকের মানসিক স্থিতাবস্থা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

এদিকে, জেরায় ওই চিকিৎসক আরও জানিয়েছেন যে, অনেক ক্ষেত্রে আক্রোশের জেরে তিনি চিঠি পাঠাতেন। কেন তিনি গৌরহরি মিশ্রের নাম চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি তদন্তকারীদের জানিয়েছেন যে, গৌরহরি মিশ্রকে অপদস্ত করতেই তাঁর নাম উল্লেখ করেছিলেন তিনি। আবার অনেক ক্ষেত্রে তিনি নাকি সংবাদমাধ্যমের প্রকাশিত খবরের দ্বারা প্রভাবিত হয়েও, এধরনের হুমকি চিঠি লিখতেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অক্টোবরের শেষের দিকে প্রাণনাশের হুমকি পান রাজ্য সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা তথা প্রাক্তন মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পিড পোস্টে পাঠানো এক চিঠির মাধ্যমে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। চিঠি পাঠানো হয়েছিল আলাপনবাবুর স্ত্রী সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে। যিনি আবার ঘটনাচক্রে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।

এক লাইনের ওই চিঠিতে লেখা ছিল যে, ‘আপনার স্বামী নিহত হবেন। কেউ আপনার স্বামীকে বাঁচাতে পারবে না।’ চিঠিতে সই রয়েছে জনৈক গৌরহরি মিশ্রের। কেয়ার অব মহুয়া ঘোষ। তিনি রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের কেমিক্যাল টেকনোলজি বিভাগে কর্মরত।

সেই হুমকি চিঠি পাওয়ার পরই, তার প্রতিলিপি পাঠানো হয় রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের সায়েন্স সেক্রেটারিকেও। চিঠির খামে প্রেরকের নাম-ঠিকানা দেওয়া ছিল। চিঠিটির কথা এরপর পুলিশকেও জানানো হয়। জানানো হয় রাজ্য সরকারকেও। হেয়ারস্ট্রিট থানায় মামলা রুজু করা হয় এরপর এবং মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টার নিরাপত্তাও বাড়ানো সঙ্গে সঙ্গে।